আমিন মুনশি : ইফতার সামনে নিয়ে যে দোয়া করা হয়, সেই দোয়া আল্লাহ কবুল করেন। হাদিসে বর্ণিত হয়েছে, রোজাদারের দোয়া আল্লাহর নিকট এতই আকর্ষণীয় যে আল্লাহ তাআলা রমাদানের সময় ফেরেশতাদের উদ্দেশে ঘোষণা করেন, ‘রমজানে তোমাদের পূর্বের দায়িত্ব মওকুফ করা হলো এবং নতুন দায়িত্বের আদেশ করা হলো, তা হলো আমার রোজাদার বান্দাগণ যখন কোনো দোয়া-মোনাজাত করবে, তখন তোমরা আমিন! আমিন! বলতে থাকবে।’ রমজানের গুরুত্বপূর্ণ সুন্নতসমূহের অন্যতম হলো ইফতার। হজরত আবু হুরায়রা (রা.) বর্ণনা করেন, রাসুলুল্লাহ (স.) বলেন, হাদিসে কুদসিতে মহান আল্লাহ তাআলা ঘোষণা করেন- আমার বান্দাদের মধ্যে তারা আমার বেশি প্রিয়, যারা দ্রুত ইফতার করে। (তিরমিজি, আলফিয়্যাতুল হাদিস: ৫৬০, পৃষ্ঠা: ১৩১)।
প্রিয় নবীজি (সা.) বলেন: যখন রাত সেদিক থেকে ঘনিয়ে আসে ও দিন এদিক থেকে চলে যায় এবং সূর্য ডুবে যায়, তখন রোজাদার ইফতার করবে। (বুখারি, সওম অধ্যায়, হাদিস: ১৮৩০) হাদিসে আরও আছে, সে পর্যন্ত দ্বীন ইসলাম বিজয়ী থাকবে, যে পর্যন্ত মানুষ শিগগির ইফতার করবে। কেননা, ইহুদি ও খ্রিষ্টানরা বিলম্বে ইফতার করে।
ইফতার শুধু খাদ্য গ্রহণের নাম নয়, এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ ইবাদত। হজরত সাহল ইবনে সাআদ (রা.) বর্ণনা করেন, রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন- যতো দিন লোকেরা ওয়াক্ত হওয়ামাত্র ইফতার করবে, ততো দিন তারা কল্যাণের ওপর থাকবে। (বুখারি, সওম অধ্যায়, হাদিস: ১৮৩৩) মিষ্টান্ন, ফল, বিশেষত খেজুর দ্বারা ইফতার করা সুন্নত; যদি তা সম্ভব না হয়, তাহলে যেকোনো হালাল খাদ্যবস্তু দ্বারা, এমনকি শুধু পানি দিয়েও ইফতার করা যায়। রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, তোমাদের কেউ রোজা রাখলে খেজুর দিয়ে যেন ইফতার করে, খেজুর না হলে পানি দ্বারা; নিশ্চয় পানি পবিত্র। (তিরমিজি ও আবু দাউদ; আলফিয়্যাতুল হাদিস: ৫৬২, পৃষ্ঠা: ১৩১-১৩২)
ইফতার মাহফিল ও ইফতার পার্টি সওয়াবের উদ্দেশ্য ভিন্ন হওয়া অনুচিত। ইফতার অনুষ্ঠানের লক্ষ্য হওয়া উচিত (এক) ইফতার করা ও করানোর মাধ্যমে সওয়াব লাভ করা। (দুই) দ্বীনি তালিম। (তিন) ইসলামি তাহজিব তমুদ্দুন ও সংস্কৃতির বিকাশ। (চার) গরিবদের আর্থিক ও সামাজিক সহযোগিতা করা। আর বিশুদ্ধ নিয়ত ছাড়া কোনো ইবাদতই কবুল হয় না। হালাল খাদ্য ও হালাল উপার্জন রোজা, নামাজ ও যাবতীয় ইবাদত কবুলের পূর্বশর্ত। তাই ইফতার ও সাহরিতে বৈধ উপার্জনের হালাল খাবার চাই।
আপনার মতামত লিখুন :