তানজিনা তানিন : মেহেদী বখত একজন বাংলাদেশি সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ার। ২০১২ সালে প্রথম বাংলাদেশি হিসেবে ফেসবুকে যোগদান করেন। ২০১৫ সাল পর্যন্ত ৩ বছর কাজ করছেন। বর্তমানে "ভ্যারিফ্লো" নামক একটি প্রযুক্তি সেবাদাতা প্রতিষ্ঠানে সিনিয়র সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ার হিসেবে কর্মরত আছেন। ভার্সিটিবয়েজডটনেট
তার জন্ম ঢাকায়। বাবা জায়েদ বখত, খ্যাতনামা অর্থনীতিবিদ এবং মা হালিমা জায়েদ গৃহিণী। ছোটবেলা থেকেই পড়াশোনায় কৃতিত্বের প্রমাণ রেখেছেন। মীর্জাপুর ক্যাডেট কলেজ থেকে মাধ্যমিক পরীক্ষায় সম্মিলিত মেধা তালিকায় ১১তম এবং উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষায় তৃতীয় হন তিনি । এরপর বুয়েটে কম্পিউটার কৌশল বিভাগে পড়াশোনা শেষ করেন।
মেহেদী বখত বুয়েটে পড়ার সময় দুইবার এসিএম আন্তর্জাতিক কলেজিয়েট প্রোগ্রামিং প্রতিযোগিতার (আইসিপিসি) চূড়ান্ত পর্বে অংশ নিয়েছিলেন। বুয়েট থেকে স্নাতক হয়ে যুক্তরাষ্ট্রের ইউনিভার্সিটি অব ইলিনয় অ্যাট আরবানা-ক্যাম্পিংয়ে (ইউআইইউসি) পড়তে যান। এখান থেকেই নেটওয়ার্কিংয়ে পিএইচডি ডিগ্রি অর্জন করেন। চাকরির জন্য গুগল, অ্যামাজন, লিংকড-ইন এর মতো প্রতিষ্ঠানে চেষ্টা করেন তিনি।
হঠাৎ স্বপ্নপূরণের বার্তা নিয়ে আসে ফেসবুক। ফেসবুক কর্তৃপক্ষ তার সাথে যোগাযোগ করে। জানতে চাওয়া হয়, তিনি ফেসবুকে কাজ করতে আগ্রহী কি না? তিনি রীতিমত অবাক হয়ে যান। একাধিক পর্বে ফোন-সাক্ষাৎকার দিয়ে শেষে “অনসাইট ইন্টারভিউ” দেন তিনি। দুই সপ্তাহের মধ্যে মেহেদীর ডাক এলো ফেসবুক থেকে। সফটওয়্যার প্রকৌশলী হিসেবে যোগ দিলেন ফেসবুকের ‘মেসেজেস’ দলে। ‘চ্যাট প্রোডাক্ট ইঞ্জিনিয়ারিং’ নামেও পরিচিত এ বিভাগ। ফেসবুকের মানবসম্পদ বিভাগের শীর্ষ ব্যক্তিরা প্রোগ্রামিং প্রতিযোগিতার আন্তর্জাতিক পর্ব থেকে সন্ধান পান মেহেদীর । ২০০৩ সালে একটি আন্তর্জাতিক প্রোগ্রামিং প্রতিযোগিতায় ওয়ার্ল্ড ফাইনালে গিয়েছিলেন তিনি।
মেহেদী বলেন, ‘ফেসবুকের পরে আমার যেসব প্রতিষ্ঠানের প্রতি আগ্রহ ছিলো, সেগুলোর প্রায় সবগুলো থেকেই ভালো পদে চাকরি করার সুযোগ পেয়েছিলাম।’
মেহেদী আরও বলেন, ‘ফেসবুক, গুগল, টুইটার, আমাজনের মতো প্রতিষ্ঠানেকে কোন প্রোগ্রামিং ভাষায় দক্ষ, সেটি বড় কথা নয়। বরং প্রাথমিক সমস্যাগুলো সমাধানের যোগ্যতা কার কেমন রয়েছে তার ওপর নির্ভর করে নিয়োগ পাওয়ার বিষয়।‘
এসব ক্ষেত্রে নতুন যারা আসতে আগ্রহী, তাদের গণিত অলিম্পিয়াডের মতো প্রতিযোগিতায় অংশ নেওয়া উচিত। এ ছাড়া স্নাতক পর্যায়ের শিক্ষার্থীদের দরকার, যতটা সম্ভব প্রোগ্রামিং প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করা।
১৩ ফেব্রুয়ারী ২০১২ থেকে ০৮ মে ২০১৫ পর্যন্ত প্রায় তিন বছর 'ফেসবুকে' মেসেজেস টিমে 'সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ার' হিসেবে কর্মরত ছিলেন মেহেদী। ছিলেন। ভবিষ্যতে প্রযুক্তি খাতে ব্যবসায় উদ্যোগ শুরু করতে চান মেহেদী বখত। সম্পাদনা : সালেহ্ বিপ্লব
আপনার মতামত লিখুন :