রাশিদ রিয়াজ : ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহিল উজমা খামেনেয়ী বলেছেন, যুক্তরাষ্ট্রের আলোচনার প্রস্তাবের মূল উদ্দেশ্য হচ্ছে ইরানি জাতিকে নিরস্ত্রীকরণ এবং শক্তির উপাদানগুলোকে নিশ্চিহ্ন করা। তিনি বুধবার দেশের বিচার বিভাগের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের এক সমাবেশে এ কথা বলেন। সর্বোচ্চ নেতা বলেন, মার্কিন আলোচনার প্রস্তাব প্রতারণামাত্র।
আয়াতুল্লাহিল উজমা খামেনেয়ী আরও বলেন, মার্কিন প্রশাসন ইরানের শক্তি ও সক্ষমতায় ভীত-সন্ত্রস্ত হয়ে পড়েছে। তারা এখন আলোচনার মাধ্যমে ইরানের শক্তি-সামর্থ্যকে হরণ করতে চায়। ইরানের সর্বোচ্চ নেতা বলেন, বিশ্বের সবচেয়ে ঘৃণ্য ও বড় দুর্নীতিবাজ সরকার হচ্ছে মার্কিন সরকার। এই সরকার বিশ্বের বিভিন্ন দেশে যুদ্ধ, বিবাদ ও লুটতরাজের মূল হোতা। আর এই ঘৃণিত সরকারই প্রতিদিন ইরানের সম্মানিত জাতিকে গালিগালাজ করছে, নানা অপবাদ দিচ্ছে। কিন্তু আমেরিকা এ ধরণের ঘৃণ্য আচরণের মাধ্যমে ইরানি জনগণকে তাদের পথ থেকে সরাতে পারবে না।
তিনি বলেন, মার্কিন নিষেধাজ্ঞা হচ্ছে ইরানি জনগণের বিরুদ্ধে প্রকাশ্য জুলুম। গত চার দশকে ইরানিদের পরিচিতির সঙ্গে ইসলামি বৈশিষ্ট্যের মিশ্রণ জোরদার হওয়ায় বিশ্বের বলদর্পীদের চাপ আমাদের উন্নয়ন ও সমৃদ্ধির ক্ষেত্রে প্রভাব ফেলতে পারে নি।
আয়াতুল্লাহিল উজমা খামেনেয়ী আরও বলেন, ইরানি জাতি মজলুম তবে শক্তিশালী। আল্লাহর রহমতে এই জাতি শত্রুর মোকাবেলায় পাহাড়ের মতো দৃঢ় ও শক্তিশালী এবং দৃঢ়তার সঙ্গে উন্নয়ন ও অগ্রযাত্রা অব্যাহত রাখবে। এভাবেই নিজের সব লক্ষ্য অর্জন করবে।
আমেরিকা মানবাধিকারকে নিজেদের স্বার্থ হাসিলের হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করছে বলে তিনি উল্লেখ করেন। সর্বোচ্চ নেতা আমেরিকার উদ্দেশে বলেন, আপনারা ৩০০ নিরপরাধ বিমানযাত্রীকে আকাশে হত্যা করেছেন, সৌদি আরবের সহায়তায় ইয়েমেনে অব্যাহতভাবে অপরাধ চালিয়ে যাচ্ছেন আবার মানবাধিকারের কথা বলছেন!
এদিকে ইরানের প্রেসিডেন্ট হাসান রুহানি তেহরানে একটি সরকারি বৈঠকে দেয়া বক্তব্যে বলেন, ট্রাম্প যদি সত্যিকারভাবেই পরমাণু অস্ত্র নিয়ে গভীরভাবে উদ্বিগ্ন হয়ে থাকেন তাহলে তার উচিত ইসরাইলের অধীনে থাকা শত শত পরমাণু অস্ত্রের মজুদ নিয়ে কথা বলা। প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পকে রুহানি প্রশ্ন করেন, যেখানে জাতিসংঘের পরমাণু পর্যবেক্ষণ সংস্থা নিয়মিতভাবে তার দেশের পরমাণু স্থাপনা পরিদর্শন করছে এবং তেহরানের শান্তিপূর্ণ পরমাণু কর্মসূচির স্বীকৃতি দিচ্ছে সেখানে কেন তিনি উদ্বিগ্ন যে ইরান পরমাণু অস্ত্র তৈরির চেষ্টা করছে?
প্রেসিডেন্ট রুহানি ট্রাম্পকে স্মরণ করিয়ে দেন যে তিনি (ট্রাম্প) এমন সময় পরমাণু অস্ত্র তৈরির বিষয়ে ইরানকে জড়িয়ে অভিযোগ করছেন যেখানে তার দেশের সর্বোচ্চ কর্তৃপক্ষ পরমাণু অস্ত্রের মজুদের বিরুদ্ধে চূড়ান্ত ডিক্রি জারি করেছেন। রুহানি ট্রাম্পকে প্রশ্ন করেন, আপনি কী সত্যিই পরমাণু অস্ত্র নিয়ে উদ্বিগ্ন? আপনি কী ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহিল উজমা খামেনেয়ীর ধর্মীয় ফতোয়া জারি সম্পর্কে অবগত নন? রুহানি বলেন, ইরানের সর্বোচ্চ নেতা পরমাণু অস্ত্রের উন্নয়ন এমনকি এটিকে মজুদ করার চেষ্টাকে হারাম ঘোষণা করেছেন।#
আপনার মতামত লিখুন :