শিরোনাম
◈ সাতক্ষীরায় এমপি দোলনের গাড়িতে হামলা ◈ চুয়াডাঙ্গার পরিস্থিতি এখন মরুভূমির মতো, তাপমাত্রা ৪১ দশমিক  ৫ ডিগ্রি ◈ ফরিদপুরে পঞ্চপল্লীতে গণপিটুনিতে ২ ভাই নিহতের ঘটনায় গ্রেপ্তার ১ ◈ মিয়ানমারের ২৮৫ জন সেনা ফেরত যাবে, ফিরবে ১৫০ জন বাংলাদেশি: পররাষ্ট্রমন্ত্রী ◈ ভারতে লোকসভা নির্বাচনের প্রথম দফায় ভোট পড়েছে ৫৯.৭ শতাংশ  ◈ ভবিষ্যৎ বাংলাদেশ গড়ার কাজ শুরু করেছেন প্রধানমন্ত্রী: ওয়াশিংটনে অর্থমন্ত্রী ◈ দাম বেড়েছে আলু, ডিম, আদা ও রসুনের, কমেছে মুরগির  ◈ প্রার্থী নির্যাতনের বিষয়ে পুলিশ ব্যবস্থা নেবে, হস্তক্ষেপ করবো না: পলক ◈ ২০২৫ সালের মধ্যে ৪৮টি কূপ খনন শেষ করতে চায় পেট্রোবাংলা ◈ বিনা কারণে কারাগার এখন বিএনপির নেতাকর্মীদের স্থায়ী ঠিকানা: রিজভী

প্রকাশিত : ১৮ জুন, ২০১৯, ০৮:৩৩ সকাল
আপডেট : ১৮ জুন, ২০১৯, ০৮:৩৩ সকাল

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

সাড়া ফেলেছে দুই তরুণ চাষির কীটনাশকমুক্ত আম

খোকন আহম্মেদ হীরা, বরিশাল: মাত্রাতিরিক্ত কীটনাশক ও রাসায়নিক সার ব্যবহারের কারণে ফল-মূল, শাক-সবজি নিয়ে মানুষ যখন আতঙ্কে, ঠিক তখনই কীটনাশকমুক্ত আম উৎপাদন করে ব্যাপক সাড়া ফেলেছেন শ্যামল ব্যানার্জি ও আবু বকর নামের দুই সৌখিন তরুণ চাষি।

বরিশালের উজিরপুর উপজেলার শিকারপুর গ্রামের শ্যামল ব্যানার্জি ও গৌরনদী উপজেলার হাপানিয়া গ্রামের আবু বকর এবার আশাব্যঞ্জক ফলনও পেয়েছেন। তাদের বাগানের মিষ্টি ও সুস্বাদু বিভিন্ন প্রজাতির রসালো আম ক্রয় করতে প্রতিদিন বিভিন্ন শ্রেণি ও পেশার মানুষ ভিড় করছেন আম বাগানে। বেশির ভাগ আমই বিক্রি হয়ে যাচ্ছে বাগান থেকে।

জানা গেছে, শিকারপুর গ্রামের মৃত দিপক কুমার ব্যানার্জির পুত্র গুরুদাস ওরফে শ্যামল ব্যানার্জি এসএসসি পাস করে সংসারের হাল ধরতে বিভিন্ন ব্যবসায় নেমেছিলেন। প্রতিবারই তাকে লোকসানের মুখে পড়তে হয়েছে। শেষে ২০০৪ সালে সামান্য পুঁজি নিয়ে বাবার এক একর জমিতে মাছের ঘের তৈরি করেন। ঘেরের চারপাশে ৫৫টি বিভিন্ন প্রজাতির আমের চারা রোপণ করেন। ঘেরের পানি শুকিয়ে গেলে ধান চাষ এবং গাছের ফাঁকে শাক ও সবজির চাষ করেন। রাসায়নিক সারের পরিবর্তে জৈব সার এবং রোগ-বালাই দমনের জন্য ফেরমেন ফাঁদ ব্যবহার করেন। বর্তমানে উৎপাদিত ফসল তার পরিবারের চাহিদা মিটিয়ে বাজারে বিক্রি করে খরচের চেয়ে অধিক মুনাফা অর্জন করছেন।

শ্যামল ব্যানার্জি জানান, কৃষি কাজ তার জন্য আশীর্বাদ হয়ে এসেছে। কৃষি কাজ করে এখন তিনি পুরোপুরি সাবলম্বী। তিনি জমিতে কীটনাশক ও রাসায়নিক সার ব্যবহার না করেও অন্যান্য চাষিদের চেয়ে বেশি ফলন পাচ্ছেন। ২০০৯ সাল থেকে তার বাগানে আমের ফলন শুরু হয়। তার বাগানের আম মিষ্টি, সুস্বাদু ও রসালো হওয়ায় এলাকায় ব্যাপক কদর রয়েছে। তিনি আরও জানান, বর্তমানে তার বাগানে বারী আম-৫, বারী আম-৪, হারিভাঙা, গোপালভোগ, ফজলি, ব্যানানা ম্যাঙ্গো, কিউজাই ও বারমাস প্রজাতির আম রয়েছে।

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. জাকির হোসেন তালুকদার বলেন, আমিও তার বাগান থেকে কয়েকবার আম ক্রয় করেছি। কীটনাশক ও রাসায়নিক সার ব্যবহার না করায় তার আমে স্বাস্থ্যের জন্য কোনো ঝুঁকি নেই।

জেলার গৌরনদী উপজেলার মাহিলাড়া ইউনিয়নের হাপানিয়া গ্রামের এইচএসসি পাশ করা যুবক আবু বকর বলেন, বাবা আলী মোহাম্মদ হাওলাদারের পরামর্শে পাঁচ বছর আগে নিজেদের এক একর জমিতে বিভিন্ন প্রজাতির আম গাছ রোপন করি। প্রথমে জমিতে বেড করে দেশের বিভিন্নস্থান থেকে উন্নত জাতের ২৪টি আম গাছ সংগ্রহ করে রোপন করা হয়। পরবর্তীতে পর্যায়ক্রমে ১২৫টি আম গাছ রোপণ করা হয়েছে। মাত্র এক বছরের ব্যবধানে তিনি তার বাগান থেকে ফলন পেতে শুরু করেছেন। এবছর তার বাগানে আমরূপালি, মল্লিকা, হিমসাগর, ডগমাই, পালমাই, টিউজাই, খীশাপাত, সুরমা ফজলি প্রজাতির ৯২টি আম গাছে বাম্পার ফলন হয়েছে। তিনি আরও জানান, গতবছর তার বাগানের ৫০টি আম গাছ থেকে প্রায় ৭০ হাজার টাকার আম বিক্রি করেছেন। চলতি মৌসুমে তা কয়েকগুণ বৃদ্ধি পাবে। রাসায়নিক ও ফরমালিন মুক্ত আম ক্রয়ের জন্য ক্রেতারা আবু বকরের বাগানে প্রতিনিয়ত ভীড় করছেন।

জেলার একমাত্র বৃক্ষপ্রেমি দুইবারের শ্রেষ্ঠপদকপ্রাপ্ত মাহিলাড়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান সৈকত গুহ পিকলু জানান, শুধু চাকরি বা ব্যবসা করেই যে স্বাবলম্বী হওয়া যায় তা ঠিক নয়; যার প্রমাণ দিয়েছেন আবু বকর।
সম্পাদনা : মিঠুন রাকসাম

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়