শিরোনাম
◈ স্কুল পর্যায়ের শিক্ষার্থীদের গল্প-প্রবন্ধ নিয়ে সাময়িকী প্রকাশনা করবে বাংলা একাডেমি ◈ দক্ষিণ ভারতে ইন্ডিয়া জোটের কাছে গো-হারা হারবে বিজেপি: রেভান্ত রেড্ডি ◈ ইরানের ওপর মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্যের নতুন নিষেধাজ্ঞা ◈ আবারও বাড়লো স্বর্ণের দাম  ◈ ভারতের পররাষ্ট্র সচিব বিনয় মোহন কোয়াত্রার ঢাকা সফর স্থগিত ◈ বিএনপি নেতাকর্মীদের জামিন না দেওয়াকে কর্মসূচিতে পরিণত করেছে সরকার: মির্জা ফখরুল ◈ ব্রিটিশ হাইকমিশনারের সঙ্গে বিএনপি নেতাদের বৈঠক ◈ মিয়ানমার সেনার ওপর নিষেধাজ্ঞা থাকায় তাদের সঙ্গে সরাসরি যোগাযোগ করা সম্ভব হচ্ছে না: সেনা প্রধান ◈ উপজেলা নির্বাচন: মন্ত্রী-এমপিদের আত্মীয়দের সরে দাঁড়ানোর নির্দেশ আওয়ামী লীগের ◈ বোতলজাত সয়াবিনের দাম লিটারে ৪ টাকা বাড়লো

প্রকাশিত : ২৮ জুন, ২০১৯, ০১:৩৭ রাত
আপডেট : ২৮ জুন, ২০১৯, ০১:৩৭ রাত

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

স্বাস্থ্যখাতের গবেষণা বন্ধে আর্থিক প্রভাব ব্যবহার করছে কোকাকোলা

নূর মাজিদ : কোমল পানীয় প্রস্তুতকারক কো¤পানি কোকাকোলা যুক্তরাষ্ট্রের একাধিক সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গে গবেষণা অনুদানের জন্য চুক্তিবদ্ধ হয়েছে। আর এই সুবাদে এই সকল বিশ্ববিদ্যালয়ের জনস্বাস্থ্য বিষয়ক গবেষণায় প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করছে কোম্পানিটি। ক্যামব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজনীতি এবং আন্তর্জাতিক অনুষদ ভিন্ন এক গবেষণা পরিচালনার সময় আকস্মিকভাবেই বিষয়টি আবিষ্কার করে।

বিশ্ববিদ্যালয়টি বেসরকারি বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠান এবং সরকারি প্রতিষ্ঠানের মাঝে স্বাক্ষরিত অনুদান চুক্তির শর্ত নিয়ে গবেষণা করছিলো। এবং যুক্তরাষ্ট্রের তথ্যাধিকার আইনের আওতায় এসময় তারা ৮৭ হাজার নথি পরীক্ষা করে। সূত্র : সিএনবিসি।

এই আবিষ্কারের পরেই এক প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে ক্যামব্রিজ, সেখানে তারা জানিয়েছে অর্থায়ন চুক্তির আওতায় কোকাকোলা যে আইনি অধিকার পায়, তা কাজে লাগিয়ে কোম্পানিটির বাণিজ্যিক স্বার্থে আঘাত হানতে পারে এমন গবেষণা বা সেগুলোর অর্থায়ন বন্ধ করার পদক্ষেপ নেয়া হয়। এইভাবে গবেষকদের ওপর চাপ প্রয়োগের মাধ্যমে শুধুমাত্র ২০১৫ থেকে ২০১৬ সালের মাঝেই পাঁচটি গুরুত্বপূর্ণ গবেষণা বন্ধ করে কোকাকোলা।

