শিরোনাম
◈ ঝালকাঠিতে ট্রাকচাপায় নিহতদের ৬ জন একই পরিবারের ◈ গাজীপুরের টঙ্গি বাজারে আলুর গুদামে আগুন ◈ রাজনৈতিক বিশ্লেষক মনোয়ারুল হক মারা গেছেন ◈ ভারতের পররাষ্ট্র সচিব শনিবার ঢাকা আসছেন ◈ দুই এক পশলা বৃষ্টি হলেও তাপদাহ আরো তীব্র হতে পারে  ◈ এথেন্স সম্মেলন: দায়িত্বশীল ও টেকসই সমুদ্র ব্যবস্থাপনায় সম্মিলিত প্রয়াসের আহ্বান পররাষ্ট্রমন্ত্রীর ◈ কেএনএফ চাইলে আবারও আলোচনায় বসার সুযোগ দেওয়া হবে: র‌্যাবের ডিজি ◈ ওবায়দুল কাদেরের হৃদয় দুর্বল, তাই বেশি অবান্তর কথা বলেন: রিজভী ◈ মধ্যপ্রাচ্যের পরিস্থিতি বিবেচনায় প্রস্তুতি নেওয়ার নির্দেশ দিলেন প্রধানমন্ত্রী ◈ বাংলাদেশ সংকট থেকে ঘুরে দাঁড়াতে শুরু করেছে: অর্থমন্ত্রী

প্রকাশিত : ১৪ জুন, ২০১৯, ০৬:১২ সকাল
আপডেট : ১৪ জুন, ২০১৯, ০৬:১২ সকাল

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

‘বাজেট কিয়ের, আমরা পেডের খবর রাখি’

ডেস্ক রিপোর্ট  : অসহনীয় খরতাপে ঘামে জবজবে ভেজা শরীরে রিকশায় বসে আছেন মিলন মিয়া। গামছা দিয়ে কপালের ঘাম মোছার সময়ই বাজেটের বিষয়ে প্রশ্ন করতেই খানিক ‘অগ্নিশর্মা’ হয়ে পাল্টা প্রশ্ন করে বসলেন তিনি। তার ভাষ্য, ‘কিয়ের বাজেট? বাজেটের খবর রাইখ্যা (রেখে) আমরা কী করমু?’

কথা বাড়াতেই কাহিল শরীরে আবারো উচ্চকণ্ঠ সদর উপজেলার চর ভবানীপুর এলাকার এ রিকশাচালকের।

‘আমগর (আমাদের) কাছে পেটের খবর লইতে আইয়েন। বাজেট দিইয়া কি করমু? আমরা রাখি পেডের খবর! হারাদিন (সারাদিন) রিকশা চালাইয়া (চালিয়ে) যা কামামু তা দিয়া (দিয়ে) চাইল (চাল), ডাল, তেল, নুন কিইন্যা (কিনে) বাড়ি যামু (যাবো)। বউ রানবো (স্ত্রী রান্না করবে), সন্তানগরে (সন্তানদের) নিয়া খামু (খাবো),’ এক নাগাড়ে বলে গেলেন বছর পয়ত্রিশের দিনমজুর মিলন।

বৃহস্পতিবার (১৩ জুন) রাত সোয়া ৮ টার দিকে নগরের সি কে ঘোষ রোড এলাকার সারিন্দা রেস্তোরাঁর সামনে দাঁড়িয়ে কথা হয় শ্রমজীবী এই যুবকের সঙ্গে। এ সময় তার মতো আরও অনেকেই জড়ো হন সেখানে।

শ্রমজীবী এসব মানুষের মাঝে বাজেট নিয়ে কোনো আগ্রহ-ই লক্ষ্য করা যায়নি।

দেশের ইতিহাসে সবচেয়ে বড় ৫ লাখ ২৩ হাজার ১৯০ কোটি টাকার বাজেট নিয়ে তাদের কোনো ভাবনা নেই, নেই মন্তব্যও। তবে বাজেটে শ্রমজীবী জনগোষ্ঠীর স্বার্থ রক্ষার বিষয়ে সুষ্পষ্ট নির্দেশনার থাকার প্রত্যাশার কথা জানিয়েছেন খেটে খাওয়া মানুষদের কেউ কেউ।

বিশেষ করে নিত্যপণ্যের দাম নাগালের মধ্যে থাকার বিষয়টি ছিল সবার মুখেই।

নগরের গাঙ্গিনারপাড় মোড় এলাকার চায়ের দোকানি মো. ইনসানের কাছে জানতে চাওয়া হয় বাজেটে কী কী পণ্যের দাম বেড়েছে এবং কোন কোন পণ্যের দাম কমেছে- তা জানেন কিনা?

