জান্নাতুন নাঈম প্রীতি : এক বান্ধবীর সঙ্গে দেখা হয়েছিলো। কয়দিন আগেই তার বিয়ে হয়েছে। মন খারাপ দেখে জানতে চাইলাম... কী রে, কী হয়েছে? জানা গেলো বিশ রোজা চলে গেলেও তার বাবা-মা তার শ্বশুরবাড়িতে ‘ইফতারি’ পাঠায়নি! এতে প্রায় প্রতিদিনই হাজবেন্ডের কাছে তার মান-সম্মান নাকি কাটা যাচ্ছে! এই ঘটনা দেখে মনে হলো... যৌতুক কি কেবল পুরুষই চায়, নাকি নারীও চায়? না হলে বিয়ের পরে নারীর মান-সম্মান ইফতারি পাঠানোতে কেন থাকবে? এদেশের মিনমিনে পরনির্ভরশীল নারীরা নিজের বাড়ির সঙ্গে যেসব ইমোশোনাল ব্ল্যাকমেইল করে থাকেন সেগুলা হচ্ছে... বড় বোনকে ওই গয়নাটা দিলা, আমাকে দিবা না? রোজার মাস আসছে, আমার শ্বশুরবাড়িতে ইফতার দিবা না? আমের সিজন আসছে, আমার শ্বশুরবাড়িতে আম দিবা না? ঈদ আসছে, ঈদ উপলক্ষে আমার শ্বশুরবাড়িতে কাপড় দিবা না?
নারীরা শোনেন, এই দেয়া না দেয়ার যে আবদার আপনারা অনবরত নিজের বাড়ির লোকদের কাছে করেন এটাও এক প্রকার যৌতুক। আপনি নিজে স্বাবলম্বী হন, বিয়ে করেন, শ্বশুরবাড়িতে এটা-ওটা দেন, নিজের গয়না নিজের টাকায় কিনে নেন। কিন্তু যৌতুকের ছদ্মবেশে এটা-ওটা না দেয়ায় আপনার শ্বশুরবাড়িতে আপনার সম্মান থাকছে না এটা আর বলবেন না। সম্মান কি এতো সস্তা যে ইফতার, কাপড়, গয়নার দামে কিনতে পাওয়া যায়? নিজে কামাই করেন, নিজের টাকায় গয়না নেন, যে শ্বশুরবাড়ি হাভাতের মতো ইফতার পাওয়ার আশায় থাকে তাদের মুখের উপর ঝামা মেরে বলে দেন... যৌতুক দিই না। তাদের নিজের টাকায় ইফতার খাওয়ান, তাদের বলেন... আপনি নিজেই একশো। তাদের দেখান আপনি বাপের বাড়ির মুখাপেক্ষী নন। তাদের দেখান আপনার আত্মসম্মান আছে, অর্থনৈতিক স্বাধীনতা আছে। আপনার মান-সম্মান বাপের বাড়ির টাকায় ইফতার দেয়া না দেয়ায় নয়, সম্মান থাকে কারোর কাছ থেকে কিছু না চাওয়ায়! বাপের বাড়ি হেকে কষ্ট করে তথাকথিত মান রক্ষার ইফতার দেয়ার অক্ষমতায় নয়, সম্মান থাকে নিজের অর্থনৈতিক সক্ষমতায়... এই কথাটা আপনি কবে বুঝবেন? ফেসবুক থেকে
আপনার মতামত লিখুন :