আশরাফুল হক : মাধুরী দীক্ষিত ভারতীয় চলচ্চিত্র জগতের বিখ্যাত ও জনপ্রিয় অভিনেত্রী। অনেকে তাকে বলিউডের সেরা অভিনেত্রী বলে মনে করেন। ১৯৮৪ সালে ‘অবোধ’ সিনেমার মাধ্যমে অভিষেক ঘটান এবং ১৯৮৮ সালে ‘তেজাব’ ছবির মাধ্যমে দর্শক মহলের সর্বত্র সাড়া ফেলেন। অভিনয়ের পাশাপাশি সহজাত সৌন্দর্যচর্চা ও নৃত্যকলায় পারদর্শী তিনি। ১৯৮০ ও ১৯৯০’র পুরো দশকজুড়ে মাধুরী হিন্দি সিনেমার নেতৃত্বদানকারী অভিনেত্রী এবং শীর্ষস্থানীয় নৃত্যশিল্পী হিসেবে একচ্ছত্র প্রাধান্য ও প্রভাব বিস্তার করেন। তিনি বেশকিছু সিনেমায় নর্তকী চরিত্রে অভিনয় করেছেন। এ অভিনেত্রীর ব্যবসা সফল সিনেমার সংখ্যা অনেক। মাধুরী প্রায়ই নায়িকা হিসেবে বিভিন্ন গণমাধ্যমের সংবাদ শিরোনামে জায়গা করে নেন। সিনেমায় অনবদ্য অবদানের জন্য ২০০৮ সালে ভারত সরকার তাকে পদ্মশ্রীতে ভ‚ষিত করে। দীক্ষিত ডিভাই চাইল্ড হাইস্কুল এবং মুম্বাই বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনা করে মাইক্রোবায়োলজিস্ট হতে চেয়েছিলেন।
মাধুরীর উল্লেখযোগ্য সিনেমগুলোর মধ্যে ‘রাম-ল²ণ’ (১৯৮৯), ‘পারিন্দা’ (১৯৮৯), ‘ত্রিদেব’ (১৯৮৯), ‘কিশেন কানহাইয়া’ (১৯৯০) ও ‘প্রহর’ (১৯৯১) অন্যতম। এ সিনেমাগুলোয় একত্রে অভিনয়ের কারণে অনিল কাপুরের সঙ্গে ভালো বন্ধুত্ব হয়। ইন্দ্র কুমারের ‘দিল’ (১৯৯০) সিনেমায় মাধুরী আমির খানের সঙ্গে অভিনয় করেন। এতে মাধুরী মধু মেহরা নামে এক ধনী ও উগ্র মেজাজের বালিকা হিসেবে রাজার সঙ্গে প্রেমে পড়েন এবং তাকে বিয়ে করে বাড়ি ত্যাগ করেন। সিনেমাটি ওই বছর অন্যতম বৃহৎ বক্স-অফিস হিট করে এবং অনবদ্য অভিনয়ের জন্য মাধুরী ফিল্মফেয়ারে সেরা অভিনেত্রীর পুরস্কার পান। ‘দিল’ সিনেমার ব্যবসায়িক সাফল্য অনুসরণ করে ‘সাজন’ (১৯৯১), ‘বেটা’ (১৯৯২), ‘খলনায়ক’ (১৯৯৩), ‘হাম আপকে হে কৌন’ (১৯৯৪) ও ‘রাজা’ (১৯৯৫) অনেক জনপ্রিয়তা পায়। ‘বেটা’ মাধুরীকে দ্বিতীয়বার ফিল্মফেয়ার পুরস্কার এনে দেয়। ‘হাম আপকে হে কৌন’ সিনেমাটি হিন্দি সিনেমার ইতিহাসে বৃহত্তম ব্যবসায়িক সাফল্য পায়। অর্থের অঙ্কে ভারতে ৬৫ কোটি রূপি এবং বহির্বিশ্বে ১৫ কোটি রূপি আয় করে। সিনেমাটি মাধুরীকে তৃতীয়বার ফিল্মফেয়ার পুরস্কার এনে দেয়।
একটি অসফল বছরের পরে, যশ চোপড়ার ‘দিল তো পাগল হ্যায়’ (১৯৯৭) সিনেমায় পূজা চরিত্রে ফিরে আসেন। সিনেমাটি সৃষ্টিশীলতা ও বাণিজ্যিকভাবে জাতীয় পর্যায়ে ব্যাপক সাফল্য পায় এবং দীক্ষিতকে চতুর্থবার ফিল্মফেয়ার এনে দেয়। ২০০২ সালে সঞ্জয় লীলা বানশালীর ‘দেবদাস’ সিনেমায় শাহরুখ খান ও ঐশ্বরিয়া রাইয়ের সঙ্গে অভিনয় করেছিলেন। অসামান্য অভিনয় শৈলী ও অপূর্ব দক্ষতার জন্য ফিল্মফেয়ার সেরা পার্শ্ব অভিনেত্রীর পুরস্কার লাভ করেন তিনি। সিনেমাটি বিশ্বব্যাপী ব্যাপক মনোযোগ আকর্ষণ করেছিলো এবং কান চলচ্চিত্র উৎসবে মনোনয়ন দেয়া হয়েছিলো। মাধুরী দীক্ষিত ১৯৬৭ সালের ১৫ মে ভারতের মুম্বাইয়ে জন্ম গ্রহণ করেন। ফেসবুক থেকে
আপনার মতামত লিখুন :