গত মঙ্গলবার প্রকাশিত প্রতিবেদনে আরো বলা হয়, মূল ক্রটি ছিলো অনুদানগ্রহণের চুক্তিতেই। সেখানেই কোকাকোলাকে গবেষণা বন্ধের অধিকার দেয়া হয়। ক্যামব্রিজের নীতি গবেষক ড. সারাহ স্টিলের স¤পাদিত এই প্রতিবেদন জার্নাল অব পাবলিক হেলথ পলিসিতে প্রকাশিত হয়। সেখানে তিনি মন্তব্য করেছেন, ‘বড় তামাক এবং ওষুধ শিল্প এতদিন এই ধরনের অন্যায় চর্চা করে এসেছে। আমরা জানতে চেয়েছিলাম বৃহৎ খাদ্য উৎপাদক কো¤পানিগুলোও একই কাজ করছে কিনা? এবং আমরা যা আবিষ্কার করেছি তা সকল শঙ্কাকেই সঠিক প্রমাণ করেছে।’

তিনি আরো জানান, অনুদান চুক্তিপত্র এবং অন্যান্য নথিতে সঠিক চিত্র পাওয়া বেশ কঠিন ছিলো। যেমন নথিগুলো পরবর্তীতে সম্পাদনা করে বেশ দুর্বোধ্য করে তোলা হয়েছে। এছাড়াও, অনেক নথিতে সরকারি বিশ্ববিদ্যালয় এবং কোকাকোলার মাঝে কিভাবে সংযোগ রক্ষা করা হতো, সেই বিষয়টিও গোপন করা হয়। বিশেষ করে, অনুদান চুক্তি স্বাক্ষরের সময় বিশ্ববিদ্যালয় পরিচালনা পর্ষদ এবং কোকাকোলার মাঝে কি ধরনের ব্যক্তিগত পর্যায়ের সংযোগ কাজ করেছে, সেটাও তুলে ধরা হয়নি। উদাহরণ হিসেবে, ফোনকল এবং ইমেইলের কথা বলা যেতে পারে। এসব কারণে কোক সরাসরি কোন গবেষণা বন্ধ করেছে, তার স্বপক্ষে শক্ত প্রমাণ দেয়া সম্ভব নয়।

তবে এরপরেও স্বাস্থ্যঝুঁকির বিষয়ে গবেষণা বন্ধে কোকের সরাসরি জড়িত থাকার বিষয়টি একেবারেই উড়িয়ে দেয়া যায়না। কারণ কো¤পানিটি দীর্ঘদিন ধরে অতিরিক্ত মিষ্টি পানীয় পানের কারণে যেসব শারীরিক ক্ষতি হয় অবজ্ঞা করছে। বিশ্বের অনেক দেশের স্বাস্থ্যকর্মীদের অনুরোধ ও আন্দোলন স্বত্বেও কোক নিজের ব্যবসায়িক নীতি পরিবর্তনের উদ্যোগ নেয়নি।

এদিকে এই প্রতিবেদন প্রকাশের প্রতিক্রিয়ায় কোকাকোলা জানিয়েছে, ‘আমরা মনে করি বাণিজ্যিক সততা ও নিষ্ঠা অনেক বড় বিষয়। এই কারণেই আমরা স্বতন্ত্রভাবে স্বাস্থ্যখাতের কল্যাণমূলক ব্যবসায় অর্থায়ন করিনা। এবং গবেষণা অর্থায়নের সকল পূর্বশর্ত আমাদের ওয়েবসাইটে অনেক আগে থেকেই রয়েছে। যেগুলো কোনভাবেই জনস্বার্থের সঙ্গে সাংঘর্ষিক অবস্থানে নেই।’

তবে কোকাকোলা যাই বলুক, অভিযোগের প্রেক্ষাপট একদমই ঠুনকো নয়। গত জানুয়ারিতে প্রকাশিত পাবলিক হেলথ জার্নালের ওপর এক প্রতিবেদন জানায়, পেপসিকো ও ম্যাক-ডোনাল্ডসের মতো জাঙ্কফুড কোম্পানিগুলো কোকাকোলার নেতৃত্বে একটি জোট ইন্টারন্যাশনাল লাইফ সায়েন্স ইন্সটিটিউড নামক একটি অলাভজনক গবেষণা প্রতিষ্ঠানকে ব্যবহার করে চীনের জাতীয় পুষ্টি নীতি পরিবর্তন করার গোপন চেষ্টা করেছে।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়