সমীরণ রায়: দেশের আর্থ-সামাজিক উন্নয়নে সম্প্রীতির গুরুত্ব তুলে ধরে রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ বলেছেন, সংযম, সৌহার্দ্য ও সহমর্মিতার শিক্ষা ব্যক্তি, পারিবারিক, সামাজিক ও জাতীয় জীবনে প্রতিষ্ঠা করা গেলে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির বন্ধন আরও সুদৃঢ় হবে। ধর্মীয় অনুষ্ঠানগুলো হোক সবার মিলন মেলা। বুধবার বঙ্গভবনে বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষের সঙ্গে ঈদ শুভেচ্ছ বিনিময় অনুষ্ঠানে রাষ্ট্রপতি দেশবাসীকে ঈদের শুভেচ্ছা জানিয়ে একথা বলেন।
রাষ্ট্রপতি বলেন, রমজান আমাদের সংযম, সৌহার্দ্য ও সহমর্মিতার শিক্ষা দেয়। রমজানের এ শিক্ষাকে ব্যক্তি, পারিবারিক, সামাজিক ও জাতীয় জীবনে প্রতিষ্ঠা করা গেলে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির বন্ধন আরো সুদৃঢ় হবে। দেশের আর্থ-সামাজিক উন্নয়নেও সম্প্রতি অপরিহার্য। ধর্ম মানুষকে আলোর পথ দেখায়। আলোকিত মানুষ গড়ার প্রেরণা যোগায়। তাই ধর্মীয় অনুষ্ঠানগুলো ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে সকলের জন্য সম্প্রতি ও সৌহার্দের মিলনমেলায় পরিণত হোক-এটাই সকলের প্রত্যাশা।
এর আগে ঈদ উপলক্ষে সমাজের বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষের সঙ্গে ঈদ শুভেচ্ছা বিনিময় করেন রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ ও তার স্ত্রী রাশিদা খানম। রাষ্ট্রপতির পরিবারের সদস্যরা এসময় উপস্থিত ছিলেন।
রাষ্ট্রপতি বলেন, মাসব্যাপী সিয়াম সাধনার পর অপার খুশি আর আনন্দের বারতা নিয়ে আসে পবিত্র ঈদুল ফিতর। ঈদুল ফিতর মুসলমানদের ধর্মীয় উৎসব হলেও ঈদের এ আনন্দ ছড়িয়ে পড়ে সবার মাঝে, সারা বাংলায়। শহরবাসী মানুষ শিকড়ের টানে ফিরে যান গ্রামে, আপনজনের কাছে। মিলিত হন আত্মীয়-স্বজনের সাথে।সবাই এক কাতারে শামিল হন এবং ঈদের আনন্দকে ভাগাভাগি করে নেন।
ইসলাম শান্তি ও কল্যাণের ধর্ম। এখানে হিংসা-বিদ্বেষ, হানাহানি, কূপমণ্ডূকতার কোনো স্থান নেই। মানবিক মূল্যবোধ, পারস্পরিক সহাবস্থান, পরমতসহিষ্ণুতা ও সাম্যসহ বিশ্বজনীন কল্যাণকে ইসলাম ধারণ করে। ইসলামের এই সুমহান বার্তা ও আদর্শ সবার মাঝে ছড়িয়ে দিতে হবে। ইসলামের মর্মার্থ ও অন্তর্নিহিত তাৎপর্য মানবতার মুক্তির দিশারি হিসেবে দিকে দিকে ছড়িয়ে পড়ুক, বিশ্ব ভরে উঠুক শান্তি আর সৌহার্দে-পবিত্র ঈদুল ফিতরে এ প্রত্যাশা করি।
ঈদ উপলক্ষে আয়োজিত এই সংবর্ধনায় প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেন, সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের, কৃষিমন্ত্রী আব্দুর রাজ্জাক, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল, ধর্ম প্রতিমন্ত্রী শেষ মো. আবদুল্লাহ রাষ্ট্রপতির সঙ্গে শুভেচ্ছা বিনিময় করেন।
এছাড়া ডিপ্লোম্যাটিক কোরের ডিন ভ্যাটিকানের রাষ্ট্রদূত আর্চ বিশপ জর্জ কোচেরি, ভারতের হাই কমিশনার রীভা গাঙ্গুলী দাস, ব্রিটিশ হাই কমিশনার রবার্ট ডিকসনসহ বিভিন্ন মুসলিম দেশের রাষ্ট্রদূতরা রাষ্ট্রপতির সঙ্গে শুভেচ্ছা বিনিময় করেন।
সংসদ সদস্য, উচ্চ আদালতের বিচারপতি, শিক্ষাবিদ, কবি-সাহিত্যিক-শিল্পী, ব্যবসায়ী প্রতিনিধি, ধর্মীয় নেতারা অনুষ্ঠানে অংশ নেন।
বঙ্গভবনের দরবার হলে গরু ও মুরগির মাংসের কয়েকটি পদ, খিচুড়ি, পোলাও, দই বড়া এবং বিভিন্নরকম মিষ্টান্ন ও ফল দিয়ে দিয়ে আমন্ত্রিত অতিথিদের আপ্যায়ন করা হয়।
আপনার মতামত লিখুন :