মুসবা তিন্নি : ঢাকা শহরে একজন রিকশাচালক মাসে গড়ে ১১ হাজার ১৫১ টাকা আয় করেন। রিকশাভাড়া, গ্যারেজের খরচ—এসব বাদ দিয়েই এ অর্থ আসে। রিকশাচালকদের প্রায় অর্ধেকই তাঁদের এ আয় দিয়ে চলতে পারেন। এক-চতুর্থাংশ চালকের এ আয় থেকে জমানোর জন্য অর্থ থাকে। বাকি চালকদের এ আয়ে চলে না। আয়ের দিকটা এমনটা হলেও ৯৬ শতাংশ রিকশাচালক অসুখে পড়লে হাতুড়ে চিকিৎসকের কাছে থেকে চিকিৎসা নেন। বেশির ভাগ রিকশাচালক পুলিশের কাছে নিগ্রহের শিকার হন।
দুর্ব্যবহার ও শারীরিক লাঞ্ছনার শিকার হন যাত্রীদের কাছে থেকেও। প্রায় কোনো চালকই শ্রমিক হিসেবে তাঁদের অধিকার সম্পর্কে জানেন না। তাঁদের কল্যাণে কোনো সংগঠনও কাজ করে না। রিকশাচালকদের ওপর পরিচালিত এক গবেষণায় এ চিত্র উঠে এসেছে। শ্রমিক অধিকার নিয়ে কাজ করা সংগঠন বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব লেবার স্টাডিজ এই গবেষণা করেছে। আজ বৃহস্পতিবার রাজধানীতে এক অনুষ্ঠানে এ গবেষণার ফলাফল তুলে ধরা হবে।
অর্থনীতিবিদ হোসেন জিল্লুর রহমান বলেছেন, ‘আমাদের নগর দারিদ্র্যের একটা বৈশিষ্ট্য হলো এসব নিম্ন আয়ের মানুষ নগরে এসে অর্থনৈতিক সুবিধা পাচ্ছে। কিন্তু তাদের সামাজিক সমস্যা আছে যথেষ্ট। নাগরিক সম্মানের দিকটা অনেকটাই দুর্বল। তাদের কর্মক্ষেত্রের নিরাপত্তা ও মর্যাদা নিশ্চিত হচ্ছে না। এমন আয়ের মানুষের গড় আয়ু ও স্বাস্থ্যসুবিধা কেমন—এসব দিক বিবেচনা করলে খুব সুখকর চিত্র পাওয়া যায় না।
বিলসের ‘অর্গানাইজিং দ্য ইনফরমাল ইকনোমি ওয়ার্কার্স: আ স্টাডি ইন রিকশাপুলারস ইন ঢাকা সিটি’ শীর্ষক গবেষণাটি পরিচালনা করেন অধ্যাপক মো. রেজাউল করিম ও খন্দকার আবদুস সালাম।
এটি মূলত পরিমাণগত গবেষণা। তবে এখানে সংখ্যাগত উপাত্তের সঙ্গে গুণগত তথ্যের মিল ঘটানো হয়েছে। প্রাথমিকভাবে ঢাকার চারটি থানার ২০০ রিকশাচালকের ওপর জরিপ চালানো হয়েছে। এলাকাগুলো হলো বাড্ডা, হাজারীবাগ, যাত্রাবাড়ী ও শাহজাহানপুর। এ ছাড়া ২০টি গ্যারেজের মালিকের সাক্ষাৎকার নেওয়া হয়েছে। সিটি করপোরেশন ও ট্রাফিক পুলিশের কাছ থেকে সাক্ষাৎকারের মাধ্যমে তথ্য সংগ্রহ করা হয়েছে। পরিমাণগত উপাত্তগুলো এসপিএসএস সফটওয়্যারের মাধ্যমে প্রক্রিয়াজাত করা হয়েছে।
আপনার মতামত লিখুন :