ডেস্ক রিপোর্ট : নতুন জামা-কাপড়ের পাশাপাশি ঈদের দিনে সেলামি দেওয়ার জন্য দিনদিন চাহিদা বাড়ছে নতুন টাকার। ভোক্তার চাহিদা বিবেচনা করে ব্যাংকগুলো নতুন নোট বিনিময় করলেও তা জোটে না সবার ভাগ্যে। তাদের ভরসা গুলিস্তানের মোড় ও বাংলাদেশ ব্যাংকের সামনে নতুন নোটের বাজার।
গুলিস্তান মোড়ের নতুন নোটের বাজার ঘুরে দেখা গেছে, রাস্তার পাশে ফুটপাতে টুলের উপর নতুন নতুন নোট সাজিয়ে বেচাকেনা চলছে বেশ কয়েকটি দোকানে। চাহিদার উপর নির্ভর করে মুহূর্তের মধ্যে উঠানামা করছে নোটের দাম।
মো. আরিফুর রহমান নতুন টাকা কিনতে এসেছেন গুলিস্তানের মোড়ে। জানতে চাইলে তিনি বলেন, যখনই ক্রেতাদের আগমন বেশি হচ্ছে, তখনই নোটের বিনিময় মূল্য বাড়িয়ে দিচ্ছেন বিক্রেতারা। আরিফ ১০ টাকার ১০০টি নোটের একটি বান্ডিল কিনেছেন ১ হাজার ১৭০ টাকা দিয়ে। তার অল্প কিছুক্ষণ আগে আরেক ক্রেতা ১০ টাকার ১০০টি নোটের একটি বান্ডিল কিনেছেন ১ হাজার ১৫০ টাকা দিয়ে।
এবিষয়ে নতুন নোট বিক্রেতা রফিকুল ইসলাম বলেন, আমরা কোনো খরিদ্দারের কাছ থেকে দাম বেশি নিচ্ছি না। যে দরে কিনেছি, তার সঙ্গে ২০ থেকে ৩০ টাকা করে বেশি নেওয়া হচ্ছে। আবার ১০০ টাকার নোটের বান্ডিলে বেশি নেওয়া হয় সর্বোচ্চ ৩০ থেকে ৫০ টাকা পর্যন্ত।
তবে ক্রেতাদের অভিযোগ উল্টো। নাবিলা আখতার নামে এক কর্মজীবী নারীর দাবি তার কাছ থেকে ৫০ টাকার নোটের ১০০টির একটি বান্ডিল ৫ হাজার ১৫০ টাকা নেওয়া হয়েছে। ২০ টাকার নোটের ১০০টির একটি বান্ডিল ২ হাজার ২শ’ টাকা দিয়ে কিনেছেন বলেও জানান নাবিলা।
বাংলাদেশ ব্যাংকসহ কয়েকটি সরকারি বেসরকারি ব্যাংকের শাখা থেকে ঈদের আগে নতুন নোট বিনিময় করা হলেও কতিপয় অসাধু কর্মকর্তাদের যোগসাজশে নতুন টাকা বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে বের করে বিক্রি করা হচ্ছে গুলিস্তানের মোড় ও বাংলাদেশ ব্যাংকের সামনের বটতলায়।
বাংলাদেশ ব্যাংকের সামনে পুলিশ বক্সের সামনেও একই দামে বিক্রি হচ্ছে নতুন নোট। তবে মাঝে মধ্যে পুলিশ এসে ধাওয়া দিয়ে উঠিয়ে দিলেও কিছুক্ষণ পরে আবারও পসরা সাজিয়ে বসে যাচ্ছেন বিক্রেতারা। চলছে বেচাকেনা।
বিক্রেতারা জানান, চাহিদার শীর্ষে থাকা ২ ও ৫ টাকার নোট বাংলাদেশ ব্যাংক না ছাড়ায় বিক্রি বন্ধ রয়েছে। তারা অভিযোগ করে বলেন, ঈদের আর মাত্র একদিন বাকি থাকলেও এবছর আশানুরূপ বিক্রি হয়নি নতুন টাকা। তবে বেচাবিক্রি যাই হোক প্রত্যেক দিনের যে খরচ তা করতেই হচ্ছে।
গুলিস্তান মোড় ও বাংলাদেশ ব্যাংকের সামনে বিক্রেতাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, গড়ে ১০ টাকার ১০০টি নোটের একটি বান্ডিল ১ হাজার ১শ থেকে ১ হাজার ১৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। ২০ টাকার নোটের ১০০টির একটি বান্ডিল ২ হাজার ১শ থেকে ২ হাজার ১২০-১৩০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। ৫০ টাকার নোটের ১০০টির একটি বান্ডিল সর্বোচ্চ ৫ হাজার ১০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। ১০০ টাকার নোটের ১০০টির একটি বান্ডিল বিক্রি হচ্ছে ১০ হাজার ১২০ থেকে ১০ হাজার ১৩০ টাকায়।
এদিকে ঈদ উপলক্ষে ব্যাংকের এটিএম বুথ থেকে নতুন টাকা দেওয়া হলেও সেখানে ৫শ ও ১ হাজার টাকার নোট দেওয়া হয়। আর নতুন ক্রেতাদের অধিকাংশের চাহিদা রয়েছে ১০ থেকে ১০০ টাকার নোটের। যেখানে বাংলাদেশ ব্যাংকের সামনে বটতলা ও গুলিস্তানের মোড়ই একমাত্র ভরসা ঈদের আগে নতুন নোট প্রত্যাশীদের।
বাংলানিউজ
আপনার মতামত লিখুন :