জাবের হোসেন : প্রতি এক বিঘা (৫৬ শতাংশ) জমিতে ইরি-বোরো আবাদে প্রায় ১১হাজার টাকা করে ঘাটতি হচ্ছে বলে দাবি করছেন টাঙ্গাইলের কৃষকরা। এতে করে তারা ধান চাষে আগ্রহ হারিয়ে ফেলছেন। শ্রমিক সংকট, শ্রমিকের দাম বেশি এবং ধানের দাম কম থাকায় টাঙ্গাইলের প্রত্যন্ত অঞ্চলের কৃষকের পাকা ইরি-বোরো ধান এখনও জমিতেই পড়ে রয়েছে। সব মিলিয়ে কৃষকরা এখন দিশেহারা হয়ে পড়েছেন। বাংলা ট্রিবিউন
ধানের কম দাম ও শ্রমিক সংকটের কারণে ধান কাটতে না পারার হতাশা থেকে জেলার কালিহাতী উপজেলার পাইকড়া ইউনিয়নের বানকিনা এলাকার আব্দুল মালেক ও বাসাইল উপজেলার কাশিল গ্রামের নজরুল ইসলাম খান স¤প্রতি তাদের নিজ পাকা ধান ক্ষেতে আগুন দিয়ে প্রতিবাদ জানান। জেলার পাশাপাশি দেশের বিভিন্ন জেলায় কৃষকরা ধানের কম দাম নিয়ে প্রতিবাদ জানাতে মানববন্ধন রাস্তায় ধান ছড়িয়ে প্রতিবাদসহ বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করছেন।
প্রত্যন্ত অঞ্চলের কৃষকদের সঙ্গে কথা বললে তারা জানান, ইরি-বোরো চাষে এক বিঘা জমি প্রস্তুত করতে অন্তত ছয় জন শ্রমিকের প্রয়োজন হয়। ওই সময় শ্রমিকের মজুরি থাকে ৪৫০ থেকে ৫০০টাকা করে। ট্রাক্টর বাবদ খরচ হয় প্রায় ১৮শ থেকে দুই হাজার টাকা। বীজ ও বীজ তলা প্রস্তুত করতে শ্রমিকের মূল্যসহ প্রায় ১৫শ টাকা খরচ হয়। ধানের চারা রোপণ করতে আট জন শ্রমিকের প্রয়োজন হয়। এই আট জন শ্রমিকের খাবারসহ প্রায় পাচ হাজার টাকা খরচ হয়।
এরপর ধান ক্ষেত থেকে ঘাস পরিষ্কার করতে অন্তত চার জন শ্রমিক লাগে। এই চার জন শ্রমিকের খাবারসহ ২৫শ টাকার মতো খরচ হয়ে থাকে। ধান কাটতে আবার অন্তত ১০জন শ্রমিকের প্রয়োজন হয়। ধান কাটার শ্রমিকের মজুরি এই সময়ে প্রতিজন ৮শ থেকে ৯শ টাকা পর্যন্ত থাকে। এই ১০জন শ্রমিকের খাবারসহ প্রায় ১০হাজার টাকা খরচ হয় দিনে। অপরদিকে সার বাবদ প্রায় ৩হাজার টাকা খরচ হয়। সব মিলিয়ে বীজ তলা প্রস্তুতসহ কৃষকের সোলানী ধান গোলায় তুলতে প্রায় ৩০জন শ্রমিকের প্রয়োজন হয়। আর এই ৩০জন শ্রমিকের খাবারসহ সব মিলিয়ে কৃষকের খরচ হচ্ছে ২৭ হাজার টাকার ওপরে।
এদিকে ওই এক বিঘা জমিতে ধান হচ্ছে ২৬ থেকে ২৮মণ করে। আর ভালো ফলন হলে ৩০ মণও হয়। ধানের বর্তমান মূল্য ৫০০ থেকে ৫৫০ টাকা করে। ৫৫০ টাকা হিসেবে ২৮মণ ধানের মূল্য ১৫ হাজার ৪০০ টাকা। কৃষকের ২৭ হাজার টাকা খরচ হলে এক বিঘা জমিতে কৃষকের প্রায় ১১ হাজার টাকা করে লোকসান হচ্ছে। সম্পাদনা-কায়কোবাদ
আপনার মতামত লিখুন :