রবিউল আলম : বাংলাদেশ-জাপান আলোচনার টেবিলে দুইটি পতাকা দুই পাশে, মাঝখানে লাল, সবুজ আর সাদা নিয়ে চেয়ে আছে। নিজের দেশের পতাকার রং এর সাথে মিশে যাওয়ায় মনের মাঝে এক ধরনের অনুভূতি লিখে বুঝানো যাবে না কি পরিমান সহানুভূতি হয়। মনে পরে যায় আমাদের মুক্তি সংগ্রামের কথা। এখন আর সিনেমা হলে যাই না। তবে ৯০ দশকে সিনেমা হলে আমাদের জাতীয় পতাকার অবমাননা দেখে।
একই পতাকা ৭০ দশকে প্রদর্শনের সাথে সাথে শত শত দর্শক দাঁড়িয়ে যেতো, জাতীয় সঙ্গীত আমার সোনার বাংলা গানের সাথে সাথে নিজেরা গাইতো এবং বুকে হাত দিয়ে দাঁড়িয়ে থাকতো। জাতীয় পতাকার এই সম্মান জাতিকে ঐক্যবদ্ধ রাখতে সহায়তা করতো আমার অর্জিত পতাকা। বিশ্ব দরবারে লাল-সবুজের পতাকা বাংলার পরিচয় বহন করে, বিশ্বকাপ ক্রিকেট উপলক্ষ্যে বহির্বিশ্বের পতাকার সাথে আমার লাখো শহীদের পতাকা পতপত করে উড়ছে একই কাতারে। যে পতাকা আমার জাতিকে বিশ্ব দরবারে সম্মানের আসন এনে দেয়, সেই পতাকার অবমাননা আমাকে সিনেমা দেখা থেকে বিরত করে দেয়। জানিনা এখন সিনেমা হলে আগের মতো জাতীয় পতাকা ও জাতীয় সঙ্গীতকে দাঁড়িয়ে সম্মান দেখায় কিনা। তবে আমাদের আইন কি বলে, মন কি বলে।
৩০ লাখ শহিদের রক্তের বিনিময়ে অর্জিত লাল-সবুজের পতাকাকে সম্মান দেখাতে আইন প্রয়োগ করতে হবে, ভাবতেও লজ্জাবোধ করে। বিশ্বে আর কোনো দেশ করে কিনা আমার জানা নাই। আমাদের দেশ, আমার পতাকা, আমার জাতীয় সঙ্গীতকে আমি সম্মান করবো, তার জ ন্য আইন প্রয়োগ করতে হবে এ লজ্জা ঢাকবো কী করে। স্বাধীনতা সংগ্রাম অনেকেই দেখেননি। যারা দেখেননি তারা কিন্তু জাতীয় পতাকা, জাতীয় সঙ্গীতকে অবমাননা করেন না। আমার মতো যারা স্বাধীনতাসংগ্রাম দেখেছেন, রক্ত দিয়ে পতাকা অর্জন করেছেন, তাদের মাঝে অনেকেই পতাকার ও জাতীয় সঙ্গীতের ওপর বিরক্ত বোধ করছেন, দেখে সহ্য হচ্ছে না।
একটু লক্ষ্য করলে বুঝতে পারবেন, শুধু রাজনৈতিক কারণে জাতীয় সঙ্গীত হিন্দুর হয়ে যায়, জাতীয় পতাকার চাঁন-তারা নেই, ইসলামের বাণী কোথায় ইত্যাদি। যুক্তির অভাব নাই। তারা শহীদের রক্ত দেখে না, দেখে না সবুজের সমাহার, স্বাধীনতার মর্মবাণী, মুক্তির আনন্দ, মুক্তমনের বাসনা।
লেখক : মহাসচিব, বাংলাদেশ মাংস ব্যবসায়ী সমিতি
আপনার মতামত লিখুন :