শিরোনাম
◈ চট্টগ্রামে জুতার কারখানায় আগুন, নিয়ন্ত্রণে ৮ ইউনিট ◈ জিয়াও কখনো স্বাধীনতার ঘোষক দাবি করেনি, বিএনপি নেতারা যেভাবে করছে: ড. হাছান মাহমুদ ◈ আওয়ামী লীগ সবচেয়ে বড় ভারতীয় পণ্য: গয়েশ্বর ◈ সন্ত্রাসীদের ওপর ভর করে দেশ চালাচ্ছে সরকার: রিজভী ◈ ইফতার পার্টিতে আওয়ামী লীগের চরিত্রহনন করছে বিএনপি: কাদের ◈ বাংলাদেশে কারাবন্দী পোশাক শ্রমিকদের মুক্তির আহ্বান যুক্তরাষ্ট্রের ফ্যাশন লবি’র ◈ দক্ষিণ আফ্রিকায় সেতু থেকে তীর্থ যাত্রীবাহী বাস খাদে, নিহত ৪৫ ◈ ২২ এপ্রিল ঢাকায় আসছেন কাতারের আমির, ১০ চুক্তির সম্ভাবনা ◈ ইর্ন্টান চিকিৎসকদের দাবি নিয়ে প্রধানমন্ত্রী’র সঙ্গে কথা বলেছি: স্বাস্থ্যমন্ত্রী ◈ উন্নয়ন সহযোগীদের একক প্ল্যাটফর্মে আসা প্রয়োজন: পরিবেশমন্ত্রী

প্রকাশিত : ১১ জুন, ২০১৯, ০৫:৪৫ সকাল
আপডেট : ১১ জুন, ২০১৯, ০৫:৪৫ সকাল

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

‘অন্যের সমালোচনা শুনে কি করবো, আমার নিজেরই তো খারাপ লাগছে’

ডেস্ক রিপোর্ট  : ঠিক আলোচনায় বলা হয়তো ঠিক হবে না। তবে কঠিন ও নির্মম সত্য হলো, এখন মানে বিশ্বকাপের তৃতীয় ম্যাচে ইংল্যান্ডের কাছে হারের পর মাশরাফিকে নিয়েও কথা উঠে গেছে। তার সমালোচনা হচ্ছে। বোলিং হচ্ছে প্রশ্নবিদ্ধ। দলে তার ভূমিকা কি? এসব নিয়েও প্রশ্ন তুলছেন কেউ কেউ।

এসব ইথারে ভেসে যে তার কানে পৌঁছায়নি, তা নয়। মাশরাফিও শুনেছেন ওসব তীর্যক কথা-বার্তা। শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে ম্যাচের আগে আনুষ্ঠানিক সংবাদ সম্মেলনেও মাশরাফির কাছে ছুঁড়ে দেয়া হলো এই তীর্যক প্রশ্নটাই। এক ভিনদেশি সাংবাদিক জানতে চাইলেন, ‌‌দলে আপনার ভূমিকাটি আসলে কি? একটু খোলাসা করে বলবেন? তিন ম্যাচের দুটিতে আপনি নিজের ১০ ওভারের বোলি কোটা পূরণ করেননি, সেটা কেন?’

পাশাপাশি বাংলাদেশের এক সাংবাদিকও প্রশ্ন রাখলেন মাশরাফির কাছে, ‌‌‌'১৮ বছর ক্রিকেট খেলার পর এবং দীর্ঘদিন জাতীয় দলের নেতৃত্ব দেয়ার পরও যখন আপনার ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন ওঠে, দেশের যোগাযোগ মাধ্যমে নেতিবাচক কথা-বার্তা হয়, আপনি তা শোনেন- তখন কেমন লাগে?'

মাশরাফি মৃদু হেসেই জবাব দিলেন, ‘হ্যাঁ, সেগুলো যে আমার কানেও আসেনি, তা নয়। আমিও শুনেছি। তবে আমি শতভাগ পেশাদার। পেশাদারিত্বের সঙ্গেই নিয়েছি এসব। একজন পেশাদার ক্রিকেটার হিসেবে আমি জানি, ভাল পারফর্ম করতে না পারলে কথা হবেই। সমালোচনার তীরও আসবে গায়ে। তাই আমি মোটেই হতাশ নই। কোন খারাপও লাগছে না। খেলোয়াড়রা সেরাটা দিতে না পারলে নেতিবাচক কথাবার্তা হবে। সমালোচনার ঝড় বইবে। তা শুনতেও হবে আমাদের, এটাই স্বাভাব্কি। কাজেই এ নিয়ে আসলে আমার কোন প্রতিক্রিয়াও নেই।’

