সাহাবুদ্দিন পান্না ও ইফতেখার শাহীন : বুধবার বেলা ৩টায় এ মামলার প্রধান সাক্ষী ও নিহত রিফাত শরীফের স্ত্রী আয়শা সিদ্দিকা মিন্নি বরগুনার সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে হাজির করে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা হুমাযুন কবীর মিন্নির ৭ দিনের রিমান্ড আবেদন করেন। শুনানি শেষে আদালতের বিচারক মোহাম্মদ সিরাজুল ইসলাম গাজী পাঁচদিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন। বরগুনা জেলা পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার তোফায়েল আহমেদ বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন ।
এ বিষয়ে বরগুনার পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) সঞ্জিব দাস জানান, মিন্নির পক্ষে কোনো আইনজীবী আদালতে উপস্থিত ছিলেন না। তার পক্ষে কোনো ধরনের ডকুমেন্টও আদালতে পেশ করা হয়নি।
তদন্তকারী কর্মকর্তার বক্তব্য শেষে মিন্নি আদালতে নিজেকে নির্দোষ দাবি করেন। মিন্নি জানান, বিভিন্ন সময় আসামিরা তাকে ফোনে বিরক্ত করতো ও ভয়ভীতি দেখাতো। এমনকি প্রাণনাশের হুমকিও দিতো। আমাকে ষড়যন্ত্রমূলকভাবে মামলায় জড়ানো হয়েছে।আমার স্বামী রিফাত হত্যাকারীদের বিচার চাই। বক্তব্যের একপর্যায়ে বিচারক হত্যাকারীর কল লিস্টে তার নম্বর কিভাবে এলো জানতে চাইলে মিন্নি নিরব থাকেন।
আদালতের বারান্দার উপস্থিত মিন্নির বাবা মোজাম্মেল হক কিশোর সাংবাদিকদের জানান, তার মেয়ে আয়েশা সিদ্দিকা মিন্নি খুবই অসুস্থ। তাকে রিমান্ডে নেয়া হলে আরো অসুস্থ হয়ে পড়বে।
এর আগে মঙ্গলবার সকালে শহরের দক্ষিণ মাইঠা এলাকায় তার বাবার থেকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আয়শা সিদ্দিকা মিন্নিকে পুলিশ লাইনে আনা হয়। সকাল পৌনে ১০টার সময় মিন্নিকে আনার জন্য নারী পুলিশের একটি দল মিন্নির বাবার বাড়িতে যান এবং তার বাবা মোজাম্মেল হোসেন কিশোরসহ মিন্নিকে পুলিশ লাইন নিয়ে আসেন । জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তাকে আনা হয়েছে বলে পুলিশ সুপার জানালেও ওই দিন রাত ৯টায় তাকে গ্রেপ্তার দেখায় পুলিশ।
গত কয়েকদিন ধরে বরগুনায় রিফাত শরীফ হত্যা মামলার ১ নং স্বাক্ষী রিফাতের স্ত্রী আয়শা সিদ্দিকা মিন্নিকে গ্রেপ্তারের ব্যাপক গুঞ্জন চলছিল। কলেজের ভেতরে রিফাতকে মারধরের সময় মিন্নি স্বাভাবিকভাবে হেটে যাচ্ছে এরকম একটি ভিডিও ফুটেজ ভাইরাল হলে একটি মহল মিন্নিকে গ্রেপ্তারের দাবি তোলে ।
গত ১৩ জুলাই রাত ৮টায় বরগুনা প্রেসক্লাবে এক সংবাদ সম্মেলনে নিহত রিফাত শরীফের বাবা দুলাল শরীফ মিন্নিকে গ্রেপ্তারের দাবি জানান এবং ১৪ জুলাই সকাল ১১টায় বরগুনা প্রেসক্লাবের সামনে মিন্নিকে গ্রেপ্তারের দাবিতে মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করা হয়।
রিফাত হত্যা মামলায় এ পর্যন্ত ১৪ জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। গত ২ জুলাই ভোরে মামলার প্রধান আসামি নয়ন বন্ড পুলিশের সঙ্গে ‘বন্দুকযুদ্ধে’ নিহত হয়। এখন পর্যন্ত ১০ আসামি আদালতে ফৌজদারী কার্যবিধির ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন।
সম্পাদনা : মুরাদ হাসান
আপনার মতামত লিখুন :