খালিদ আহমেদ : ফেডারেল ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (এফবিআই) আরো জানায়, ওসামা বিন লাদেনের অনুসারী আশিক টাইমস স্কয়ারসহ গুরুত্বপূর্ণ স্থানে হামলার পরিকল্পনা করেছিলো। আগে চশমা পরলেও হঠাত্ চশমা পরা বন্ধ করে দেয় আশিক, যা এফবিআইয়ের নজরে পড়ে। চোখে ল্যাসিক করার বিষয়ে গোয়েন্দাদের সঙ্গে নানা গল্পও করেছিলো আশিক। তার মতে, লক্ষ্যবস্তুতে হামলা ভ্রষ্ট হতে পারে। কিন্তু ল্যাসিক সার্জারিতে কোনো ভুল হওয়ার আশঙ্কা নেই।
এদিকে, বাংলাদেশি যুবক আশিকুল আলম(২২)গ্রেফতারের ঘটনায় নিউইয়র্কে কমিউনিটিতে উদ্বেগ-উত্কণ্ঠা ছড়িয়ে পড়েছে। গ্রেফতারের এই খবর বিশ্বগণমাধ্যমে ফলাও করে প্রচারিত হচ্ছে এবং এসব খবরে বার বার উঠে এসেছে বাংলাদেশের নাম। নিউইয়র্কের টাইমস স্কয়ারে সন্ত্রাসী হামলা চালানোর জন্য গ্রেনেড ও আগ্নেয়াস্ত্র কেনার সময় এফবিআই তাকে গ্রেফতার করে।
যুক্তরাষ্ট্রের গ্রিনকার্ডধারী আশিকুল আলম কবে ও কখন গ্রেফতার হয়েছে তা আনুষ্ঠানিকভাবে জানায়নি এফবিআই। তবে স্থানীয় শুক্রবার আশিককে ব্রুকলিনের ফেডারেল কোর্টে হাজির করা হয়। আদালত তার জামিন নামঞ্জুর করেছে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দিয়েছেন। বিচারক বলেছেন, এই মুহূর্তে আশিক বিপজ্জনক ব্যক্তি। তবে আদালতে আশিককে এখনো অভিযুক্ত করা হয়নি। পরবর্তী শুনানির তারিখ নির্ধারণ করা হয়েছে ২১ জুন।
আশিকের বাবার নাম মো. শাহজাহান। তার মায়ের নাম মুক্তা বেগম। বাবা-মায়ের সঙ্গে নিউইয়র্কের বাংলাদেশি অধ্যুষিত জ্যাকসন হাইটসের বহুল পরিচিত ‘সিংহ মার্কা বিল্ডিং’ এ থাকতো আশিক। তাদের গ্রামের বাড়ি বাংলাদেশের কিশোরগঞ্জ জেলার করিমগঞ্জে। পরিবারের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ একটি সূত্র জানিয়েছে, শাহজাহান নিঃসন্তান। ১২ বছর আগে পুত্র পরিচয়ে আশিককে যুক্তরাষ্ট্রে আনেন তিনি।
একাধিক সূত্রে জানা গেছে, গত বছরের আগস্ট থেকে আশিককে অনুসরণ করে আসছিলো এফবিআই। পরে এ বছরের জানুয়ারিতে তার সঙ্গে সখ্য গড়ে তোলে এফবিআই এজেন্টরা। আশিক ছদ্মবেশী গোয়েন্দাদের কাছে বেশ কয়েকবার অস্ত্র ও গ্রেনেড কেনার আগ্রহ প্রকাশ করে। এসব অস্ত্র ও বিস্ফোরক দিয়ে সে নিউইয়র্কের টাইমস স্কয়ারে সন্ত্রাসী হামলা এবং ওয়াশিংটন ডিসিতে ঊর্ধ্বতন একজন সরকারি কর্মকর্তাকে হত্যার পরিকল্পনা করে। এসব স্থানের ভিডিও ধারণ করেছিলো সে।
ছদ্মবেশী এফবিআই এজেন্টদের কাছ থেকে আশিক একটি পিস্তলও কিনেছিলো। কেনার পর সেই পিস্তলের সিরিয়াল নম্বরও সে মুছে ফেলে। পিস্তলের সিরিয়াল নম্বর মুছে ফেলার জন্য এই অপরাধে তার ১০ বছরের সাজা হতে পারে। গোয়েন্দাদের কাছে ওসামা বিন লাদেনের প্রশংসা করে আশিক ওয়ার্ল্ড ট্রেড সেন্টার বা এম্পায়ার স্টেট বিল্ডিংয়ে ইসলামের পতাকা উড়তে দেখার সংকল্প ব্যক্ত করেছিলো।
এর আগে ২০১২ সালে নিউইয়র্কে যুক্তরাষ্ট্রের ফেডারেল ব্যাংক বোমা মেরে উড়িয়ে দেয়ার পরিকল্পনার সঙ্গে যুক্ত থাকার অভিযোগে বাংলাদেশি তরুণ কাজী মোহাম্মদ রেজওয়ানুল আহসান নাফিসকে ‘স্টিং অপারেশনে’ গ্রেফতার করে এফবিআই। অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় আদালত তাকে ৩০ বছরের কারাদণ্ড দিয়েছে।
আপনার মতামত লিখুন :