এর পরপরই মাশরাফি বুঝিয়ে দেন, ‌'আসলে সমালোচনা ও উড়ো মন্তব্যের চেয়ে তার নিজের মর্মপীড়াটাই অনেক বেশি। কারণ তার অনুভব, উপলব্ধি আর মূল্যায়ন সুঁইয়ের ফলার মত। তিনি অন্যের পাশাপাশি নিজের পারফরমেন্সেরও চুলচেরা বিশ্লেষণ করেন। বোঝেন, জানেন- নিজের পারফরমেন্সটা কেমন হচ্ছে। তাই তার নিজের উপলব্ধি, বোলিংটা তার নিজের মানের হচ্ছে না। ঘুরিয়ে বললে, বোলিংটা তার মান অনুযায়ী ভাল হয়নি। সে কারণেই সফল হননি।

সে জন্য নিজের কাছেই বরং খারাপ লাগছে। আর তাই তার শেষ কথা, ‘আসলে মানুষ কি বলছে, তা নিয়ে আমি মাথা ঘামাই না। সমালোচনা মেনে নিয়েই বলছি, কে কি তীর্যক কথাবার্তা বলছেন, আর কেমন সমালোচনা হচ্ছে! তারচেয়ে বড় কথা আমি নিজেই অনুভব করছি যে, আমি আমার সেরাটা দিতে পারছি না। আমার নিজেরই খারাপ লাগছে এটা নিয়ে।’

১০ ওভারের বোলিং কোটা পূরণ না করা প্রসঙ্গে মাশরাফির ব্যাখা, 'আমার নিজের যখন মনে হয় স্পিনাররা ভাল করছে, তাদের বোলিং করাটা বেশি দরকারি। তখন নিজে বল কম করে হলেও অন্যদের আমি সুযোগে দেয়ার চেষ্টা করি। আবার ইংল্যান্ডের বিপক্ষে মনে হয়েছে, ১০ ওভারের কোটা পূরণ করেছি।’

তবে সমালোচনা ও যোগাযোগ মাধ্যমের তীর্যক কথাবার্তাগুলো সম্পর্কে নেতিবাচক প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত না করলেও একটি বড় বার্তা দিয়েছেন টাইগার অধিনায়ক। জানিয়ে দিয়েছেন, সমালোচনা হতেই পারে। তবে তা যেন ক্রিকেটারদের সবার কানে না যায়। ড্রেসিং রুমে সে সব সমালোচনা নিয়ে যেন আবার কথা-বার্তা কিংবা গুঞ্জন না হয়। তাতে করে দল ক্ষতিগ্রস্ত হবে। ড্রেসিং রুমের পরিবেশ নষ্ট হয়ে যাবে।

এ নিয়ে মাশরাফির কথা, ‌'অন্যের কথা শুনে কি করবো বলুন! শেষ কথা হলো, আমি নিজে পজিটিভ আছি। তবে আমি বাইরের সমালোচনা ও তীর্যক কথা-বার্তা থেকে দলকে যতটা সম্ভব দুরে রাখতে চাই। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমসহ বাইরে যে সব কথা বার্তা হয়, তা যেন আমাদের ড্রেসিং রুম পর্যন্ত না পৌঁছায়। তাতে ভালোর চেয়ে খারাপ হবার সম্ভাবনাই থাকে বেশি।’

মাঠে আকাশছোঁয়া সাফল্যও তাকে এতটুকু উদ্বেলিত করে না। হাজারো অর্জন, কৃতিত্বর পরও মাশরাফি থাকেন নির্বিকার। আবেগ-উচ্ছাস কিছুই তাকে স্পর্শ করে না। আবার পরাজয়, ব্যর্থতা আর না পারায় হতাশও হন না। বেদনায়ও হন না যন্ত্রনাক্লিষ্ট। সেই মাশরাফি কি আর দেশে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে তাকে নিয়ে কে কি বলছেন, কি লিখছেন, তা নিয়ে প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করার মানুষ তিনি নন।

তাকে যারা চেনেন, জানেন- তারা সবাই একবাক্যে বলবেন, নাহ মোটেই না। মাশরাফি ভিন্ন ধাতুতে গড়া। সাফল্য যেমন তাকে আবেগতাড়িত করে না। আবার ব্যর্থতায়ও তিনি হতাশায় মুষড়ে পড়েন না। আর হাজারো বাহবা, প্রশংসা-বন্দনা ও নেতিবাচক, তীর্যক সমালোচনা তাকে মোটেই ছুঁতে পারে না।

কাজেই মাশরাফি হতাশায় মুষড়ে পড়বেন না। নিজের সামর্থ্যটা তার খুব ভাল জানা। তিনি জানেন, কখন কি করতে হবে? তবে যারা উটকো সমালোচনা আর উড়ো মন্তব্য করছেন, তারা কি জানেন? খেলা হচ্ছে শতভাগ ব্যাটিং উপযোগি উইকেটে! সেখানে বোলারদের তেমন কিছু করারও থাকছে না। মাশরাফি আছেন সুযোগের অপেক্ষায়। যেদিন একটু স্পোর্টিং পিচ পাবেন, সেদিনই দেখিয়ে দেবেন, ‌'আমি শুধু অধিনায়কের কোটায় না, পেস বোলার হিসেবেই খেলি।'

কে জানে মঙ্গলবর, ১১ জুন শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে ব্রিস্টলেই না আবার বল হাতে আগুন ঝরাবেন মাশরাফি!

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়