নূর মাজিদ : আগামী কয়েক সপ্তাহের মধ্যে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল বা আইএমএফের কাছ থেকে ৬শ কোটি ডলারের ঋণ পাওয়ার শর্তে এই পদক্ষেপ নিচ্ছে দেশটির সরকার। যার আওতায় বাণিজ্যিকগুলোর হিসেবে রাখা নিজ আমানতের পুরোটাই তুলে, কেন্দ্রীয় ব্যাংকে রাখবে পাকিস্তান সরকার। গত সোমবার দেশটির কেন্দ্রীয় সরকার এই ঘোষণা দেয়। সূত্র : দ্য এক্সপ্রেস ট্রিবিউন।
এর আগে গত সপ্তাহের মঙ্গলবার চলতি অর্থবছরের বাজেট উপস্থাপনকালে দেশটির কেন্দ্রীয় রাজস্বমন্ত্রী হাম্মাদ আজহার এই বিষয়ে ইঙ্গিত দিয়ে বলেন, কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কোষাগারে একটি একক হিসেব খোলা হয়েছে, এখানে আইএমএফের শর্তানুসারে বাণিজ্যিক ব্যাংকে রাখা সরকারের সকল অর্থ সঞ্চয় করা হবে।
তবে রাতারাতি এই সিদ্ধান্ত কার্যকর করা হলে দেশটির অর্থনীতিতে নতুন সংকট সৃষ্টি হবে বলে আশংকা করা হচ্ছে। বিশেষত, মুদ্রাস্ফীতির কবলে পড়া সাধারণ মানুষ এবার নগদ অর্থ সংকটে পড়তে পারেন। আবার বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোও তারল্য সংকটে পড়তে পারে। বন্ধ হয়ে যেতে পারে সরকারি আমানতের ওপর নির্ভরশীল অনেক ছোট ব্যাংক। এই অবস্থায় দেশটির ব্যাংকিংখাতেও বিপর্যয় আসন্ন। বিষয়টি স¤পর্কে নিশ্চিত হবে দেশটির বহুল প্রচারিত ইংরেজি দৈনিক দ্য এক্সপ্রেস ট্রিবিউন কেন্দ্রীয় সরকার ও প্রাদেশিক সরকার এবং শীর্ষ অর্থনীতিবিদদের অভিমত নিয়েছে। তারা অধিকাংশই দৃঢ় আশা ব্যক্ত করেন, সামগ্রিক পরিস্থিতি বিবেচনায় নিয়ে ইমরান খানের সরকার এই বিষয়ে তড়িঘড়ি কোন পদক্ষেপ নেবেনা। এমনটি করা হলে, ভারতে ৫শ এবং ১ হাজার রূপির নোট বাতিলের পর যে তারল্য সংকট দেখা গিয়েছিলো, পাকিস্তানেও তার পুনরাবৃত্তি দেখা যাবে জনজীবনে। ওই সময় ভারতের অনেক মানুষ নগদ অর্থ সংকটে প্রায় দেউলিয়া হয়ে গিয়েছিলেন।
এদিকে এই বিষয়ে সরকারের পক্ষ থেকে আশ্বাস দেয়া হলেও, এই অর্থ স্থানান্তরের কর্ম-পরিকল্পনা স¤পর্কে সংশি¬ষ্টখাতের অনেকেই গভীর অন্ধকারে। এইক্ষেত্রে দেশটির শীর্ষ পুঁজিবাজার ব্যবস্থাপক কো¤পানি তাওরাস সিক্যিউরিটিজের মুখ্য বিশেষজ্ঞ মুস্তফা মুস্তানসির বলেন, আমরা কেউই এই ব্যাপারে কিছুই জানিনা। এমনকি শীর্ষ বাণিজ্যিক ব্যাংকাররাও না। কিভাবে সরকার এই অর্থ উত্তোলন করবে, কতদিনের মধ্যে করবে সেই ব্যাপারে আমরা স¤পূর্ণ অন্ধকারে। বিষয়টি নিশ্চিত করতে সরকারের প্রতি একটি উন্মুক্ত রোডম্যাপ ঘোষণার আহ্বান জানান তিনি।
জুলাইয়ের ১ তারিখ থেকেই সরকার এই অর্থ উত্তোলনের কার্যক্রম শুরু করার ইঙ্গিত বাজেট অধিবেশনেই দিয়েছে বলে নিশ্চিত তিনি। তবে এই বিষয়ে সরকার রাতারাতি বিপুল পরিমাণ অর্থ সরিয়ে তারল্য সংকট সৃষ্টি করতে চাইবেনা বলেও মনে করেন মুস্তফা মুস্তানসির।
আপনার মতামত লিখুন :