শিরোনাম
◈ আওয়ামী লীগ সবচেয়ে বড় ভারতীয় পণ্য: গয়েশ্বর ◈ সন্ত্রাসীদের ওপর ভর করে দেশ চালাচ্ছে সরকার: রিজভী ◈ ইফতার পার্টিতে আওয়ামী লীগের চরিত্রহনন করছে বিএনপি: কাদের ◈ বাংলাদেশে কারাবন্দী পোশাক শ্রমিকদের মুক্তির আহ্বান যুক্তরাষ্ট্রের ফ্যাশন লবি’র ◈ দক্ষিণ আফ্রিকায় সেতু থেকে তীর্থ যাত্রীবাহী বাস খাদে, নিহত ৪৫ ◈ ভারত থেকে ১৬৫০ টন পেঁয়াজ আসছে আজ! ◈ ২২ এপ্রিল ঢাকায় আসছেন কাতারের আমির, ১০ চুক্তির সম্ভাবনা ◈ ইর্ন্টান চিকিৎসকদের দাবি নিয়ে প্রধানমন্ত্রী’র সঙ্গে কথা বলেছি: স্বাস্থ্যমন্ত্রী ◈ উন্নয়ন সহযোগীদের একক প্ল্যাটফর্মে আসা প্রয়োজন: পরিবেশমন্ত্রী ◈ ড. ইউনূসের পুরস্কার নিয়ে ভুলভ্রান্তি হতে পারে: আইনজীবী 

প্রকাশিত : ২৬ মে, ২০১৯, ০৯:০৪ সকাল
আপডেট : ২৬ মে, ২০১৯, ০৯:০৪ সকাল

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

মাহমুদের সাইড আর্ম বোলিং অ্যাকশনই মহৌষধ!

ডেস্ক রিপোর্ট  : বোলিংয়ের প্রসঙ্গ এলেই মাহমুদ উল্লাহ কৌতুক করে হাসেন, ‘উনাকে বলেন, আমাকে কেন বোলিং দেয় না!’ সেই ‘উনি’, মাশরাফি বিন মর্তুজার ঠোঁটেও হাসির ঝিলিক, ‘দক্ষিণ আফ্রিকা ম্যাচে তুই কি ৫-৬ ওভার করে দিতে পারবি না?’

পারবেন অফস্পিনার মাহমুদ উল্লাহ। কাঁধের চোটের কারণে দীর্ঘদিন পর গত পরশু নেটে বল করেছেন মাহমুদ। ৩ ওভারের স্পেল আরো লম্বা করতে চেয়েছিলেন। কিন্তু ফিজিও তিহান চন্দ্রমোহন আর করতে দেননি। প্রথম দিনেই বেশি ধকল নিলে যদি চোটটা আবার ফিরে আসে? তবে বোলিং নিয়ে আত্মবিশ্বাস পুরোপুরি ফিরে এসেছে মাহমুদের মনে, ‘প্রথম ওভারটা করতে একটু কষ্ট হচ্ছিল। এত দিন পর হাত ঘোরাচ্ছিলাম তো। তবে তৃতীয় ওভারটা করতে কোনো অসুবিধা হয়নি। আরো কয়েকটি সেশন আছে। আশা করি, ক্যাপ্টেন চাইলে প্রথম ম্যাচ থেকেই বোলিং করতে পারব।’

বলার সময় আবার চোখে-মুখে কৌতুক ১৭৫ ম্যাচে ৭৬ উইকেট নেওয়া মাহমুদের। এমন আহামরি কোনো বোলিং সাফল্য নয়। তবে একালের ওয়ানডেতে ৫.১৬ ইকোনমি যথেষ্টই ভালো। সঙ্গে ম্যাচের মোড় ঘোরানো উইকেট নেওয়ার অতীত বিবেচনা করলে মাহমুদের অফস্পিন মাশরাফির জন্য ঐশর্যই। আর প্রথম ম্যাচের প্রতিপক্ষ যখন দক্ষিণ আফ্রিকা, যে দলের ব্যাটিং লাইন আপে বাঁহাতিই পাঁচজন। আধুনিক ক্রিকেটে বাঁহাতি ব্যাটসম্যানের বিপক্ষে অফস্পিনারের কার্যকারিতা স্বীকৃত। অগত্যা মাহমুদের বোলিংয়ে ফেরা মাশরাফির জন্য সুখবরই।

তবে এ সুখবরের মাঝেও ছোট্ট একটা কাঁটার খচখচানি আছে। পুরো হাত ঘুরিয়ে হাই আর্ম অ্যাকশনে বোলিং করতে এখনো অসুবিধা হচ্ছে মাহমুদের, ‘হাই আর্মে বল করতে গেলে একটু ব্যথা লাগে। তবে (মেহেদী হাসান) মিরাজের সঙ্গে কথা হয়েছে। ওরও একই ধরনের ব্যথা ছিল। মিরাজ যেটা বলেছে যে, ওর ব্যথা নাকি বোলিং করতে করতে আপনাআপনি চলে গেছে। আশা করি, আমার বেলাতেও তেমনটা হবে। অবশ্য হাই আর্ম করতে অসুবিধা হলেও সাইড আর্ম থেকে অনায়াসে বল করতে পারছি। এভাবে পুরো ১০ ওভার করতেও অসুবিধা হবে বলে মনে হয় না, ইনশাআল্লাহ।’

