শোভন দত্ত : কক্সবাজারের উখিয়া ও টেকনাফ উপজেলায় আশ্রিত রোহিঙ্গারা ক্যাম্পে আনন্দ বেদনার মধ্য দিয়ে পালন করছেন পবিত্র ঈদুল ফিতর। মিয়ানমার থেকে পালিয়ে আসা বাস্তুচ্যুত এসব রোহিঙ্গারা প্রায় দুই বছরেও সহিংসতার কথা ভুলতে পারেননি। ঈদ এলে মাতৃভূমি থেকে দূরে থাকা ও স্বজন হারানোর বেদনা আরো বাড়িয়ে তোলে তাদের। পাশাপাশি ঈদের প্রয়োজনীয় কেনাকেটা ব্যতীত নিরানন্দে কাটছে তাদের ঈদ।
আবার অনেক রোহিঙ্গা উৎসবমুখর পরিবেশে ঈদ উদযাপনের চেষ্টা করছেন। বিশেষ করে শিশু-কিশোররা অনাবিল আনন্দে ঈদ উপভোগ করছেন। প্রশাসন বলছে, স্থানীয়দের পাশাপাশি রোহিঙ্গারা যাতে ক্যাম্পে নির্বিঘ্নে ঈদ উদযাপন করতে পারে সেই ব্যাপারে সব প্রস্তুতি সম্পন্ন করা হয়েছে।
মিয়ানমারে সৃষ্ট সহিংসতায় ২০১৭ সালের ২৫ আগস্টের পর থেকে লাখ লাখ রোহিঙ্গা পালিয়ে এসে আশ্রয় নেয় উখিয়া ও টেকনাফ উপজেলায়। ৩০টি রোহিঙ্গা ক্যাম্পে ১১ লাখেরও বেশি রোহিঙ্গা আশ্রয় নিয়েছে। বাংলাদেশে এবারসহ দুই বার ঈদুল ফিতর পালন করছেন রোহিঙ্গারা। অনেক ক্যাম্পে ঈদ উৎসবের তেমন আমেজ নেই। ২০১৭ সালে কিংবা তার আগে যাদের নিয়ে ঈদ উদযাপন করেছিলেন মিয়ানমারে, এবার তাদের অনেকে শুধুই স্মৃতি। মিয়ানমার সেনাবাহিনীর নিষ্ঠুর নির্যাতনে প্রাণ হারানো সেই স্বজনদের দুঃসহ স্মৃতি বহন করেই ঈদ পালন করেন রোহিঙ্গারা। পাশাপাশি অপ্রতুল ত্রাণ ব্যতীত তাদের পর্যাপ্ত সেমাই, চিনি, কাপড়-চোপর ও ঈদ সামগ্রী ছাড়া নিরানন্দে ঈদ উদযাপন করছেন বেশিরভাগ রোহিঙ্গা।
যে সব রোহিঙ্গারা ধনী ও মধ্যপ্রাচ্যে যাদের আত্মীয়-স্বজন রয়েছে, তারা উৎসবমুখর পরিবেশে ঈদ উদযাপন করছেন। শহর-বন্দরে তেমন যেতে না পারলেও স্থানীয় হাট-বাজারে ঈদের কেনাকাটা সেরেছেন। তাদের মতে মিয়ানমারের তুলনায় বাংলাদেশে ঈদ উদযাপন অনেক শ্রেয়। মিয়ানমারে ঈদ উদযাপন করলেও স্বাধীনভাবে চলাফেরা করা দুরূহ ব্যাপার ছিল।
রোহিঙ্গা ক্যাম্পে আনন্দে উৎসবে ভাসছে রোহিঙ্গা শিশু-কিশোররা। তারা নাগরদোলা ও বিনোদন কেন্দ্রে অনাবিল আনন্দে সময় পার করছে। সেই সাথে শিশু-কিশোর যুবক মিলে সিনেমা হলে ভিড় করছে।
একাধিক রোহিঙ্গা নারী-পুরুষ ও শিশু জানান, ঈদসামগ্রী ছাড়াই তারা যতসামান্য কেনাকেটা করে ঈদুল ফিতর উদযাপন করেন। এখনও তারা মিয়ানমারের সেই নির্যাতন ভুলতে পারেননি। মিয়ানমারে স্বাধীনভাবে ঈদ উদযাপনে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করা হতো। এখানে তা নেই। তাই বেশ ভালো লাগছে।
এ ব্যাপারে টেকনাফ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. রবিউল হাসান বলেন, সরাসরি জামা কাপড় পৌঁছাতে না পারলেও ঈদ উযাপনের পরিবেশ তৈরি করে দেয়া হয়েছে। পাশাশাপাশি সরকারি ও বেসরকারি সংস্থার উদ্যোগে রোহিঙ্গাদের মাঝে ঈদসামগ্রী বিতরণ করা হয়েছে।কক্সবাজারের উখিয়া ও টেকনাফ উপজেলায় আশ্রিত রোহিঙ্গারা ক্যাম্পে আনন্দ বেদনার মধ্য দিয়ে পালন করছেন পবিত্র ঈদুল ফিতর। মিয়ানমার থেকে পালিয়ে আসা বাস্তুচ্যুত এসব রোহিঙ্গারা প্রায় দুই বছরেও সহিংসতার কথা ভুলতে পারেননি। ঈদ এলে মাতৃভূমি থেকে দূরে থাকা ও স্বজন হারানোর বেদনা আরো বাড়িয়ে তোলে তাদের। পাশাপাশি ঈদের প্রয়োজনীয় কেনাকেটা ব্যতীত নিরানন্দে কাটছে তাদের ঈদ। আরটিভি অনলাইন
আপনার মতামত লিখুন :