শিরোনাম
◈ কুড়িগ্রামে অর্থনৈতিক অঞ্চলের স্থান পরিদর্শন করে দেশে ফিরলেন ভুটানের রাজা ◈ জনগণকে সংগঠিত করে চূড়ান্তভাবে বিজয় অর্জন করতে হবে: মির্জা ফখরুল ◈ উন্নয়ন সহযোগীদের একক প্ল্যাটফর্মে আসা প্রয়োজন: পরিবেশমন্ত্রী ◈ জিয়াউর রহমানের সময়ই দেশে বিভেদের রাজনীতির গোড়াপত্তন হয়: ওবায়দুল কাদের  ◈ এলডিসি উত্তরণের পর সর্বোচ্চ সুবিধা পাওয়ার প্রস্তুতি নিতে প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশ ◈ ড. ইউনূসকে নিয়ে শিক্ষামন্ত্রীর বক্তব্য দুঃখজনক: আইনজীবী  ◈ ত্রিশালে বাসের ধাক্কায় বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রসহ অটোরিকশার ৩ যাত্রী নিহত ◈ জলদস্যুদের হাতে জিম্মি জাহাজ মুক্ত করার বিষয়ে  সরকার অনেক দূর এগিয়েছে: পররাষ্ট্রমন্ত্রী  ◈ এসএসসি পরীক্ষায় আমূল পরিবর্তন, বদলে যেতে পারে পরীক্ষার নামও ◈ পঞ্চম দিনের মতো কর্মবিরতিতে ট্রেইনি ও ইন্টার্ন চিকিৎসকরা

প্রকাশিত : ২২ মে, ২০১৯, ০২:০১ রাত
আপডেট : ২২ মে, ২০১৯, ০২:০১ রাত

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

এরশাদ অজানা ভয়ে কাতর থাকছেন সবসময়, পাশে এরিক রয়েছেন সর্বক্ষণ

দেবদুলাল মুন্না : গত ২০ মার্চ ৯০ বছরে পা দিয়েছেন এরশাদ। গত কয়েক বছরই অসুস্থতা তার সঙ্গ। এখন যেন মৃত্যুভয়ে ভীত। কোথায় তার দাফন হবে , তার ইচ্ছা কোথায় সেটি পছন্দ করার অভিমত জানিয়েছেন তার স্বজনরা ইতোমধ্যে। পত্রিকায় এ নিয়ে খবরও বেরিয়েছে। তিনদিন আগের একটি ঘটনা। ওইদিন এরশাদকে মুরগির মাংস খেতে দেওয়া হয়েছিল। খাওয়ার একপর্যায়ে তার দাঁতের ভিতরে মুরগির মাংসের টুকরো আটকে যায়। তিনি অস্বস্তিতে গোঙাতে থাকেন, চিৎকার শুরুকরেন। কিন্তু সেই মুরগির টুকরা তার দাঁতের ফাঁক থেকে বের করে দেওয়ার মতো সেখানে কেউ ছিলেন না। ছেলে এরিক বাবার চিৎকার শুনে ‘ড্যাডি, আর ইউ ওকে, আর ইউ ওকে’- বলে বারবার ছুটে গেলেও ঠিক বুঝে উঠতে পারেননি আসলে কি ঘটেছে।’পরে মা বিদিশা সিদ্দিককে ফোন করেন এরিক।বিদিশা সব শুনে এরিককে পরামর্শ দেন ।এ তথ্য জানিয়েছেন বিদিশা সিদ্দিক।

গত বছরের মাঝামাঝি বেড়ে যায় তার অসুস্থতা। নানা সময়ে ঢাকা সিএমএইচ, ভারত ও সিঙ্গাপুরে তাকে নিতে হয় চিকিৎসা। গত কয়েক মাসে তার অবস্থা কিছুটা স্থিতিশীল থাকলেও পুত্র এরিক, ভাই জিএম কাদের ও পরিবারের সদস্যরা ছাড়া বলতে গেলে দল ও এক সময়ের ঘনিষ্ঠ কেউই তার পাশে নেই। যদিও এর মধ্যে একের পর এক দলের প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে সিগনেচার করতে হয়েছে তাকে। সকালে-বিকালে বারবার পাল্টাতে হয়েছে সিদ্ধান্ত। দুর্বল ও কাঁপা কাঁপা হাতে সিগনেচার করা এ সব সিদ্ধান্ত রাজনৈতিক মহলে নানা বিতর্ক, এমনকি হাস্যরসের জন্ম দিয়েছে।সূত্রটি জানায়, এ সব সিদ্ধান্ত অনেক ক্ষেত্রেই এরশাদকে ব্যবহার করে করা হয়েছে। এক্ষেত্রে তাদের স্বার্থটাই ছিল মুখ্য। তবে এরশাদ যে কারণে বারবার সিদ্ধান্ত পাল্টেছেন তার পেছনে কাজ করেছে নিজ পরিবারের মধ্য থেকেই কাউকে জাতীয় পার্টির উত্তরাধিকার মনোনীত করতে। জিএম কাদেরকে কো-চেয়ারম্যান করার মধ্য দিয়ে এ দুশিচন্তাথেকে তিনি অনেকটাই নির্ভার হতে পেরেছেন। এ ছাড়া তার অবশেষ স্থাবর-অস্থাবর সম্পত্তি নিয়ে তিনি ট্রাস্ট গঠন করেছেন।

