অশোকেশ রায়: মধুমাস জৈষ্ঠ্যের মিষ্টি ফলের বারতা নিয়ে রাজধানীতে আসতে শুরু করেছে আম ও লিচু। তবে কেবলই আগাম জাতের গুটি আম ও কাঁচা-পাকা লিচু গাছ থেকে পাড়া শুরু হওয়ায় সরবরাহ কম। রমজান মাস চলায় বেচা-কেনাও কম। এ কারণে দামও কিছুটা বেশি। বাংলানিউজ
আমচাষি ও ব্যবসায়ীরা বলছেন, সরবরাহ কম ও দাম বেশি থাকায় ক্রেতাও তুলনামূলক কম। এমনিতেই স্বাদ কম হওয়া আঁশযুক্ত গুটি আম ও মৌসুম শুরুর প্রথম দিককার লিচুর ক্রেতা কম। এর ওপর দাম বেশি হওয়ায় সাধারণ ক্রেতারা কেবল দর-দাম করেই চলে যাচ্ছেন। তবে এখন গুটি আম দিয়ে বেচা-কেনা শুরু হলেও ঈদের পর আমের ব্যবসা জমে উঠবে বলে প্রত্যাশা তাদের।
রাজশাহী-চাঁপাইনবাবগঞ্জসহ দেশের বিভিন্ন জেলা-উপজেলার বাগানগুলোতে চলছে আম ভাঙার উৎসব। দেশজুড়ে পাড়া হচ্ছে হলদে-লাল রঙের লিচুও। তবে সংখ্যায় কম।
বৃহস্পতিবার রাজশাহীর আড়তগুলোতে গুটি আম পাইকারি বিক্রি হয় ১২শ থেকে ১৩শ টাকা মণ। আর খুচরা বাজারে তা বিক্রি হচ্ছে ৫০ থেকে ৬০ টাকা কেজি। ঢাকায় অবশ্য তার দাম আরও বেশি।
অন্যদিকে আকার, মান ও পরিপক্বতা ভেদে পাইকারিতে এক হাজার লিচু বিক্রি হচ্ছে ১-৩ হাজার টাকা পর্যন্ত। খুচরা বাজারে ১০০ লিচুর দাম হাঁকা হচ্ছে ৪০০ টাকা পর্যন্ত। আকার, স্বাদ, সঠিক গণনার নিশ্চয়তা বুঝে দরকষাকষির পর রফা হচ্ছে ২৫০-৩০০ টাকায়।
রাজধানীর মিরপুরে রিকশাভ্যানে আম ও লিচু বিক্রি করছিলেন কলিম উল্লাহ। তিনি বলছিলেন, ‘আজই প্রথম লিচু কিনে এনেছি। এগুলো আগাম জাতের। পাবনা-দিনাজপুরের উন্নত জাত ও বেদানা লিচু আরও কিছুদিন পওে আসবে। ক্রেতাদের একটি করে খাইয়ে স্বাদের গ্যারান্টি দিচ্ছি। একদাম ২৫০ টাকা। আর কেবলই আসা আমের কেজি চাইছি ১২০ টাকা।’
রাজশাহীর ব্যবসায়ীরা বলছেন, প্রশাসনের বেঁধে দেওয়া সময় মেনেই আম পাড়া শুরু হয়েছে। বুধবার (১৫ মে) থেকে আগাম জাতের গুটি আম ভাঙছেন চাষিরা। জাত আম গোপালভোগ এখনও ভাঙার অনুমতি নেই। ভালো মানের সুস্বাদু আমগুলো গাছে পরিপক্ব হতে আরও সময় বাকি আছে। যে কারণে এখনই তড়িঘড়ি করে বাগান থেকে আম ভাঙতে চাইছেন না চাষিরা। ঈদের পর ভালো দামের আশায় এখনও আমের পরিচর্যা নিয়েই ব্যস্ত সময় পার করছেন তারা।
রাজশাহীর বড় মোকাম পুঠিয়া উপজেলার বানেশ্বর বাজারের আম ব্যবসায়ী হোসেন আলী বলেন, এখন রমজান মাস চলছে। তার মধ্যে তাপদাহও বয়ে যাচ্ছে। ঈদের পর আম নামালে ভালো দাম পাওয়া যাবে। ওই সময় রাজশাহীর বাজারগুলো আমে ভরে উঠবে।
রাজশাহীতে সাধারণত সবার আগে পাকে গুটি জাতের আম। এবার জেলা প্রশাসনের সিদ্ধান্ত অনুসারে ১৫ মে থেকে গুটি আম নামাতে পারছেন চাষিরা। আর উন্নতজাতের আমগুলোর মধ্যে গোপালভোগ ২০ মে, রানিপছন্দ ২৫ মে, খিরসাপাত বা হিমসাগর ২৮ মে এবং লক্ষণভোগ বা লখনা নামানো যাবে ২৬ মে থেকে। এছাড়া ল্যাংড়া আম ৬ জুন, আমরূপালি ও ফজলি ১৬ জুন আর সবার শেষে ১৭ জুলাই থেকে নামানো যাবে আশ্বিনা জাতের আম।
আপনার মতামত লিখুন :