দেবদুলাল মুন্না:বিদিশা বললেন, ‘আমি এরশাদ সাহেবের সাথে বিয়ের পর জাতীয় পার্টির রজনীতিতে সক্রিয় ছিলাম।প্রেসিডিয়াম সদস্য ছিলাম।পার্টি চেয়ারম্যানের উপদেষ্টা ছিলাম।উনার ( সাবেক প্রেসিডেন্ট এরশাদ) সাথে রংপুরে গিয়েছি। রংপুরের মানুষ আমাকে অনেক ভালোবাসা দিয়েছে।কিন্তু রাজনীতি করতে গিয়ে দেখলাম, দলের ভেতরেও নোংরা রাজনীতির প্র্যাকটিস আছে। এখন আওয়ামী লীগের সরকারের সাথে যেসব জাতীয় পার্টির নেতাদের নিবিড় যোগাযোগ তারা কতোটুকু আওয়ামী লীগকে ওউন করেন সে বিষয়ে আমার সন্দেহ রয়েছে।আমি সবসময়ই মনে করি ‘জয় বাংলা, জয় বঙ্গবন্ধু’ এটি শুধু কোনো দলের স্লোগানে হতে পারে না। এটি গোটা বাঙালি জাতির স্লোগানে । সব দলের .সবার এই স্লোগানেকে ধারণ করা উচিত।’
জাতীয় পার্টির রাজনীতিতে ফের সক্রিয় হলে তিনি ‘জয় বাংলা, জয় বঙ্গবন্ধু’ স্লোগানেকে দলের স্লোগানে হিসেবে রাখবেন কি না জানতে চাইলে বলেন, ‘কেন নয়? আমি অবশ্যই দলের সবাইকে বোঝাতে চেষ্টা করব এটি একটা জাতির স্লোগানে।মুক্তিযুদ্ধের স্লোগানে ।এ স্লোগানেকে সামনে রেখেই আমি রাজনীতি করতে চাই।আমার বাবা (কবি আবু বকর সিদ্দিক) যখন রাজশাহী বিশ^বিদ্যালয়ে শিক্ষকতা করতেন সেসময় আমি ও বাবা ট্রেনে রাজশাহী থেকে খুলনা ফিরছিলাম।তো, হঠাৎ দেখি এক বৃদ্ধা নারী সিটে বসে গোঙাতে গোঙাতে কি যেন বলছিলেন।সম্ভবত শীতকাল ছিলো।কুঁকড়ে বসেছিলেন ওই বৃদ্ধা।বাবা আমার কাছে বললেন উনাকে( বৃদ্ধা)বলো, আমি একটু আলাপ করতে চাই।আমি বৃদ্ধাকে বললাম।এরপর বাবা ওই বৃদ্ধার কাছে কি যেন জানতে চাইলেন। তখন ছোট ছিলাম। বেশি কিছু বুঝিনি। হঠাৎ দেখি বাবা, রুমাল বের করে চশমার ফাঁক দিয়ে কান্না মুছছেন। জানতে চাইলাম কি হয়েছে আব্বু? তিনি শুধু বললেন, ‘আমরা স্বাধীনতা চেয়েছিলাম। পেয়েছি।কিন্তু মুক্তিযুদ্ধের জন্য এতো এতো আত্মত্যাগের কথা শুনলে চোখ ভিজে যায় রে মা।সেদিন বুঝিনি, আজ বুঝি আমার বাবা’র মধ্যে যে সংবেদনশীলতা ছিলো, দেশপ্রেম ছিলো সেগুলো আমি ধারণ করে আছি।যদি জাতীয় পার্টির নেতৃত্বে ফিরি তবে মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে লালন করে নতুন এক জাতীয় পার্টির রাজনীতি করতে চাই। ভাইজান( জাতীয় পার্টির কো-চেয়ারম্যান ও এরশাদের ছোটভাই জিএম কাদের)আমাকে প্রায়ই ফোন করেন। আমিও করি।আমার উনি একজন অভিভাবক।আমরা বিভিন্ন বিষয়ে আলাপ করি।উনি ( জিএম কাদের)ভীষণ প্রোগ্রেসিভ। উনাকেও কতো কাঠখড় পোড়াতে হয়েছে দলের অভ্যন্তরীণ রাজনীতির জন্যে।দলের ভেতরে অনেকে উনার বিরোধীতা করেছে আড়ালে।কিন্তু আমি সবসময়ই উনার( জিএম কাদের)পাশে আছি।’
রওশন এরশাদের জাতীয় পার্টিতে ভুমিকা নিয়ে বিদিশা বললেন, ‘উনার সম্পর্কে কি বলবো । এতবছর যার সঙ্গে ঘর করেছেন তাকেও তো একদিনের জন্য অসুস্থ হওয়ার পর বাসায় দেখতে যাননি।তাহলে তিনি কীভাবে জনগণের পাশে থাকবেন?ব্যাক্তিস্বার্থের রাজনীতি নয়, জনস্বাথেই রাজনীতি করতে হবে।’
আপনার মতামত লিখুন :