ফরহাদ টিটু : একটু বেশিই মজা নিয়ে ফেলেছেন উনি প্রবাসীদের নিয়ে। একজন এতো নামি মানুষের এতো ভালোবাসা পাওয়া মানুষ কীভাবে এভাবে জনসমক্ষে মজা করতে পারেন নিজের দেশের লেখাপড়া কম জানা, খেটে খাওয়া মানুষদের নিয়ে। ইউরোপ-উত্তর আমেরিকা থেকে মিডলইস্ট ট্রানজিট করে দেশে ফেরার পথে এমন অভিজ্ঞতা কয়েকবার আমার আছে। অধ্যাপক স্যারের মতো আমিও অনেক প্রবাসীর ডিসএম্বারকেশন/অবতরণ কার্ড ফিলআপ করে দিয়েছি বিমানে বসে। একজনকে সাহায্য করতে গিয়ে অনেকজনের হাত এগিয়ে এসেছে আমার দিকে। তাদের মুখে ফুটে উঠেছে বিনয় আর লাজুক ভাব, চোখে বিশাল শ্রদ্ধা (আমার প্রতি)। বিমান অবতরণের সঙ্গে সঙ্গে দেখেছি কে কার আগে ওভারহেড বীন থেকে লাগেজ/ব্যাগ নেবেন তার প্রতিযোগিতা । মাথার উপর মাথা উঠিয়ে বিমানের জানালা দিয়ে দেশ দেখার এক প্রচ- উন্মাদনা। হবেই তো। এই মানুষগুলো তো আলোকিত স্যারের মতো যখন-তখন বিমানে চড়ার সুযোগ পান না। অতি সম্মানিত অতিথি হয়ে বিদেশ ভ্রমণে যাওয়ার স্বপ্নও দেখতে পারেন না ।
মধ্যপ্রাচ্যের বিভিন্ন দেশে হাড়ভাঙা পরিশ্রম করে, কখনো মালিক পক্ষের হাতে নির্যাতিত, বঞ্চিত হয়ে দেশে ফিরতে থাকা এই গ্রাম্য, পুঁথিগত শিক্ষায় কম শিক্ষিত মানুষগুলো দেশে ফেরেন দুই, তিন বা চার বছরে একবার। তাদের সেই ফেরা স্যারের শ্রেণির মহাসম্মানিত, বিত্তবান মানুষদের মতো খুব স্বাভাবিক ব্যাপার নয়। তাদের ফেরা ‘জেলজীবন’ থেকে এক ধরনের সাময়িক মুক্তি, মায়ের কোলে ফিরে যাওয়া । বিমান অবতরণের সময় তো তারা পাগল হবেনই দেশ দেশ করে। এ নিয়ে হাসি তামাশার কি হলো।
উপরে মিডলইস্ট থেকে বাংলাদেশের ফ্লাইটে আমার যে অভিজ্ঞতার কথা আমি বলেছি সে অভিজ্ঞতা বহু বাংলাদেশির আছে যারা আমারই মতো সহযাত্রীদের সহযোগিতা করেছেন তাদের অবতরণপত্র পূরণ করতে। ফেসবুক থেকে
আপনার মতামত লিখুন :