মোহাম্মদ মাসুদ : জয়, একটি নেশা। যার কাছে পৃথিবীর সব কিছু তুচ্ছ হয়ে যায়। আর যখন নেশা চেপে বসে পৃথিবীর উচ্চতম শৃঙ্গ এভারেস্ট জয়ের, তখন তো মৃত্যুভয়ও ফিকে হয়ে যায়। অনেকেই এভারেস্ট জয়ের স্বপ্ন নিয়ে যাত্রা শুরু করেন কিন্তু তাদের এই যাত্রা শেষ হয় চিরবিদায়ের মধ্য দিয়ে। ডিবিসি নিউজ
চলতি মৌসুমে-সর্বশেষ, বিশ্বের সর্বোচ্চ শৃঙ্গ মাউন্ট এভারেস্ট জয় করতে গিয়ে প্রাণ হারান ৪৪ বছর বয়সী রবিন হেনিস ফিসার নামে এক ব্রিটিশ যুবক। শনিবার পর্বত চূড়া থেকে নেমে তিনি অসুস্থ হয়ে পড়েন এবং শেষ পর্যন্ত প্রাণ হারান। এ নিয়ে চলতি মৌসুমে এভারেস্ট শৃঙ্গে মুত্যুর সংখ্যা দাঁড়ালো ১০ জনে।
বিবিসির প্রতিবেদন অনুযায়ী, রবিনের সঙ্গীরা জানান, শনিবার সকালেই রবিন এভারেস্ট জয় করেন। এরপর সেখান থেকে নামার সময় চূড়া থেকে মাত্র ১৫০ মিটার নিচেই অসুস্থ হন তিনি এবং প্রাণ হারান। পর্বতারোহণ সংস্থা থেকে পাঠানো গাইড তাকে বাঁচানোর অনেক চেষ্টা করেও ব্যর্থ হন।
এর আগে,শুক্রবার ৫৬ বছর বয়সী কেভিন হিনেস নামে আরেক আইরিশ আরোহী এখানে প্রাণ হারান। তারও আগে আরেক আইরিশ আরোহী অধ্যাপক সিমস ললেস পর্বতের শৃঙ্গ থেকে পড়ে প্রাণ হারান বলে জানা গেছে। তাদের মৃতদেহ উদ্ধারে এখন পর্যন্ত অভিযান চলছে। এছাড়াও নিহতদের ভারতীয়, নেপালি, অস্ট্রেলিয়ান ও আমেরিকান নাগরিক রয়েছেন।
এবার এভারেস্টে চড়ার সর্বোচ্চ ৩৮১টি পারমিট দিয়েছে নেপাল সরকার। এর প্রতিটির মূল্য ১১ হাজার মার্কিন ডলার। তবে আশ্চর্যের বিষয় হলো, এরই মধ্যে অতিরিক্ত ভিড় দেখা দিয়েছে এই পর্বত শৃঙ্গের চূড়ার কাছে। সেই সঙ্গে বেড়েছে নিহতের সংখ্যাও।
আয়োজক সংস্থা বলছে, এই সপ্তাহে যেন মৃত্যুমিছিল চলেছে পর্বতারোহীদের। তবুও মৃত্যুকে পরোয়া না করেই এগারো হাজার ডলার খরচ করে প্রতিবছর মানুষ এখানে আসেন একবার এভারেস্ট জয় করবেন বলে।
বিশেষজ্ঞেরা বলছেন, ২০১৪ ও ২০১৫-র তুষারধস এবং ভূমিকম্পজনিত দুর্ঘটনা বাদ দিলে নিকট অতীতে এভারেস্ট অভিযানে এক বছরে এত বেশি মৃত্যুর নজির রয়েছে কেবল ২০১২-তেই। ২০১৪ ও ১৫-তে নিহতের সংখ্যাটা ছিল যথাক্রমে ১৬ ও ১৮। আর ২০১২ সালে মারা যান ১০ জন।