ইকবাল খান : সঞ্জিত মজুমদারের কাছে কাজ শিখে ওই এলাকার মাঠে কামলা দেওয়া গৌরাঙ্গ এখন অর্থনৈতিকভাবে স্বাবলম্বী। ৫ থেকে ৬ জন কর্মী কাজ করেন তার কারখানায়। গৌরাঙ্গ মজুমদারের ভাষায়, এ অঞ্চলে প্রায় সবাই ব্যাট তৈরির কাজ শিখেছেন সঞ্জিত মজুমদারের কাছে।’ সঞ্জিত ১৯৮৪ সালে ভারতের পশ্চিমবঙ্গে তার দিদিবাড়িতে যান। সেখানে কাঠের তৈরি নানা শিল্পকর্ম দেখে মাথায় আসে নতুন কিছু করার। এরপর দেশে ফিরে ভাতিজা উত্তম মজুমদারকে সঙ্গে নিয়ে ক্রিকেট ব্যাট তৈরির পদ্ধতি শেখেন। সূত্র : বাংলাট্রিবিউন।
যশোর সদর উপজেলার নরেন্দ্রপুর এলাকার ওই ব্যাট গ্রামে দীর্ঘদিন ধরে তৈরি হচ্ছে এই ক্রিকেট ব্যাট। আশপাশের বটতলা, মহাজেরপাড়া, রূপদিয়াসহ কয়েকটি গ্রামে এখন তৈরি হচ্ছে ক্রিকেট ব্যাট। দেশের বিভিন্ন জেলায় পাঠানো হয় এই ব্যাট।
সঞ্জিত মজুমদার ১৯৮৬ সালে ব্যাট তৈরি ও তা বিক্রি শুরু করেন স্থানীয় বাজারে। সেই থেকে শুরু। তার দেখাদেখি আস্তে আস্তে আরও অনেকে জড়িয়ে পড়েন এই পেশায়।
সঞ্জিত মজুমদারের দুই ছেলে তপন ও সুমন মজুমদার এখন ব্যাট তৈরির কাজ করছেন। তপন জানান, উত্তরবঙ্গের জেলাগুলো মূলত তাদের বাজার। দেশের ৩২টি জেলায় যশোরের তৈরি এসব ব্যাট বাজারজাত করা হয়। বাজার মূলত অগ্রহায়ণ থেকে বৈশাখ পর্যন্ত। এখন বেশিরভাগ কাঁচামাল তৈরি করে ঘরে রাখতে হচ্ছে। ব্যাটের সাইজ অনুযায়ী কারখানায় কেটে রাখা কাঠ মহাজেরপাড়ায় কারখানা দিয়েছেন এক সময়ের ফার্নিচার মিস্ত্রি তরিকুল ইসলাম। তিনি জানান, রোজার মধ্যে কাজ প্রায় বন্ধ।
ব্যাট তৈরিতে ব্যবহার করা হয় নিমবুত, পুয়ো, ছাতিম, কদম, নিম, জীবন, পিঠেগড়া, আমড়াসহ বিভিন্ন প্রকার দেশি কাঠ। শ্রমিকদের পাশাপাশি বাড়ির বউ-ছেলেমেয়েরাও ব্যাটে পুডিং লাগানো, ঘষামাজা, রঙ করা, স্টিকার লাগানো, প্যাকেটজাত করা ইত্যাদি টুকটাক কাজ করেন।
ব্যাট নির্মাণ কাজে নিয়োজিত শ্রমিকরা জানান, একশ’ ব্যাট বানিয়ে দিলে তারা এক থেকে দেড় হাজার টাকা মজুরি পান। তাদের পক্ষে সপ্তাহে চারশ’ ব্যাট তৈরি করা সম্ভব। ব্যাটে পুডিং, স্টিকার লাগানোসহ পালিশের কাজ করেন অন্যরা।
আপনার মতামত লিখুন :