জহিরুল ইসলাম শিবলু,লক্ষ্মীপুর প্রতিনিধি: ইসলাম ধর্মের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব পবিত্র ঈদ-উল-ফিতর। আর এই বড় ধর্মীয় উৎসবের ছুটিতে মুসলমানরা ছাড়াও সকল ধর্মের মানুষ ছুটে আসেন গ্রামের বাড়িতে। ঈদ-উল-ফিতর শেষ হয়েছে এক সপ্তাহ হয়েছে। ঈদের এক সপ্তাহ পরেও লক্ষ্মীপুরে বাসের বাড়তি ভাড়া রয়ে গেছে। লক্ষ্মীপুর থেকে ঈদ শেষে কর্মস্থলে ফেরার পথে বাসের যাত্রীদের কাছ থেকে বাড়তি ভাড়া আদায় করছেন পরিবহন শ্রমিকরা। আর এ বাস ভাড়া বৃদ্ধির খপ্পরে দিশেহারা হয়ে পড়েছেন যাত্রীরা। ঈদে যাতায়াতে এই লাগামহীন বাস ভাড়া বৃদ্ধিতে চরম বিড়ম্বনায় পড়েছেন ঢাকা-চট্টগ্রামে বসবাসরত জেলার বিভিন্ন শ্রেণী-পেশার মানুষ। তারা ভাড়া বৃদ্ধির প্রবণতা রোধে প্রশাসনের নজর দারির দাবি জানিয়েছেন।
তবে পরিবহন শ্রমিকদের দাবি, বাস ভাড়া কিছুটা বৃদ্ধি করা হলেও যাত্রীদের যাতায়াতের সুবিধায় চলাচল করছে পর্যাপ্ত বাস সার্ভিস। এ ছাড়াও লক্ষ্মীপুর থেকে ঢাকা-চট্টগ্রামগামী যাত্রীরা ভাড়া কিছুটা বেশি দিলেও ঢাকা-চট্টগ্রাম থেকে ওই বাস গুলো লক্ষ্মীপুরে ফিরছে সম্পূর্ণ যাত্রীশূন্য হয়ে।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, লক্ষ্মীপুর থেকে ঢাকা-চট্টগ্রাম চলাচলকারী সব বাসে যাত্রীদের কাছ থেকে অতিরিক্ত ভাড়া আদায় করছে। এর মধ্যে ইকোনো বাস সার্ভিসের নির্ধারিত ভাড়া ৪০০ টাকা এখন নেওয়া হচ্ছে ৫৫০ টাকা, ঢাকা এক্সপ্রেস বাস সার্ভিসের নির্ধারিত ভাড়া ৪০০ টাকা এখন নেওয়া হচ্ছে ৫৫০ টাকা, জোনাকী বাস সার্ভিসের নির্ধারিত ভাড়া ৩০০ টাকা এখন নেওয়া হচ্ছে ৪৫০ টাকা, মিয়ামি এসি বাস সার্ভিসের নির্ধারিত ভাড়া ৫০০ টাকা এখন নেওয়া হচ্ছে ৮৫০ টাকা, রয়েল এসি বাস সার্ভিসের নির্ধারিত ভাড়া ৫০০ টাকা এখন নেওয়া হচ্ছে ৮৫০ টাকা করে। চট্টগ্রামগামী শাহী সার্ভিসের নির্ধারিত ভাড়া ৩০০ টাকা এখন নেওয়া হচ্ছে ৪৫০ টাকা, জোনাকী সার্ভিসের নির্ধারিত ভাড়া ৩০০ টাকা এখন নেওয়া হচ্ছে ৪৫০ টাকা হারে। এছাড়াও লক্ষ্মীপুর থেকে কুমিল্লা ও ফেনীসহ জেলার প্রায় সকল রোডে অতিরিক্ত ভাড়া আদায় করছে পরিবহন শ্রমিকরা।
ভুক্তভোগী যাত্রীরা অভিযোগ করে বলেন, ঈদে এভাবে বাস ভাড়া বৃদ্ধি ফেলে চরম হয়রানির শিকার হন তারা। ফেরার পথে বেশি ভাড়া নেয়াটা দুঃখজনক। প্রতিবছর এইভাবে বাস মালিকরা ভাড়া বাড়ায় আমরা অসহায় যাত্রীরা বাধ্য হয়েই তা দিতে হয়। এর কি কোন প্রতিকার নেই?
ইকোনো বাসের যাত্রী ব্যবসায়ী পারভেজ অভিযোগ করে বলেন, ইকোনো বাসে করে আমি প্রতি-নিয়ত যাতায়াত করি, অন্য সময় বাস ভাড়া ছিল ৪০০ টাকা। কিন্তু ঈদে তারা আদায় করছে ৫৫০ টাকা করে। এই অস্বাভাবিক ভাড়া বৃদ্ধিতে নেই কোনো আইনগত ব্যবস্থা।
রয়েল কোচের যাত্রী শিক্ষার্থী এনামুল হক বলেন, ঈদে আসা-যাওয়া উভয় সময়ই তারা আমাদের কাছ থেকে অতিরিক্ত ভাড়া আদায় করছে। নির্ধারিত বাস ভাড়ার অতিরিক্ত টাকা দেয়াটা কষ্টকর। এ পরিস্থিতি রোধে প্রশাসনর কঠোর হস্তক্ষেপ কামনা করছি।
লক্ষ্মীপুর জেলা বাস-মিনিবাস মালিক সমিতির সভাপতি নূরনবী চৌধুরী জানান, ভাড়া বৃদ্ধির বিষয়িটি তার জানা নেই। সরকার ভাড়া বৃদ্ধির বিষয়টি নিষেধ করেছেন। তাদের পক্ষে থেকেও ভাড়া বৃদ্ধি না করার জন্য নিষেধ করা হয়েছে।
লক্ষ্মীপুর জেলা প্রশাসক অঞ্জন চন্দ্র পাল বলেন, ঈদে ভাড়া বৃদ্ধি না করার জন্য মালিক ও শ্রমিক সমিতিকে নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। এর পরেও যদি ভাড়া বৃদ্ধির মাধ্যমে যাত্রী হয়রানি করা হয় তবে এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
আপনার মতামত লিখুন :