আরিফা রাখি : ভাঙ্গাচোরা ফুটপাতে চলাচলে চরম ভোগান্তি পোহাতে হয় রাজধানী বাসির। নগরীর ফুটপাতগুলোতে প্রতিদিন হাজার মানুষের চলাচল। আজিমপুর থেকে আসাদগেট, মতিঝিল, গুলিস্তান, পান্থপথ সহ রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় ফুটপাত ধরে হেঁটে গেলে চোখে পড়ে ফুটপাতের নানা বিড়ম্বনা। ফুটপাতের উপর কোথাও বিদ্যুৎ বা টেলিফোনের খুঁটি, সুইচ বক্স। কোথাও ফুটপাতজুড়ে বসেছে ফুটব্রিজের খুঁটি, সিঁড়ি। আছে পুলিশ বক্সও। বিভিন্ন বিপনী বিতানের সামনে ফুটপাতের দখল নিয়েছে যানবাহন। আর হকাররাতো আছেই। যার কারণে বাধ্য হয়ে মূল সড়ক দিয়ে চলাচল করতে হয় পথচারীদের। অনেক ক্ষেত্রে পথচারীদের চলার উপযোগী নয়। অথচ ফুটপাত পথচারীবান্ধব হলে সড়ক দুর্ঘটনা অনেকাংশে কমে যেত। অভিজাত এলাকার সামান্য অংশ বাদ দিলে পুরো শহরের অধিকাংশ ফুটপাতের অবস্থাই মোটামুটি এক।
বিভিন্ন এলাকায় একপাশে ফুটপাত অপ্রশস্ত। দুজন পথচারী পাশাপাশি হাঁটতে কষ্ট হয়। পথচারীরা চরমভাবে উপেক্ষিত হচ্ছে। ফুটপাতগুলো হয়তো দখল হয়ে গেছে, নয়তো চলাচলের উপযোগী নেই। ধানমণ্ডি এক নম্বর সড়কের কাছে গিয়ে ফুটপাত নেই হয়ে গেছে। রাস্তা ফুটপাত মিশে গেছে একসাথে। এখানে বেশকিছু অস্থায়ী দোকানও আছে। রাজধানীতে সড়কে নিহতদের একটি বড় অংশ রাস্তায় চলতে গিয়ে দুর্ঘটনার শিকার হন। ফুটপাত ব্যবহারের উপযোগী না থাকায় ঝুঁকি নিয়ে অনেকেই পথ চলেন রাস্তার পাশ দিয়ে। নিউ মার্কেটসহ বিভিন্ন এলাকার ফুটপাতের হকার উঠিয়ে দেয়া হয়েছে।
সোমবার সকালে নীলক্ষেত মোড় থেকে আসাদগেট পর্যন্ত ফুটপাত ধরে হেঁটে যাওয়ার সময় দেখা গেছে অব্যবস্থাপনার চিত্র। নিউ মার্কেটের দুই নম্বর গেইট থেকে ফুটওভারব্রিজ পর্যন্ত বিভিন্ন জায়গায় দোকানপাট। যেখানে হকার নেই সেখানে ফুটপাত এবড়োথেবড়ো, কোথাও কংক্রিটের ব্লক উঠে গেছে। ঢাকা কলেজের সামনে ফুটপাতে দেখা গেছে বিদ্যুৎ ও টেলিফোনের দুটি সুইচবক্স। সেখানে ফুটপাতের অনেকটা এলাকা ভাঙা। টিচার্স ট্রেইনিং কলেজের সামনের ফুটপাতে ফুলের টবসহ নানা সামগ্রী নিয়ে বসেছেন হকাররা।
পথচারী শিক্ষার্থী আসিফ আহমেদ বলেন, কলাবাগান থেকে সিটি কলেজ পর্যন্ত যেরকম যানজট থাকে, তাতে হেঁটে আসাই ভালো। কিন্তু ফুটপাতের যা পরিস্থিতি, তাতে নির্বিঘেœ কারও পক্ষে হেঁটে আসা সম্ভব না। আসলে যারা এগুলোর দায়িত্বে, তাদের তো আর আমাদের মত রাস্তায় হাঁটতে হয় না। তাই আমাদের কষ্টটাও তারা বুঝতে চান না। প্রতিবন্ধীদের জন্য সবাই কত ভালো ভালো কথা বলে! এই রাস্তায় এই ফুটপাতে তারা কীভাবে চলবে তা কেউ ভাবে?
কথা হয় পথচারী হাসনাত নাঈমের সঙ্গে তিনি বলেন, ফুটপাত উন্মুক্ত থাকলে পথচারীদের সড়কে নামতে হত না। আমি যদি ফুটপাতে ঠিকমত হাঁটতে পারি তাহলে কেন রাস্তায় যানবাহনের মাঝখানে নামব। কেন নিজেকে ঝুঁকির মধ্যে ফেলে দেব। বাস্তবতা হল, আমাদের ফুটপাত মোটেও পথচারীদের জন্য নেই।
ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকতা মোস্তাফিজুর রহমানের কাছে ফুটপাতের বিভিন্ন অব্যবস্থাপনার কথা জানতে চাইলে তিনি বলেন, সরু ফুতপাত রাস্তার পরিধির উপর নির্ভর করে বানানো হয়। ফুটপাতের পুলিশ বক্স প্রয়োজনের ক্ষেত্রে বসানো হয়ে থাকে। তিনি আরো বলেন, রাজধানীতে যে সমস্ত ফুটপাত ভাঙ্গাচোরা আছে সে সকল জায়গায় ফুটপাত মেরামতের কাজ চলছে।
আপনার মতামত লিখুন :