এ ট্রাস্টে নিজেসহ ট্রাস্টি করেছেন ছেলে এরিক এরশাদ, একান্ত সচিব মেজর (অব.) খালেদ আক্তার, চাচাতো ভাই মুকুল ও ব্যক্তিগত কর্মকর্তা মোহাম্মদ জাহাঙ্গীরকে। সর্বশেষ তিনি তার কবরের জন্য জায়গা খুঁজছেন। এক্ষেত্রে তার প্রথম পছন্দ ঢাকা, পরের পছন্দ রংপুর। তবে সেটা হতে হবে মসজিদ বা মাদ্রাসার পাশে।জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যানের ঘনিষ্ঠ ওই সূত্র জানিয়েছে, এরশাদের শারীরিক অবস্থা এখন শোচনীয় পর্যায়ে। হুইল চেয়ারে তাকে চলাফেরা করতে হয়। কথা জড়িয়ে যায়। বিছানাতেই তাকে মলত্যাগ করতে হয়। তবে চিন্তাভাবনা সক্রিয়।রাজধানীর বারিধারায় প্রেসিডেন্ট পার্কের বাড়িতেই কাটছে তার সময়। তবে মধ্যে ভয়ে রাতে বাসায় না ঘুমিয়ে হাসপাতালে ঘুমাতেন। তার মধ্যে দীর্ঘদিন থেকে একধরণের আতঙ্ক কাজ করছে। তবে সেটা কি জন্য স্বজনরা সুনির্দিষ্ট করে বলতে পারেন না।তাকে দেখাশোনা করছেন পুরনো কর্মচারী ও গৃহকর্মী ওয়াহাব, সাত্তার, বাদশা, নীপা ও রুবি।

নিঃস্বার্থভাবেই সাবেক এই রাষ্ট্রপতির দেখভাল করছেন তারা। কিন্তু বার্ধক্য বয়সে পরিবারের ঘনিষ্ঠ কারোর যে সার্বক্ষণিক যত্নআত্তি তা থেকে বঞ্চিত তিনি। ছোটভাই জিএম কাদেরসহ পরিবারের সদস্যরাই মূলত এখন তার খোঁজখবর রাখছেন। তবে তাদের কারও বয়সই কম নয়। সবাইকে নিজের নিজের যত্ন নিয়ে, নিজেদের কাজ থেকে সময় বাঁচাতে হয়। কিন্তু দল বা এরশাদের কাছ থেকে নানা সময়ে সুবিধা পাওয়া মানুষদের কেউই বলতে গেলে তার খোঁজখবর রাখেন না।সাবেক স্ত্রী বিদিশার গর্ভেরএকমাত্র পুত্র এরিকই এখন তার সার্বক্ষণিক সঙ্গী আর ‘অন্ধের যষ্ঠী’র মতো বাঁচার অবলম্বন। কিন্তু ১৯ বছর বয়সী এরিক স্পেশাল চাইল্ড মানে বিশেষভাবে সক্ষম। মানসিক প্রতিবন্ধকতা থাকায় স্বাভাবিকভাবে এরিক বৃদ্ধ ও অসুস্থ বাবার পুরোটা দেখভাল করতে পারে না। কিন্তু অসম বয়সী বাবা-ছেলের রসায়ন মমত্বে ভরা। এরশাদ ছেলেকে সঙ্গে নিয়েই ঘুমাতে যান। আর ছেলেও বাবাকে কাছছাড়া করতে নারাজ। এমনকি অসুস্থ বাবাকে রেখে স্কুলে যেতেও অনাগ্রহ এরিকের।এরিকও সারাক্ষণ থাকছেন এরশাদের পাশাপাশি।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়