স্বপ্না চক্রবর্তী : শেষ পর্যন্ত বাস্তবায়িত হতে যাচ্ছে ‘সাব-কন্ট্রাক্টিং গাইড লাইন-২০১৯’। এর মাধ্যমে বন্ধ হবে দেশের পোশাক শিল্প কারখানাগুলোতে অনুমোদনহীন সাব-কন্ট্রাক্টিং। ফলে পোশাক শিল্প মালিকদের সংগঠন বিজিএমইএ ও বিকেএমইএ-এর ক্ষমতায়ন তৈরি হবে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা। শুধু তাই নয় এটি বাস্তবায়নের মাধ্যমে কারখানাগুলো পণ্যের ন্যায্য মূল্য পাওয়ার আশা করছেন তারা।
সম্প্রতি সাব-কন্ট্রাক্টিং গাইড লাইন বিষয়ে বাণিজ্যমন্ত্রণালয় কর্তৃক জারি করা এক প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, রফতনিমুখী পোশাক খাতের কারখানাগুলোর জন্য অননুমোদিত সাব-কন্ট্রাক্টিংয়ের সুযোগ আর থাকছে না। সাব-কন্ট্রাক্টিং কার্যক্রমে যুক্ত হতে হলে সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানগুলোকে অবশ্যই পোশাক শিল্পের মালিকদের সংগঠন বিজিএমইএ ও বিকেএমইএ এর সদস্য হতে হবে। পাশাপাশি সাব-কন্ট্রাক্টিং তদারকি বা নিয়ন্ত্রণে তৈরি পোশাক শিল্পের মালিকদের এ দুই সংগঠনের ক্ষমতাও বাড়ানো হয়েছে নীতিমালায়।
এতে করে পোশাক কারখানাগুলো পণ্যের ন্যায্য দাম নিশ্চিত হবে বলে মন্তব্য করেন বিজিএমইএ এর সহ-সভাপতি এস এম মান্নান কচি। তিনি বলেন, ২০১২ সালে তাজরীন ফ্যাশনের অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় সাব-কন্ট্রাক্টের ভিত্তিতে ক্রেতা প্রতিষ্ঠান ওয়ালমার্টের জন্য পোশাক তৈরি করতো। ওই সময় সাব-কন্ট্রাক্টিংয়ের জন্য সমন্বিত ও স্বীকৃত কোনো দিকনির্দেশনা বা নীতিমালা ছিলো না। ফলে সংশ্লিষ্ট ক্রেতা প্রতিষ্ঠানগুলোর পক্ষে কারখানার কর্মপরিবেশ তদারকির সুযোগ ছিলো। তাজরীনের ঘটনার পরপরই ২০১৩ সালের জানুয়ারিতে সরকার মালিক ও শ্রমিকদের ত্রিপক্ষীয় জাতীয় কর্মপরিকল্পনার (ন্যাপ) আওতায় এ সংক্রান্ত নীতিমালা বা গাইডলাইন তৈরির উদ্যোগ নেওয়া হয়। এ বিষয়ে খসড়া প্রস্তাবনা পাঠানোর জন্য বিজিএমইএ, বিকেএমইএ ও ইপিবিকে নির্দেশ দেয় বাণিজ্য মন্ত্রণালয়। এর ছয় বছর পর এই গাইড লাইনটি প্রজ্ঞাপন আকারে জারি হওয়ার মাধ্যমে পোশাক শিল্পখাতের অব্যাহত উন্নয়ন আরও বিস্তৃত হবে বলে আমি মনে করি। একই কথা বলেন সংগঠনটির সাবেক সভাপতি মো. সিদ্দিকুর রহমান।
তিনি বলেন, তৈরি পোশাক খাত থেকে আমাদের রপ্তানি আয়ের প্রায় ৮৪ শতাংশ আসে। এটি ক্রমবর্ধমান একটি প্রক্রিয়া। এই মুহূর্তে আমরা বিশ্বের বিভিন্ন দেশে পোশাকের দাম বাড়ানোর জন্য জোর লবিং চালাচ্ছি। কিন্তু অননুমোদিত সাব-কন্ট্রাক্টের কারণে অনেক ক্ষেত্রে আমাদের বাঁধাগ্রস্ত হতে হচ্ছিল। তবে আশা করছি এই গাইডলাইনটির বাস্তবায়ন হলে কারখানাগুলো একটি নির্দিষ্ট পদ্ধতি অনুসারে পণ্যের দাম আদায় করে নিতে পারবে ক্রেতাদের কাছ থেকে।
সম্পাদনা : মিঠুন রাকসাম
আপনার মতামত লিখুন :