ফাতেমা ইসলাম : বাল্যবিয়ে প্রতিহত করতে প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে নীলফামারীর শিক্ষার্থীরা। এ অঞ্চলের মেয়েদের আত্মপ্রত্যয়ী করতে, শিক্ষার হার বাড়াতে এবং বাল্যবিয়ে বন্ধ করতে বিভিন্ন বেসরকারি সংস্থা ও জেলা প্রশাসন নিষ্ঠার সঙ্গে কাজ করছে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা। তারই অনুপ্রেরণায় নীলফামারী জেলার প্রত্যন্ত অঞ্চল জলঢাকার দশম শ্রেণির ছাত্রী বিথী রানী রায় নিজের মাথার চুল কেটে বাল্য বিয়ে বন্ধ করেছে। সময় টিভি
বিথী রানী রায় বলেন, একটা ভাবনা হলো যে আমি যদি চুল কেটে ফেলি তাহলে চুল বড় হতে তো অনেক সময় লাগে। তাই আমার বিয়ে বন্ধ হয়ে যাবে। তাই আমি নবম শ্রেণীর বার্ষিক পরিক্ষার পরে বাসায় গিয়ে চুল কেটে ফেলি।
তার মতো আরও অনেক শিক্ষার্থী আছে যারা বাল্য বিয়ের মতো সামাজিক ব্যাধিকে প্রতিহত করতে জোর চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। কয়েক বছর আগেও যেখানে প্রাথমিক শিক্ষার পরেই ঝড়ে পড়ত অধিকাংশ শিক্ষার্থী। তাদের বাধ্য করা হতো বিয়ের পিঁড়িতে বসতে। পিছিয়ে পড়া এ অঞ্চলের নারীরা এখন শিক্ষায় এগুচ্ছে। স্কুল কলেজে ছাত্রীদের উপস্থিতি বেড়েছে অনেক।
নারী শিক্ষার্থীদের আত্মনির্ভরশীল করে তুলতে, নিজেদের রক্ষায় প্রাথমিক কৌশল শেখাতে এবং স্বাস্থ্য সচেতন করতে একটি বেসরকারি সংস্থা ও জেলা প্রশাসন ২০১৫ সালে প্রত্যন্ত অঞ্চলের স্কুলগুলোতে কাজ শুরু করে। প্রথমে ২৪টি বিদ্যালয়ে ২৫ জন ছাত্রী নিয়ে অ্যাকশন টিম গঠন করা হয়। তাদেরকে মার্শাল আর্ট ও সাইকেল চালানো শেখানো হয়। পরে এই ২৫ জন শিক্ষার্থী নিজ নিজ স্কুলে বাকিদের প্রশিক্ষণ দেয়।
এ অঞ্চলের শিক্ষার হার বৃদ্ধির পাশাপাশি মেয়েদের আত্মপ্রত্যয়ী করতেই বেসরকারি সংস্থা ও জেলা প্রশাসন কাজ করছে।
প্ল্যান ইন্টারন্যাশনালের বিভাগীয় ব্যবস্থাপক ড. হৃষিকেষ সরকার বলেন, বাংলাদেশে ১২ মিলিয়ন মেয়ে শিশুর কাছে পৌঁছাতে চাই। এই লক্ষ্যটাকে অর্জন করার জন্য অন্যান্য প্রকল্পগুলো বাস্তবায়ন করে আসছি।
জেলা প্রশাসক নাজিয়া শিরীন বলেন, অন্য জায়গার তুলনায় এই এলাকায় মেয়ে শিশুর ঝড়ে যাওয়ার প্রবণতা বেশি, আর তার কারণ হলো বাল্যবিবাহ। আর এই নিয়েই আমরা কাজ করে যাচ্ছি।
জলঢাকা ও ডোমার উপজেলার প্রায় ৩ হাজার শিক্ষার্থী আত্মরক্ষাকারী মার্শাল আর্টের প্রাথমিক শিক্ষা নিয়েছে। এ অঞ্চলের প্রায় ৬০ ভাগ শিক্ষার্থী বাইসাইকেলে চড়ে স্কুলে যায়। সম্পাদনা : কায়কোবাদ মিলন
আপনার মতামত লিখুন :