মাহবুব কবির মিলন : আসুন একটি হাইপোথিসিস দিয়ে শুরু করি। মনে করুন, আমাদের মাটি পরীক্ষা করে সীসা আর আর্সেনিক মাত্রার অনেক উপরে পেলেন। পানি পরীক্ষা করলেও তাই পেলেন। চাল, শাকসবজি, মাছ, মাংস, দুধ, ডিম, মুরগিতেও মাত্রার অনেক উপরে সীসা, ক্রোমিয়াম আর আর্সেনিক পেলেন। সব ধরনের মসলাতে পেলেন। এমনকি পুঁই শাকেও ভয়াবহ অবস্থা পেলেন। গরুর মাংস, দুধ ডিমে মাছে, মুরগিতে অ্যান্টিবায়োটিক পেলেন মাত্রার উপরে। চালে পেলে হয়তো গম ভুট্টাতেও পাবেন। তার মানে আটাও শেষ। এমনকি কীটনাশক এবং ফার্টিলাইজারেও সীসা পেলেন। এখন কি করবেন? সব কিছু খাওয়া ছেড়ে দেবেন? না খেয়ে মরবেন?
দেশ ছেড়ে চলে যাবেন? নাকি সব কিছুর মূল খুঁজে বের করে তার মূলোৎপাটনের সময় দেবেন? পৃথিবীর যেসব দেশে আজ আকাশে, তাদের যুগ যুগ সময় লেগেছে খাদ্য নিরাপদ করতে। এমনকি এখনো তারা জীবন পানি করে লেগে থাকে। আমাদের তো কেবল শুরু। একটি, দুটি পরীক্ষা দিয়ে যেমন বলা যাবে না সব শেষ। তেমনি একটি দুটি পরীক্ষায় ভালো পেলে শান্তিতে ঘুমানোর অবকাশ নেই যে, সব ভালো। এটি একটি অনবরত প্রক্রিয়া। আমরা সবার পরীক্ষাকে গুরুত্বের সঙ্গে বিশ্লেষণ করে থাকি, যাচাই করে তারপর নিজেরাও আবার পরীক্ষা করার পর সেই খাদ্যের গতি প্রকৃতি নির্ধারণ করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করে থাকি। খাদ্যকে নিরাপদ করতে হলে প্রতিটি কৃষকের বাড়ি থেকে শুরু করতে হবে। প্রতিটি খাদ্য উপাদানকে নিরাপদ করতে হবে, যেমন প্রাণী এবং মৎস্য ফিড।
খামারিদের অ্যান্টিবায়োটিকের ব্যবহার নিয়ন্ত্রণ করতে হবে। ভালো উৎপাদন প্র্যাকটিসে অভ্যস্ত করে তুলতে হবে। আবার বলছি সময় দিতে হবে। ফুড চেইন ঠিক করা খুব জটিল প্রসেস এবং সময় সাপেক্ষ। আমরা এর মধ্যে দুই ল্যাবে পরীক্ষা করে দুধে অ্যান্টিবায়োটিক পাইনি। তার মানে এই নয় যে, দুধে অ্যান্টিবায়োটিক নেই বা থাকার সম্ভাবনা নেই। কেউ কিছু পেলে এই নয় যে, দুধ অ্যান্টিবায়োটিকে ভরা। সব শেষ বা ওই ল্যাব খারাপ। সিদ্ধান্ত নেবেন আরও অনেক পরে। কোম্পানিগুলো থেকে শুরু করে সবাই এ ব্যাপারে কনসার্ন। আমাদের কাজ করতে দিন, সাহায্য করুন, তথ্য উপাত্ত দিন। সফলতা ছাড়া আমাদের বিকল্প কোনো রাস্তা নেই। খারাপ খবর আরও আসতে পারে। ধৈর্য ধারণ করে খাদ্যকে নিরাপদ করতে সময় দিন আমাদের। সবাই মিলে পারবো আমরা ইনশাআল্লাহ। ফেসবুক থেকে
আপনার মতামত লিখুন :