নূর মাজিদ : চলতি সপ্তাহের ২৭ তারিখ ফিনল্যান্ডের রাজধানী হেলসিঙ্কিতে অনুষ্ঠিত এক বৈজ্ঞানিক সম্মেলনে এই তথ্য জানানো হয়। ইনভায়রোমেন্টাল টক্সিকোলজিস্ট’দের এই সম্মেলনে বিজ্ঞানীরা বিশ্বের ৭২টি দেশের ৭১১টি নদী থেকে সংগৃহীত নমুনা বিশে¬ষণ করে একটি গবেষণাপত্র উপস্থাপন করেন। সূত্র : দ্য হিন্দু
বিজ্ঞানীরা এই সকল নমুনা পরীক্ষা করে তারা দেখতে পান, কয়েক ডজন নদীর বেশ কিছু স্থানে অ্যান্টি-বায়োটিক উপাদানের মাত্রা অতিরিক্ত পরিমাণে বেশি। যা নদীর জলজ পরিবেশের স্বাভাবিক বাস্তু-সংস্থানকে বিনষ্ট করার পাশাপাশি নদীর ওপর নির্ভরশীল জনগোষ্ঠীর স্বাস্থ্যের জন্যেও হুমকি হয়ে উঠছে। সাধারণত অ্যান্টি-বায়োটিক মানব এবং প্রানীদেহে ক্ষতিকর অণুজীবের সংক্রমণ ঠেকাতে ব্যবহার করা হয়। কিন্তু, অনিয়ন্ত্রিতভাবে শহরের মেডিক্যাল বর্জ্য নদীতে পড়ার কারণে নদীর পানিতে অ্যান্টি-বায়োটিক উপাদানের উপস্থিতি বাড়ছে।
বিশ্বব্যাপী অন্ত্র এবং মূত্রনালীর প্রদাহ বন্ধে ব্যবহার করা সিপ্রোফ্লোক্সিনের মাত্রাতিরিক্ত দূষণ পাওয়া গেছে ৫১টি নদীতে। বাংলাদেশের একটি নদীতে মেট্রোনিডাজল নামক একটি অ্যান্টি-বায়োটিকের উপস্থিতি সহনীয় মাত্রার চাইতে ৩০০গুণ বেশি। তবে গবেষণা
এই বিষয়ে ইয়র্ক ইনভায়রোমেন্টাল সাস্টেইনেবিলিটি ইন্সটিটিউডের বিজ্ঞানী অ্যালিস্টার বোক্সাল বলেন, ‘গবেষণার ফলাফল (পরিস্থিতির ভয়াবহতা স¤পর্কে) আমাদের চোখ খুলে দিয়েছে এবং একইসঙ্গে তীব্র শঙ্কার জন্ম দিয়েছে।’ তিনি আরো জানান, নদীর পানিতে অ্যান্টি-বায়োটিকের বিপুল উপস্থিতি শুধু নদীর তলদেশের উপকারি অণুজীব হত্যা করে। আবার এর মাধ্যমে মাছসহ, অন্যান্য জলজপ্রাণীর বিলুপ্তি ঘটে। অনেকসময়, এসব অণুজীবের অ্যান্টি-বায়োটিক সহনশীলতা মাত্রা অতিক্রম করে। যা আরো ভয়াবহ ব্যাপার। কারণ, এরা মানুষের শরীরে আক্রমণ করলে তখন প্রচলিত অ্যান্টি-বায়োটিক ওষুধের চিকিৎসা আর কাজ করেনা।
ইতোপূর্বে, জাতিসংঘের বিশ্বস্বাস্থ্য সংস্থা বা হু সতর্ক করে যে, বিশ্বের প্রায় সকল অণুজীব প্রতিরোধী চিকিৎসা উপাদানের মেয়াদ ফুরিয়ে আসছে। কারণ মানব ও অন্যান্য প্রাণীর দেহে এখন অ্যান্টি-বায়োটিক সহনশীল অণুজীব বা সুপারবাগের আক্রমণ ঘটছে। এই বিষয়ে বৈশ্বিক ফার্মা শিল্পকে অচিরেই নতুন প্রজন্মের সুপারবাগ প্রতিরোধী অ্যান্টি-বায়োটিক ওষুধ আবিষ্কারের আহ্বান জানায় হু।
আপনার মতামত লিখুন :