দেবদুলাল মুন্না: আজকের দিনে শিল্পাচার্য জয়নুল আবেদিন মারা যান। দেশের শিল্পকলা চর্চা ও বিকাশের পথিকৃৎ এ শিল্পী ১৯১৪ সালের ২৯ ডিসেম্বর কিশোরগঞ্জে জন্মগ্রহণ করেন।মারা যান ১৯৭৬সালে। বিভাগোত্তর পূর্ববঙ্গে শিল্পচর্চার পুরোধা ব্যক্তিত্ব জয়নুল আবেদিন এমন এক কীর্তিমান পুরুষ যার তুলনা তিনিই। উপমহাদেশের প্রখ্যাত এ শিল্পী জাতীয় অধ্যাপকও ছিলেন।কর্মজীবনের বেশির ভাগই ব্যয় করেছেন জন্মভূমির শিল্প-সংস্কৃতির ঐতিহ্য সংরক্ষণের চিন্তায়। বহু বিখ্যাত চিত্র এঁকেছেন তিনি। ১৯৪৩-এর বঙ্গদেশীয় ঐতিহাসিক দুর্ভিক্ষের দলিল হিসেবে তার আঁকা চিত্রমালা আজও এক ঐতিহাসিক অমূল্য দলিল।তার দুর্ভিক্ষ নিয়ে সিরিজ চিত্রকর্ম জার্মানীর ক্যাসল গ্যালারিতে ঠাঁই পেয়েছে ২০১৬ সালে।তার ছবি সম্পর্কে হাসনাত আবদুল হাই বলেন, ‘ তিনি গ্রামের মানুষকে ভালবাসতেন।কথা বলতেন কথ্য ভাষায়।অভিজাততন্ত্রকে ঘৃণা করতেন। মুলত তিনি দুর্ভিক্ষ সিরিজের চিত্রকর্ম, স্কেচের জন্য বিখ্যাত। এসবে ভয়াবহভাবে সেইসময়ের চিত্রকে তুলে ধরেছেন। তিনি ( জয়নুল আবেদিন)বলতেন দুর্ভিক্ষ রাজনৈতিক। মানুষেরই তৈরি।’
জয়নুল আবেদিন ১৯৪৭ সালে দেশ বিভাগের পর জয়নুল আবেদিন জন্মভূমিতে প্রত্যাবর্তন করেছিলেন মাটির টানে, নাড়ির টানে। স্বদেশে নিজস্ব শিল্পাঙ্গন বা শিল্প পরিবেশ আর শিল্পী সমাজ গড়ে তোলার স্বপ্ন তার মতো করে কেউ দেখেননি। তাই ঢাকায় ফিরে শিল্পকলার বিকাশে একটি চারুকলা স্কুল প্রতিষ্ঠা করেন তিনি। কালক্রমে যা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি ইনস্টিটিউটে পরিণত হয়েছে।’৭৪ সালে শিল্পকলা একাডেমির অন্যতম উপদেষ্টা মনোনীত হন। যুক্তরাষ্ট্রের ফিলাডেলফিয়ায় কংগ্রেস ফর ওয়ার্ল্ড ইউনিটির সদস্য নির্বাচিত হন। ’৭৪ সালে বাংলাদেশের প্রথম জাতীয় অধ্যাপক নিযুক্ত হন এবং আমৃত্যু এ পদে অধিষ্ঠিত থাকেন।
আপনার মতামত লিখুন :