পাশ থেকে শুনে মাশরাফির উচ্ছ্বাস, ‘তুই আমাদের কেদার যাদব!’ ভারতীয় এ অফস্পিনারের আন্তর্জাতিক ক্যারিয়ার শুরুইহয়েছিল মিডল অর্ডার ব্যাটসম্যান হিসেবে। কিন্তু নেটে এক-দুবার হাত ঘুরিয়ে নজর কাড়েন সে সময়কার কোচ অনীল কুম্বলের। ম্যাচেও বাজিমাত করতে সময় নেননি কেদার। সাইড আর্ম অ্যাকশনে অফস্পিন করে ৫৯ ম্যাচে ২৭ উইকেট নিয়েছেন তিনি। ওভারপিছু রানটাও মাহমুদের মতো কার্যকর, ৫.১৫। এসব দেখে-টেখে একবার ম্যাচের আগে বোলারদের মিটিংয়ে কেদার যাদবকে ডেকেছিলেন অনীল কুম্বলে। আঁতকে উঠে নাকি তিনি কোচকে বলেছিলেন, ‘কোচ, আমি বোলারদের মিটিংয়ে বসলে ওরা (ভারতীয় বোলাররা) আমাকে পেটাবে!’ পরে একদিন বোলিং দিয়ে ম্যাচসেরা হওয়ার পর সংবাদ সম্মেলনেও বলেছিলেন, ‘আমি বোলার নই। আমার কাজ ব্যাটিং। ওটাই আমার পছন্দ। নেটে তেমন একটা বোলিং করি না। তবে ম্যাচে কয়েকটা ওভার করে দিতে আপত্তি নেই।’

মাহমুদ উল্লাহও মূলত ব্যাটসম্যান। তবে বোলিং নিয়েও তাঁর আগ্রহের কমতি নেই। নেটে বোলিং করেন, ম্যাচেও অধিনায়কের ডাকের অপেক্ষায় থাকেন। নিজে অধিনায়ক হলে তো সেসবেরও বালাই নেই। বিপিএল কিংবা ঢাকা প্রিমিয়ার লিগে একরকম বিশেষজ্ঞ বোলারের ভূমিকাতেই দেখা যায় মাহমুদকে। টি-টোয়েন্টির মারকাটারি ক্রিকেটে খুলনা টাইটানসের নিয়মিত বোলার তিনি। হাই আর্ম করতে তখন অসুবিধা ছিল না। তবু সাইড আর্ম অ্যাকশনে, কখনো বা অদ্ভুত একটা লাফ দিয়ে, আবার ক্রিজের ব্যবহার করে ব্যাটসম্যানকে অস্বস্তিতে রাখেন মাহমুদ। আর ক্রিকেটে সামান্য ভাগ্যও লাগে। বোলার মাহমুদের সঙ্গে সেটি আছেও। আছে বলেই লম্বা জুটি ভাঙার জন্য সময়ে সময়ে মাহমুদকে আক্রমণে আনেন মাশরাফি।

অবশ্য দক্ষিণ আফ্রিকা ও নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে ‘অর্ধেক বোলিং ফিট’ মাহমুদও মূল্যবান মাশরাফির কাছে। এ দুটি দলই স্পিনের সামনে একটু জড়োসড়ো। তার চেয়েও অকাট্য যুক্তি হয়ে দাঁড়িয়েছে ওই ম্যাচ দুটির ভেন্যু ওভাল। লন্ডনের এ মাঠটিতে বোলাররা যে ‘রক্তাক্ত’ হবে, তা একরকম ধরেই নিয়েছে বাংলাদেশ। উইকেট সমান বাউন্সের এবং আউটফিল্ড বুলেট গতির। ফিল্ডারদের বাধা পেরোলেই বাউন্ডারি। ওই উইকেটে কোনো বোলার ওভারপিছু ৬ রান করে দিলেই অধিনায়কের পিঠ চাপড়ানি পাবেন। তো, সেখানে প্রোটিয়া আর কিউই ব্যাটসম্যানদের জন্য বাংলাদেশি টোটকা ধীর গতির বোলাররা। কুইন্টন ডি কক, জেপি দুমিনি, ডেভিড মিলারের জন্য অফস্পিন কার্যকর হওয়ার কথা। নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষেও একই টোটকা, দেরিতে আসা বল উড়িয়ে মারতে শক্তি প্রয়োগ করে মারতে গেলেই সাফল্যের সম্ভাবনা অপেক্ষাকৃত বেশি।

তাই স্কোয়াডের একমাত্র অফস্পিনার মেহেদী হাসানের পাশাপাশি মোসাদ্দেক হোসেনের খণ্ডকালীন বোলিং গুরুত্ব পাচ্ছে দলের বিশ্বকাপ পরিকল্পনায়। আর মাহমুদের সাইড আর্ম অফস্পিনেও চোখ বুজে আস্থা রাখছেন বাংলাদেশ অধিনায়ক।

কালেরকণ্ঠ

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়