প্রশ্ন শুনেই ছানাবড়া চোখে চল্লিশোর্ধ্ব ইনসান আঞ্চলিক ভাষায় বললেন, ‘প্রতিবারই তো বাজেট হয়। আমগর (আমাদের) তো আর কোনো উন্নতি হয় না। সেই চায়ের দোকান করেই সংসার চালাইতে (চালাতে) হয়। তয় (তবে) এইবার বাজেট অইয়া (হয়ে) থাকলে যেন গরিব না মরে, এইড্যাই (এটিই) চাই আমরা।’

রীতি অনুযায়ী, প্রতি বিদায়ী অর্থবছরের শেষ দিকে অর্থাৎ জুন মাসে পরবর্র্তী অর্বথবছরের বাজেট সংসদে পেশ করেন অর্থমন্ত্রী। এ নিয়ে দীর্ঘ সময় বক্তব্য দেন মন্ত্রী। যা টেলিভিশনে প্রচার করা হয়।

তবে এবারই প্রথম অর্থমন্ত্রীর হয়ে প্রধানমন্ত্রী বক্তব্য রেখেছেন- এমন তথ্য পেয়েছেন নগরের দুর্গাবাড়ী রোডের ভ্রাম্যমাণ ফল বিক্রেতা জসিম উদ্দিন।

পাশের একটি ওষুধের দোকানে টেলিভিশনে বাজেট অধিবেশন এবং প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্যকে ঘিরে কৌতূহলী হয়ে মিনিট দশেক এ দৃশ্য দেখেছেন তিনি।

সেই তথ্য উপস্থাপন করে জসিম বলেন, ‘বাজেট লইয়া (নিয়ে) কোনদিনই আমগর (আমাদের) মাথাবেদনা (মাথাব্যাথা) আছিল (ছিল) না। এইবারই প্রথম টিভিতে বাজেট দেখলাম। আমরা আরামে (স্বাচ্ছন্দ্যে) থাকবার (থাকতে) চাই। এইরম (এরকম) বাজেট অইলেই (হলেই) আমগর (আমাদের) লেইগ্যা (জন্য) মঙ্গল।’

জসিমের সঙ্গে আলাপের সময়ই পাশের আরেক ভ্রাম্যমাণ ফল বিক্রেতা হাঁক দিচ্ছিলেন ‘ল্যাংড়া আম ৬০ টাকা।’ তার সঙ্গে কথা বলার সময়েই জসিমের কথারই প্রতিধ্বনি শোনা গেলো।

তিনি বলছিলেন, ‘হুনছি বাজেটের পর সব জিনিসের দাম বাড়ে। এইবার হেইড্যা (সেটি) না অইলেই (হলেই) ভালা (ভালো)।’

এই ফলের দোকানেই আবুল কাশেম নামে অবসরপ্রাপ্ত এক সরকারি চাকুরের সঙ্গে আলাপ হলো। বিকেল থেকে টিভি সেটের সামনে বসে বাজেটের খবরাখবর রাখছিলেন তিনি।

তবে তার মতো মধ্যবিত্ত শ্রেণীর মানুষের জন্য বাজেটে সুখবর নেই বলেই মন্তব্য করেন কাশেম।

প্রথম দিকে কথা বলতে না চাইলেও পরে মুখ খুলেন তিনি। বলেন, ‘দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতির জীবনে প্রতিনিয়তই আমাদের সংসার চালাতে হিমশিম খেতে হয়। একদল বাজেটের পক্ষে নিজেদের সুর চড়া করেন।’

তার ভাষ্য, আরেক পক্ষ আবার বাজেট নিয়ে তেলে-বেগুনে জ্বলে ওঠেন। আসলে পুরো বিষয়টিই রাজনীতি। আমরা চাই নিম্ন ও মধ্যবিত্ত শ্রেণীর স্বার্থ রক্ষা হবে বাজেটে, এটাই আমাদের প্রত্যাশা।’

উৎসঃ বাংলানিউজ

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়