শাহনাজ বেগম : ভারতের ঝাড়খন্ডে মোটরসাইকেল চুরির অভিযোগে ২৪ বছর বয়সী তাবরেজ আনসারিকে পিটিয়ে হত্যা ও জোরপূর্বক ‘জয় শ্রী রাম’ ‘জয় হনুমান’ বলতে বাধ্য করার ঘটনায় জড়িত দুই পুলিশ কর্মকর্তাকে সোমবার সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে বলে পুলিশ নিশ্চিত করেছে। তাবরেজের মৃত্যুর কারণ তদন্ত করতে ও এর পেছনে চিকিৎসকের অবহেলা আছে কি না জানতে বিশেষ তদন্তদল (এসআইটি) গঠন করা হয়েছে বলে পুলিশ জানিয়েছে। ঘটনার সঙ্গে জড়িত সন্দেহে ১১ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। এদিকে তীব্র সমালোচনার মুখে ঝাড়খন্ডের শীর্ষস্থানীয় বিজেপি নেতা ও রাজ্যের মন্ত্রী চন্দ্রশেখর প্রসাদ সিংহ দাবি করেছেন, ওই ঘটনায় হিন্দুত্ববাদী সংগঠনগুলি জড়িত নয়। ইন্ডিয়া টুডে, বিবিসি, আননন্দবাজার।
গত ১৮ জুন ঝাড়খণ্ডের সরাইকেলা-খরসোঁয়া জেলার ধক্তিদি গ্রামে মোটরবাইক চোর সন্দেহে তবরেজকে ১৮ ঘণ্টা ধরে পেটায় এক দল দুর্বৃত্ত। ভিডিওয়ে দেখা যাচ্ছে, বেধড়ক মারতে মারতে ল্যাম্পপোস্টে বাঁধা ওই যুবককে তারা ‘জয় শ্রী রাম’, ‘জয় হনুমান’ বলতে বলছে। তবে চন্দ্রশেখরের দাবি, গণপিটুনির এই ধরনের ঘটনাগুলির সঙ্গে বিজেপি, আরএসএস, ভিএইচপি, বজরং দলকে জুড়ে দেওয়ার প্রবণতা রয়েছে। তাঁর মতে, এ সব ঘটনা নিয়ে রাজনীতি করা ঠিক নয়। মন্ত্রীর মন্তব্য, ‘এটা ‘কাট অ্যান্ড পেস্ট’-এর সময়। কে, কোথায়, কোন কথা বসিয়ে দেবে বলা মুশকিল।’’ পাল্টা যুক্তি দিয়ে এআইএমআইএম নেতা আসাদউদ্দিন ওয়াইসির টুইট, ‘গণপিটুনির ক্ষেত্রে প্রায় সব ক্ষেত্রেই চেনা ছক হল, প্রথমে এক জন মুসলিমকে খুন করছে গো-প্রেমীরা। পরেই বলা হচ্ছে যে মনে হচ্ছিল, ওই লোকটি কাছে গরুর মাংস ছিল। কিংবা লোকটি চুরি করেছিল অথবা স্মাগলিংয়ে যুক্ত। ‘লভ জিহাদ’-এর অদ্ভুত যুক্তিও দেয়া হয়ে থাকে।’
তাবরেজের পরিবার সাংবাদিকদের জানান, মঙ্গলবার কয়েকজন বন্ধুর সঙ্গে জামশেদপুর থেকে কারসোভায় নিজের বাড়িতে যাওয়ার পথে তাকে প্রায় পাঁচ কিলোমিটার দূরে মোটরসাইকেল চুরির অভিযোগ এনে একদল লোক তাদের উপর হামলে পড়ে। সেখানে বিদ্যুতের খুঁটির সঙ্গে বেঁধে কয়েক ঘণ্টা ধরে তাবরেজকে পেটানো হয়।
তবরেজের পরিবারের অভিযোগ, অনেক আবেদনের পরেও ওই যুবকের চিকিৎসার ব্যবস্থা করেনি পুলিশ। এমনকি, পরিবারের সদস্যদের ওই যুবকের সঙ্গে দেখা পর্যন্ত করতে দেওয়া হয়নি। পরিবারের দাবি, হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার অনেক আগেই মারা গিয়েছিলেন তবরেজ।
আপনার মতামত লিখুন :