অধ্যাপক ডা. আবুল হাসনাৎ মিল্টন : এখন যৌবন যার ক্লাসে যাবার তার শ্রেষ্ঠ সময়। এখন যৌবন যার ওয়ার্ডে যাবার তার শ্রেষ্ঠ সময়। এখন পরিবর্তিত কাল। জীবন-যৌবন বাজি রেখে রাজনীতি করার জন্য উপযুক্ত সময় মোটেও নয়, বর্তমানে তার কোনো প্রয়োজনও নেই। শুনেছি সব মেডিকেল কলেজেই নাকি সবাই এখন ছাত্রলীগ। যদি সত্যি হয় তবে তা ছাত্র রাজনীতির জন্য আদৌ কোনো সুখবর নয়। এই লেখাটি তাই সবার জন্য নয়, শুধুমাত্র যারা বঙ্গবন্ধুর আদর্শের প্রকৃত সৈনিক, যারা আদর্শকে ভালোবেসে ছাত্রলীগ করে তাদের জন্য। তারা যেন কোনো কিছু পাবার আশায় রাজনীতি না করে। সুতরাং আর যাই করো ছাত্রজীবনে নিজের পড়াশোনাটাকে কিছুতেই ক্ষতিগ্রস্ত করো না। কারণ পাস করার পর দল তোমার জন্য কিছু করবে না। বরং নিজের ভাগেরটা নিশ্চিত করার পর অনেক নেতাই তোমার সামনে সুশীলের ভং ধরবে। কেউ কেউ টেবিল চাপড়ে বলবে, ‘ছাত্রলীগকে চাকরি দেবার জন্য পদে আসীন হইনি’।
আমাদের দুর্ভাগ্য আওয়ামীপন্থী চিকিৎসকদের নেতা হলেন এক ছদ্ম জামায়াতি আমীর। ছাত্রলীগারদের জন্য নয়, তার হৃদয় আসলে কাঁদে ছুপা ছাগুদের জন্য। আরেক ‘ভাই’ আছেন দল ভারি করার জন্য শুধু ‘উপদল’ তৈরি করে সারাদেশব্যাপী কোন্দল সৃষ্টি করে বেড়ান। চাকরি প্রত্যাশীদের নিয়ে তালিকার পর তালিকা বানালেও তারা আসলে তোমাদের জন্য কিছু করবেন না। চাকরি পাবে নেতার স্বজন, আমলার আত্মীয় আর নগদ নারায়ণে বিশ্বাসী ভিন্ন মতাবলম্বী চিকিৎসক। দিনের শেষে দেখবে তুমি কোথাও নেই!
জননেত্রী শেখ হাসিনা ছাড়া তোমার জন্য আসলেই কেউ নেই। নিজের ক্যারিয়ার তোমার নিজেকেই গড়তে হবে এবং দেশে বা বিদেশে যেখানেই হোক তুমি তা পারবে। কারণ তুমি এমন এক আদর্শের নিবেদিত সৈনিক, যা তোমাকে চলার পথে সব ধরনের চ্যালেঞ্জ মোকাবেলার জন্য সাহস জোগাবে। নিজের পায়ে দাঁড়াও, তারপর পারলে দলের জন্য কিছু করো। প্রিয় নেত্রী শেখ হাসিনার রিজার্ভ ফোর্স হিসেবে নিজেকে প্রস্তুত রাখো। জনগণের স্বাস্থ্যসেবার জন্য, স্বাস্থ্য পেশার জন্য, ভবিষ্যতের চিকিৎসকদের জন্য পারলে কিছু করো ।
অধিকাংশ পেশাজীবী নেতাই এখন আর আগের মতো ত্যাগে নয়, ভোগে বিশ্বাস করেন। তাদের পেছনে ঘুরে তাই সময় নষ্ট করার মানে হয় না। আমাদের সৌভাগ্য, আমরা অনেক নিবেদিত-ত্যাগী পেশাজীবী নেতা পেয়েছিলাম। তোমাদের দুর্ভাগ্য, তোমরা তা পাওনি। নেতাদের পেছনে ঘুরে ঘুরে ব্যর্থ হয়ে পরে জিদ করে নিজের ক্যারিয়ার গড়েছেন, এমন উদাহরণ তোমার আশপাশেই ভুরি ভুরি আছে। তুমি নিজেও ক্যারিয়ার গড়ে অন্যের জন্য উদাহরণ সৃষ্টি করো। তোমার চলার পথে শুভ কামনা।
লেখক : বাংলাদেশ ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় কমিটির প্রাক্তন সদস্য ।
আপনার মতামত লিখুন :