ইসমাঈল ইমু : ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগার কেরানীগঞ্জে দূর দূরান্ত থেকে আসা দর্শনার্থীরা তাদের স্বজনদের সঙ্গে সাক্ষাতে এসে চরম দুর্ভোগে পড়ছেন। সাক্ষাতকেন্দ্রে একসঙ্গে অনেক লোক থাকায় কেউ কারো কথা শুনতে পায়না। ইশারায় যে যতটুকু বুঝে নেয় তাতেই স্বস্তি খুঁজে পান। এছাড়াও একজন বন্দির সঙ্গে সাক্ষাতে দীর্ঘ সময় অপেক্ষা করে অনেক সময় সাক্ষাতই মেলেনা।
তবে কারা কর্তৃপক্ষ বলছে, সাক্ষাত কেন্দ্র থেকে স্লিপ পেয়ে বন্দিদের মাইকে ডাকা হয়। কিন্তু সাততলা ভবনের উপরে থাকা বন্দিরা মাইকের শব্দ ঠিকভাবে শুনতে পায়না অনেক সময়। সংশ্লিষ্ট ওয়ার্ডের রাইটারের উপর নির্ভর করতে হয় সকল বন্দিকে। তাছাড়া খাবার ও প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র দেয়ার ক্ষেত্রেও বিড়ম্বনা পড়তে হয় স্বজনদের। শুক্রবার সরেজমিনে এ অবস্থা লক্ষ করা গেছে।
ঢাকা-মাওয়া মহাসড়কের পাশে দক্ষিণ কেরানীগঞ্জের রাজেন্দ্রপুরে গড়ে তোলা হয়েছে নতুন ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগার। ২০১৬ সালের ২৯ জুলাই পুরান ঢাকার নাজিমউদ্দিন রোড থেকে সকল বন্দিকে সেখানে স্থানান্তর হয়। কিন্তু কারাগারের জায়গা বদল হলেও নতুন কারাগারের সাক্ষাতে ভোগান্তি কমানোর উদ্যোগ নেয়া দরকার বলে মনে করেন দর্শনার্থীরা।
মিরপুর থেকে আসা মামুন নামের এক দর্শনার্থী সকাল সাড়ে ৯ টায় এসেছেন তার ভাইয়ের (বন্দি) সঙ্গে সাক্ষাত করতে। সকাল ১১টা পার হলেও তিনি সাক্ষাত পাননি। করারক্ষিরা তাকে অপেক্ষা করতে বলেছেন।
এছাড়াও আরও বেশকজন দর্শনার্থী অভিযোগ করেন, প্রধান সড়ক থেকেই কয়েকজন দালাল তাদের পথ আগলে আগে সাক্ষাত করিয়ে দেয়ার কথা বরে মোটা অংকের টাকা দাবি করেন। অনেকেই দালালের কাছে দাবিকৃত টাকা দিয়ে দীর্ঘ সময় ধরে অপেক্ষা করছেন। আর সাক্ষতাকেন্দ্র ছোট হওয়ায় প্রচন্ড গরমে একসঙ্গে অনেক দর্শনার্থীর হাসফাস অবস্থা লক্ষ করা গেছে। বিশেষ করে বয়স্ক লোকদের রোদের মধ্যে দাড়িয়ে অপেক্ষা করতে দেখা গেছে। কারাগারের প্রধান ফটকের বাইরে ছোট একটি সামিয়ানা টানানোয় রোদের মধ্যে গরমের তীব্রতা এড়াতে অনেকেই আশপাশের গাছের নিচে অপেক্ষা করেন। নতুন কারাগারে একসঙ্গে দেখা করতে পারছেন ৩২ জন সাক্ষাতপ্রার্থী। পুরানো কারাগারে একসঙ্গে সাক্ষাৎ করতে পারতো ১৩৬ জন।
এদিকে সাক্ষাৎকক্ষে বন্দি ও স্বজনের মাঝখানের লোহার খাঁচার সঙ্গে সেঁটে দেয়া হয়েছে কাচের দেওয়াল। কাচের দেয়ালের গায়ে নির্দিষ্ট দূরত্বে গোলাকার ফুটো থাকলেও তা শব্দ প্রবাহে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করেছে। আবার ওই কাচও কিছুটা অস্বচ্ছ। ভালোভাবে দেখাও যায় না। বন্দি ও সাক্ষাৎ প্রার্থীরা উচ্চস্বরে কথা বলার পরও সহজে কেউ কারও কথা শুনতে পায়না। দর্শনার্থীদের অনেকেই সাক্ষাতকেন্দ্রের কাচ সরানোর দাবি জানান।
কারা অধিদপ্তর সূত্র জানায়, নতুন কারাগারে বেশ কিছু সমস্যা এখনও সমাধান করা যায়নি। তবে দ্রুততার সঙ্গে তা সমাধানের চেষ্টা চলছে। সেখানে গ্যাসের চুলা না থাকায় লাকড়ির রান্নাবান্নায় ঝামেলা পোহাতে হচ্ছে। মাইকে এখন অনেক বন্দি ডাক শুনতে পাচ্ছেন না। এজন্য ইন্টারকম টেলিফোন সংযোজন করা হবে।
আপনার মতামত লিখুন :