মাজহারুল শিপলু : প্রায় ২৭ বছর ধরে মৌ চাষ করে আসছেন রেকাত আলী(৬৫)। মৌ চাষ করে বছরে আয় করছেন প্রায় দেয় লাখ টাকা। রেকাত আলী উপজেলার বাঁশতৈল ইউনিয়েনর বাঁশতৈল গ্রামের জব্বার আলীর ছেলে।
১৯৯২ সালে হাতে-কলমে মৌ চাষের প্রশিক্ষণ নিয়ে তিনি এখন উপজেলার একমাত্র সফল মৌচাষি। সুস্বাদু ও দামে সস্তা রেকাত আলীর মধুর ব্যাপক চাহিদা এলাকায়। কেজি প্রতি ২০০ থেকে ৩০০ টাকায় পাওয়া যায়। দীর্ঘ ৮ বছর মৌচাষ করেও ভাগ্যের পরিবর্তন করতে পারছিলেন না রেকাত আলী। এর মধ্যে মৌচাষের স্বর্ণযোগ চলে আসে অর্থাৎ মৌমাছির উন্নত জাত এপিস মেলিফেরা বাংলাদেশে পরীক্ষামূলকভাবে চাষ শুরু হয়। ২০০০ সালে রেকাত আলী প্রশিকার এক কর্মকর্তার নিকট হতে একটি মৌকলোনী ক্রয় করেন। এরপর আস্তে আস্তে মৌকলোনী বাড়াতে থাকেন এবং মধু উৎপাদন বৃদ্ধি পেতে থাকে।
রেকাত আলী ২০১৭ সালের মে মাসে পল্লী কর্ম-সহায়ক ফাউন্ডেশন (পিকেএসএফ) এর অর্থায়নে বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন ফর সোস্যাল অ্যাডভান্সমেন্ট (বাসা) সংস্থা কর্তৃক বাস্তবায়নাধীন টেকসই মৌচাষ উন্নয়ন ও মধু বিপণনের মাধ্যমে মৌচাষীদের আয় বৃদ্ধিকরণ শীর্ষক ভ্যালু চেইন উন্নয়ন প্রকল্পের মাধ্যমে উন্নত প্রশিক্ষণ গ্রহণ করেন।
রেকাত আলীর মৌকলোনীতে এখন রোগ বালাই খুব কম হয়। উন্নত পদ্ধতিতে রাণী উৎপাদন করছেন এবং বিভিন্ন পরীক্ষার মাধ্যমে মৌকলোনীতে করণীয় ঠিক করছেন।
রেকাত আলী বর্তমানে ৩৫ টি মৌকলোনী পরিচালনা করেছেন। প্রতি বছর তিনটি হতে চারটি ভ্রাম্যমাণ মৌখামার পরিচালনা করেন।
রেকাত আলী মৌচাষের এবং অন্যান্য আয় দিয়ে মোট ৭ সন্তানের মধ্যে ৫ মেয়েকে বিয়ে দিয়েছেন ১ ছেলেকে বিদেশ পাঠিয়েছেন এবং ছোট ১ ছেলে অনার্সে পড়াশোনা করছে। রেকাত আলীর সামাজিক অর্থনৈতিক অবস্থার পরিবর্তন হয়েছে।
উপজেলা কৃষি অফিসার মোহাম্মদ মশিউর রহমান বলেন, মৌমাছি চাষে মধুর জোগানের পাশাপাশি ফুলের পরাগায়ন ঘটিয়ে ফসলের উৎপাদন ২০ ভাগ পর্যন্ত বাড়িয়ে দিতে পারে। কিন্তু প্রান্তিক অনেক কৃষকই বিষয়টি বোঝেন না। সব কৃষককে এ ব্যাপারে মাঠ পর্যায়ে হাতে-কলমে প্রশিক্ষণ দেওয়া গেলে উৎপাদিত মধু বিদেশেও রপ্তানি করা সম্ভব।
আপনার মতামত লিখুন :