সেলিম জাহান : এ ক’দিন আনন্দের তরঙ্গে ভাসছি, উড়ছি সুখের হাওয়ায়। বিশ্বকাপে কি খেলাটাই না খেলছে বাংলাদেশ! ওয়েস্ট ইন্ডিজকে হারালো... সাকিবের শতরান আর লিটনের কাব্যিক খেলা! কি যে গর্ব আমার। জোরালো খেলা বাংলাদেশ খেললো অস্ট্রেলিয়ার সঙ্গে। মুশফিকের দৃষ্টিনন্দন শতরান... ‘ভুলি কেমনে?’ গতকাল বাংলাদেশ হারালো আফগানিস্তানকে। এ রকম একটি উত্তুঙ্গ সময়ে আরেকটি গর্বের সংবাদ কিন্তু তলায় পড়ে গেছে। খেলারই সংবাদ... একটি বিশ্ব প্রেক্ষিতের অর্জন। সংবাদটি ছোট হলেও অর্জনটি কিন্তু ছোট নয়... না বিজয়ীর জন্য, না বাংলাদেশের জন্য।
ছেলেটির নাম ‘রোমান সানা’। ক’দিন আগে বিশ্ব তীরন্দাজ প্রতিযোগিতায় তৃতীয় হয়ে ব্রোঞ্জ পদক জিতেছে সে। আর সে সুবাদে ২০২০ সালের টোকিওতে অনুষ্ঠিতব্য অলিম্পিকে সরাসরি অংশ নিতে পারবে রোমান। এ কীর্তিটির অধিকারী এতোদিন ছিলেন গলফ্ খেলোয়াড় সিদ্দিকুর রহমান... এবার তার সঙ্গে যুক্ত হলেন রোমান সানা। জানি, সাম্প্রতিক সময়ে ক্রিকেট ঝড়ের দাপটে আমাদের চোখে পড়ছে না তীরন্দাজ প্রতিযোগিতায় বিশ্ব পর্যায়ে রোমান সানার সাফল্য। যে শিশুটি একদিন তীর-ধনুক নিয়ে খেলতে ভালোবাসতো, তার সেই তীব্র ভালোবাসাই আজ তাকে বিশ্বদরবারে বিরাট এক সম্মানের জায়গায় পৌঁছে দিয়েছে। প্রাণঢালা অভিনন্দন, রোমান সানা। আপনার অর্জন আমাদের গর্ব, আমাদের অহংকার। অলিম্পিক সমিতির দু’বছরের একটি ক্রীড়াবৃত্তি নিয়ে রোমান সুইজারল্যান্ডে অনুশীলন করছিলেন।
কিন্তু বিভিন্ন বিষয় খুব মনেযোগ দিয়ে বিবেচনা করে দেশেই অনুশীলনের সিদ্ধান্ত নিয়েছেন বাংলাদেশ আনসারের সদস্য এই মেধাবী তীরন্দাজ। কিন্তু এসব কিছু ছাপিয়ে আরো কিছু কথা থেকে যায়। যতোদূর জানি, এখন পর্যন্ত কোনো প্রতিষ্ঠান রোমানের জন্য কোনো অর্থ-পুরস্কারের কথা ঘোষণা করেননি। তার টোকিও অলিম্পিকে অংশগ্রহণের জন্য কোনো পৃষ্ঠপোষক এগিয়ে আসেননি। এসব প্রক্রিয়াগুলোই সম্পদনির্ভর। কিন্তু মধ্যবিত্ত পরিবারের মানুষ রোমান সানার পক্ষে এগুলোর সংস্থান সম্ভব নয়। সুতরাং রোমানের টোকিও অলিম্পিকে যোগদান নিশ্চিত করতে হলে বহিঃসহায়তা একান্ত প্রয়োজন। এগিয়ে আসুক পৃষ্ঠপোষকরা রোমানের সাহায্যার্থে।
জানি অনেক প্রয়োজনের প্রতাপে গুরুত্বপূর্ণ হারিয়ে যায়। রোমানের অর্জন ছোট নয়, কিন্তু তার চেয়েও বড় কথা, তার আগামীর সাফল্যের জন্য সব রকমের সহায়তা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। সে সহায়তা পেলে হয়তো রোমান সানা দেশের জন্য যে আরো বড় সম্মান বয়ে আনতে পারবে। আমরা সে সুদিনের প্রতীক্ষায় রইলাম। ফেসবুক থেকে
আপনার মতামত লিখুন :