সাইফুদ্দিন আহমেদ নান্নু : দুর্ভাগ্য! শিক্ষক পরিচয়ের চেয়ে বিসিএস ক্যাডার পরিচয়টাই যাদের কাছে গৌরবের, অহংকারের তারাও শিক্ষকতায় আছেন। পাবনার সরকারি বুলবুল কলেজের শিক্ষক লঞ্ছনার মূল আসামির গ্রেপ্তার প্রসঙ্গে একটি স্ট্যাটাসের শিরোনাম নিয়ে একটি বিতর্ক দেখার সৌভাগ্য হয়েছে ১৮ মে। স্ট্যাটাসটির শিরোনামটি ছিলো : ‘বিসিএস শিক্ষক কর্মকর্তার উপর হামলাকারী জুন্নুন কসাই গ্রেপ্তার’। স্ট্যাটাসদাতা সরকারি কলেজের একজন শিক্ষক। বিতর্কের সূচনা হয় মন্তব্যের ঘরে একজনের তীর্যক একটি মন্তব্য নিয়ে। মন্তব্যের সারমর্ম মোটামুটি এমন : ‘বিসিএস ক্যাডার পরিচয়টা সবার আগে না লিখে আগে শিক্ষক,পরে বিসিএস ক্যাডার পরিচয়টা লেখাটাই যৌক্তিক। প্রয়োজনে শিক্ষক পরিচয় আগে লিখে ব্র্যাকেটেও ক্যাডার পরিচয়টা দেয়া যায়।’
ব্যাস, আর যায় কোথায়, দেশের বিভিন্ন সরকারি কলেজে কর্মরত বেশ ক’জন বিসিএস ক্যাডার শিক্ষক এই বিতর্কে ঝাঁপিয়ে পড়েন। তারা যা বলেছেন তা বিস্ময়কর! তারা নিজেদের শিক্ষক পরিচয়ের চেয়ে বিসিএস ক্যাডার পরিচয়কে গৌরবজনক মনে করে মন্তব্য করেন। বিস্ময়কর হচ্ছে এদের মানসিকতা। এরা নিজেদের ‘বিসিএস শিক্ষক কর্মকর্তা’ বলেন। মাথাই আসে না একজন শিক্ষক একইসঙ্গে কর্মকর্তা হন কি করে! শিক্ষকতা পেশায় অর্থ-বিত্ত নেই সত্য, কিন্তু চেতনায়, আদর্শে যিনি শিক্ষক তিনি শত দৈন্যে, শত প্রতিকূলতায়ও নিজের শিক্ষক পরিচয় হারাতে চান না। যারা শিক্ষক পরিচয়কে গৌরবের, অহংকারের মনে করেন না তারা আসলে শিক্ষকই নন। তারা মূলত উচ্চ বেতনের সরকারি কর্মচারী। এদের শিক্ষকতা ছেড়ে অন্য পেশায় চলে যাওয়া উচিত। আমি চ্যালঞ্জ দিয়ে বলতে পারি, এই মানসিকতার বিসিএস শিক্ষা ক্যাডারের শিক্ষকদের অ্যাডমিন ক্যাডারে বদলির সুযোগ দিলে এরা এক সেকেন্ডও অপেক্ষা করবে না। জামাকাপড় ফেলে এ্যাডমিন ক্যাডার হবার জন্য দৌড়াবে। ফেসবুক থেকে