জাহাঙ্গীর লিটন, লক্ষ্মীপুর : লক্ষ্মীপুর-রায়পুর আঞ্চলিক মহাসড়কের সংস্কার কাজের ধীরগতির কারণে চরম ভোগান্তিতে পড়েছে এই রুটে চলাচলকারী কয়েক উপজেলার মানুষ। জেলার অন্যতম ব্যস্ত সড়কটিতে পুরনো কার্পেটিং তুলে দীর্ঘদিন ফেলে রাখায় এটি এখন যানবাহন চলাচলের অনেকটায় অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। নির্দিষ্ট সময়ে গন্তব্যে পৌঁছাতে পারছে না যানবাহনগুলো। আঞ্চলিক এ মহাসড়কটিতে নিম্নমানের নির্মাণ সামগ্রী ব্যবহার করায় বর্ষার শুরুতেই বিভিন্ন স্থানের কার্পেটিং উঠে যাচ্ছে। সৃষ্টি হয়েছে বড় বড় গর্ত। সামান্য বৃষ্টিতে পানি জমে সৃষ্টি হচ্ছে কাদা, সরে যাচ্ছে দুই পাশের ফুটপাতের মাটি।
জানা যায়, লক্ষ্মীপুরের মজু চৌধুরীর ফেরীঘাট ও চাঁদপুরের হরিণাঘাট দিয়ে প্রতিদিনই এই রুটে চলাচল করে শরীয়তপুর, খুলনা, বাগেরহাট, সাতক্ষীরা ও দ্বীপজেলা ভোলার বাসিন্দারা। কিন্তু রাস্তাটির বেহাল অবস্থা হওয়ায় ভোগান্তিতে পড়তে হয় যাত্রীদের। স্থানীয় ও পথচারীদের দুর্ভোগ লাগবের জন্য ২০১৮ সালের প্রথম দিকে লক্ষ্মীপুর-রায়পুর আঞ্চলিক মহাসড়কের ২০ কিলোমিটার সড়ক সংস্কার ও সম্প্রসারণের জন্য ৫৩ কোটি টাকা বরাদ্দ দেয় সরকার। কিন্তু ধীরগতিতে কাজ করায় নির্দিষ্ট সময়সীমা পেরিয়ে গেলেও এখনো শেষ করতে পারেনি ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান মেসার্স রানা বিল্ডার্স। ইতিমধ্যে লেয়ার ডেমেজের অজুহাতে সড়ক বিভাগের মাধ্যমে বরাদ্ধ নিয়েছেন আরো ৫ কোটি টাকা, বাড়িয়েছেন নির্মাণের মেয়াদ চলতি বছরের ডিসেম্বর পর্যন্ত।
কাজের শুরু থেকেই একাধিকবার সড়ক নির্মাণ কাজের অনিয়মের প্রতিবাদ করছেন স্থানীয়রা। মানববন্ধন ও বিক্ষোভ মিছিল করেছেন বহুবার। ১৪ জুলাই কয়েকটি জায়গায় সড়কের দুই পাশে ধানের চারা রোপনের মাধ্যমে অনিয়মের প্রতিবাদ করেন।
কয়েকজন পথচারি ও গাড়ির চালকরা জানান, প্রায় সময় গর্তে পড়ে যানবাহনের বিভিন্ন যন্ত্রাংশ ভেঙে যায়, আহত হয় যাত্রীরা। এই জন্য ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের স্বেচ্ছাচারিতা ও স্থানীয় প্রশাসনের নজরধারীর অভাবকেই দুষছেন তারা। তবুও সমস্যা সমাধানে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের হস্তক্ষেপ কামনা করেন।
নিম্নমানের নির্মাণ সামগ্রী ব্যবহারের অভিযোগ অস্বীকার করে ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান মের্সাস রানা বিল্ডার্স এর ঠিকাদার আজিজুর করিম বাচ্চু জানালেন, বিভিন্ন সমস্যা থাকার কারণে সড়ক সংস্কারে ধীর গতি দেখা দিয়েছে। তাই কিছুটা সমস্যার সৃষ্টি হয়েছে। তবে সহসাই সমস্যার সমাধান হবে ।
এসব অনিয়মের বিষয়ে সড়ক ও জনপথ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী সূব্রত দত্ত বলেন, শিগগিরই সড়কটি সংস্কারের কাজ শেষ করা হবে। এছাড়াও ফুটপাত ধস ও কার্পেটিং উঠে যাওয়ার বিষয়টি খোঁজ নিয়ে ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দেন তিনি। সম্পাদনা : মিঠুন রাকসাম
আপনার মতামত লিখুন :