মো. মামুন, দৌলতখান ভোলা প্রতিনিধি: ভাগ্যের কি নির্মম পরিহাস দৃষ্টিশক্তি হারিয়ে অন্ধত্বের নিদারুণ কষ্টে বন্দী ভোলার দৌলতখান উপজেলার চরপাতা ইউনিয়নের ৯ নং ওয়ার্ডের দেলোয়ার হোসেন (৬০) সহ তার পরিবারের ৩ সদস্য। বর্তমানে দেলোয়ার হোসেন সহ তার স্ত্রী রাহিমা,ছেলে ইব্রাহীম, মেয়ে সালমা চিরতরে দৃষ্টিশক্তি হারিয়ে অন্ধত্বে বন্দী হয়ে আয় উপার্জন না থাকায় ভিক্ষা করে জীবনযুদ্ধে টিকে রয়েছে। সালমা একটি প্রতিবন্ধী ভাতা পেলেও পরিবারের বাকি সদস্যরা পাননি কোন সরকারি-বেসরকারি সহযোগীতা। ফলে মানবেতর জীবন কাটাচ্ছে পরিবারটি। দেলোয়ার হোসেনের পরিবারটিতে এখন কষ্ট আর দুঃখ যেন নিত্য-দিনের সঙ্গী।
বিয়ে করে দাম্পত্যজীবন ভালোই কাটছিল দেলোয়ারের। তারপর হটাৎ স্ত্রী মারা যাওয়ার পর ২য় বিয়ে করে অন্ধ রাহিমাকে। রাহিমার ঘরে চার সন্তান জম্ম নেয়। তার মধ্যে ছেলে ইব্রাহীম ১২ বছর বয়সে ও মেয়ে সালমা ১০ বছর বয়সে মায়ের মত দৃষ্টি প্রতিবন্ধীর শিকার হয়ে পরে। অপর ছেলে জুয়েল (১৩), ও মেয়ে রাবেয়া (১০) চোখের সমস্যায় ভুগছে। পরিবারের দুশ্চিন্তা তারাও হয়তো দৃষ্টি প্রতিবন্ধীকতার দিকে আগাচ্ছে। অর্থনৈতিক সমস্যার কারণে পরিবারটি তাদের চিকিৎসার ব্যবস্থা করতে পারছে না।
গেল দুই বছর পূর্বে দেলোয়ারও বার্ধক্য জনিত কারণে দৃষ্টিশক্তি হারিয়ে ফেলেন । বর্তমানে কোনো কাজ কর্ম করতে না পেরে ভিক্ষা করেই জীবন চালাচ্ছে দেলোয়ার হোসেনের অন্ধ মেয়ে সালমা ও ছেলে ইব্রাহীম। শারীরিক অসুস্থতার কারণে দেলোয়ার ও রাহিমা বাসায় বন্ধী জীবন কাটাচ্ছে। দেলোয়ার হোসেন বলেন, অর্থ সংকট মাথায় নিয়ে প্রতিদিন ভোরে আমাদের ঘুম ভাঙ্গে। পরিবারে উপার্জন করার মত কেউ না থাকায় মেয়ে সালমা আর ছেলে ইব্রাহীম ভিক্ষা করে সংসার চালাচ্ছে। যেদিন ভিক্ষা করে টাকা পায় সেদিন দুমুঠো খেতে পারি। তা নাহলে অনাহারে আমাদের দিন কাটে। সরকারি ভাবেও আমারা তেমন কোন সাহায্য সহযোগীতা পাচ্ছিনা। এমনকি ভিক্ষুক তালিকাতেও আমাদের পরিবারের কারো নাম দেওয়া হয়নি। তাই আমরা সরকার ও সমাজের বিত্তবান ব্যক্তিদের সুদৃষ্টি কামনা করছি। অন্ধ সালমার বিবাহ দেওয়া নিয়েও চিন্তায় কাতর তিনি।
সংশ্লিষ্ট ইউপি সদস্য আজিজ বলেন, সরকারি নিয়ম অনুযায়ী একই পরিবারের একাধিক লোক দৃষ্টি প্রতিবন্ধি থাকলেও ১ জনই দৃষ্টি প্রতিবন্ধী ভাতা পাবে সেই নিয়মেই আমরা উক্ত পরিবারের সালমাকে ভাতা প্রদান করেছি।
আপনার মতামত লিখুন :