মুসবা তিন্নি : জার্মানিতে খ্রিষ্টানদের ‘গির্জা কর’ দিতে হয়৷ এবার মুসলমানদের জন্যও এমন করের কথা ভাবা হচ্ছে৷ মসজিদ পরিচালনায় বিদেশি নির্ভরতা কমাতে এমন পরিকল্পনা ৷ ডয়েচে ভেলে
‘ডি ভেল্ট’ পত্রিকায় প্রকাশিত এক সাক্ষাৎকারে চ্যান্সেলর আঙ্গেলা ম্যার্কেলের খ্রিষ্টীয় গণতন্ত্রী দলের সদস্য টর্স্টেন ফ্রাই বলেন, মসজিদ করের প্রস্তাব একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ৷ এর ফলে জার্মানিতে ইসলাম ধর্ম বিদেশি রাষ্ট্রের নিয়ন্ত্রণ থেকে মুক্ত হতে পারবে৷ জার্মানির জোট সরকারের অংশ সামাজিক গণতন্ত্রী দলের অভ্যন্তরীণ নীতি বিষয়ক প্রধান বুর্কার্ড লিশকাও মনে করছেন, মসজিদ কর আরোপ হলেজার্মানিতে ইসলাম ধর্মআরো স্বাধীন হবে৷ কর নির্ধারণের প্রস্তাবটি ‘আলোচনা করার মতো বিষয়' বলেও মন্তব্য করেন তিনি৷ উল্লেখ্য, জার্মানিতে ক্যাথলিক ও প্রোটেস্টান্ট ধর্মপালনকারীদের কাছ থেকে গির্জা কর সংগ্রহ করে সরকার৷ এরপর সেই অর্থ বিভিন্ন ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানকে দেয়া হয়৷ জার্মানির মতো অস্ট্রিয়া, সুইডেন ও ইটালিতেও খ্রিষ্টান ধর্মপালনকারীদের গির্জা কর দিতে হয়৷
জার্মানিতে মুসলমানদের ক্ষেত্রে এমন কোনো করের ব্যবস্থা না থাকায় মসজিদগুলোকে দানের উপর নির্ভও করতে হয়৷ অনেকসময় এই দান আসে বিদেশি রাষ্ট্রগুলো থেকে৷ সেক্ষেত্রে দেখা যায়, কোনো কোনো রাষ্ট্র দানের বিনিময়ে মসজিদের মাধ্যমে ধর্মপ্রাণদের মধ্যে মৌলবাদী আদর্শ ছড়ানোর চেষ্টা করে৷কোলনের কেন্দ্রীয় মসজিদ হিসেবে পরিচিত মসজিদটি ইউরোপের অন্যতম বড় এবং জার্মানির সবচেয়ে বড় মসজিদ৷ এটির আয়তন ৪৫০০ বর্গমিটার৷ এতে একসঙ্গে দুই থেকে চার হাজার মুসল্লির নামাজ আদায়ের ব্যবস্থা রয়েছে৷ জার্মানিতে তুর্কি মুসলিমদের সংগঠন ডিটিব মসজিদটি নির্মাণ করেছে৷ নামাজের পাশাপাশি সেখানে বিভিন্ন ধর্মের মধ্যে সংলাপ, খেলাধুলা আয়োজনের ব্যবস্থা এবং দোকান ও লাইব্রেরি রয়েছে৷ উদাহরণ হিসেবে তুরস্ক সরকার পরিচালিত ‘টার্কিশ ইসলামিক ইউনিয়ন ফর রেলিজিয়াস অ্যাফেয়ার্স বা ডিটিব এর কথা বলা যেতে পারে৷ এই সংস্থার অধীনে জার্মানিতে প্রায় ৯০০ মসজিদ আছে, যেগুলো পরিচালনা ও ইমামদের বেতনের খরচ আসে তুরস্ক থেকে৷
তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রেচেপ তাইয়্যিপ এর্দোয়ানের সঙ্গে ঘনিষ্ঠতার অভিযোগে সা¤প্রতিক সময়ে জার্মানিতে সমালোচনার মুখে পড়ে ডিটিব৷ এছাড়া সৌদি অর্থায়নেও জার্মানিতে অনেক মসজিদ পরিচালিত হয়ে থাকে৷ সরকারি তথ্য বলছে, জার্মানিতে ৪৪ থেকে ৪৭ লাখ মুসলিম বাস করেন৷ সম্পাদনা : কায়কোবাদ মিলন