খালিদ আহমেদ : শনিবার বিএনপির স্থায়ী কমিটির বৈঠকে বেশ উত্তেজনা ছড়ান সিনিয়র নেতারা, যারা এমপিদের শপথ নেয়াসহ বিভিন্ন সিদ্ধান্তে খুব বিক্ষুব্ধ। তারা মহাসচিবকে প্রশ্ন করেছেন, আপনি কার ব্যাগ ক্যারি করছেন? এ মন্তব্যের পর বিএনপি মহাসচিব ক্ষিপ্ত হয়ে বলেন, এভাবে কাজ করা সম্ভব নয়।
বিএনপির চার এমপির শপথ নেয়া, সংরক্ষিত আসনে প্রার্থী দেয়া, বগুড়া-৬ উপনির্বাচনে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে প্রার্থী করার মনোনয়নপত্র সংগ্রহ এবং ওই আসনে জিএম সিরাজকে মনোনয়ন দেয়া নিয়ে উত্তপ্ত পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়। দলীয় ফোরামে আলোচনা না করে কীভাবে এসব সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে, তা নিয়ে নিজেদের মধ্যে বাদানুবাদের ঘটনা ঘটে।
গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত বৈঠকে মহাসচিবের সঙ্গে দলের একজন প্রবীণ নেতার বাদানুবাদের সময় ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান স্কাইপে উপস্থিত থাকলেও কোনো মন্তব্য করেননি।
বৈঠক সূত্র জানিয়েছে, বিকেল সাড়ে ৫টায় বৈঠকের শুরুতে স্থায়ী কমিটির শীর্ষ দুই নেতা মির্জা ফখরুল ইসলামের কাছে দলের চার এমপির শপথ নেয়ার বিষয়ে ব্যাখ্যা জানতে চান। তারা বলেন, শপথ নেওয়ার আগের দিন সর্বশেষ বৈঠকেও সংসদে না যাওয়ার বিষয়ে ঐকমত্য ছিলেন। কিন্তু পরের দিন তিনি কাউকে কিছু না জানিয়ে দলীয় সিদ্ধান্তে সংসদে যাওয়ার ঘোষণা দেন। স্থায়ী কমিটির কেউ কিছু জানে না। আপনি (মহাসচিব) বললেন, শপথ নেওয়া দলের সিদ্ধান্ত। নিজে শপথ নিলেন না। আবার বললেন, আগের নেওয়া সিদ্ধান্ত ভুল ছিল। এভাবে একেক সময়ে একেক বক্তব্য দিয়ে স্থায়ী কমিটিকে অপমান করা হয়েছে।
বৈঠকে শীর্ষ নেতারা ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, সংরক্ষিত আসনে মনোনয়ন দেওয়ার ক্ষেত্রেও তাদের কিছু জানানো হয়নি। বগুড়া-৬ আসনে উপনির্বাচনে প্রার্থী তালিকায় দলের প্রধান কারাবন্দি খালেদা জিয়াকে রাখার বিষয়েও তাদের অন্ধকারে রাখা হয়। এত বড় গুরুত্বপূর্ণ ইস্যুতে সিদ্ধান্ত নেয়া এবং মনোনয়নপত্রে তার (খালেদা জিয়ার) স্বাক্ষরের জন্য বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে (বিএসএমএমইউ) মনোনয়নপত্র পাঠানোর ঘটনায় বিস্ময় প্রকাশ করেন নেতারা। বগুড়া-৬ আসনের নির্বাচনে দলীয় প্রার্থী হিসেবে জিএম সিরাজকে মনোনয়ন দেওয়ার বিষয়েও ক্ষোভ প্রকাশ করে নেতারা বলেন, জিএম সিরাজ ওই আসনের নেতা না হওয়ার পরও তিনি কীভাবে মনোনয়ন পেলেন?
সূত্র জানায়, দলের সিনিয়র নেতাদের এমন প্রশ্নবাণে জর্জরিত বিএনপি মহাসচিব তাদের জানান, তিনি যা কিছু করেছেন তা দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের নির্দেশনায় করেছেন। নেতারা বলেন, দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান সিদ্ধান্ত নিতেই পারেন। তবে তাকে গাইড করতে মাঠের প্রকৃত চিত্র জানানোর জন্য মহাসচিবকে মূল ভূমিকা পালন করতে হয়। এ জন্য দলের সিনিয়র নেতাদের সঙ্গে তার (বিএনপি মহাসচিব) শলাপরামর্শ করার দরকার ছিলো।
আপনার মতামত লিখুন :