অশোকেশ রায়: শিশুদের ওপর তীব্র পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ার ঘটনা সামনে আসার পর রাষ্ট্রায়ত্ত ওষুধ কোম্পানি এসেনসিয়াল ড্রাগস কোম্পানির (ইডিসিএল) চার ধরনের ওষুধ শিশুদের ওপর ব্যবহার করা বন্ধ রেখেছে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ (রামেক) হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। ডেইলি স্টার বাংলা
ওষুধ প্রয়োগের পর দুই থেকে আট বছর বয়সী ১৪ শিশুর পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া হওয়ায় রোববার থেকে হাসপাতালটিতে দুই ধরনের এন্টিবায়োটিক, একটি এন্টাসিড ও একটি ব্যথানাশক (সেফট্রিয়াজোন, ফ্লুকক্সাসিলিন, র্যানিসন ও বুটাপেন) শিশুদের দেওয়া হচ্ছে না।
সমস্যার কারণ জানতে ওষুধগুলো পরীক্ষা করে দেখা হবে জানিয়ে হাসপাতালটির পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল জামিলুর রহমান বলেন, ‘কী কারণে পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া হয়েছে তা বের করতে মেডিসিন বিভাগের প্রধান অধ্যাপক মোহাম্মদ হাসান তারিকের নেতৃত্বে কমিটি করে দেওয়া হয়েছে। যত দ্রুত সম্ভব তাদের প্রতিবেদন দিতে বলা হয়েছে।’
মেডিসিন বিভাগের এই অধ্যাপক বলেন, ‘পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ার কারণেই শিশুদের অবস্থার অবনতি হয়েছিল বলে আমাদের প্রাথমিক ধারণা। এটা ওষুধ থেকে হতে পারে আবার ওষুধ প্রয়োগে ব্যবহৃত সুই, সিরিঞ্জের মতো যন্ত্রপাতি থেকেও হতে পারে।
সকল ওষুধ বিশেষ করে ইনজেকশনের ক্ষেত্রে স্বাভাবিকভাবেই কিছুমাত্রায় পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া হয় উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘রোগীর দেহে ওষুধের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া বিরল কোনো ঘটনা নয়। কিন্তু শিশুদের মধ্যে ধারাবাহিকভাবে যে ধরনের প্রতিক্রিয়া দেখা গেছে, তা অস্বাভাবিক। এর পেছনের কারণটা আমাদের খুঁজে বের করতে হবে।’
শনিবার রাত দশটার কিছুক্ষণ পর রামেক হাসপাতালের শিশু ওয়ার্ডে ভর্তি কয়েকশো শিশুর মধ্যে ১৪ জনের অবস্থার অবনতি ঘটে। এই শিশুদের সবাইকে ইডিসিএল’র ওই ওষুধগুলো দেওয়া হয়েছিল। বেশিরভাগ শিশুর ক্ষেত্রেই ওষুধ দেওয়ার পর খিচুনি শুরু হয় ও শরীরের তাপমাত্রা বেড়ে যায়। ডাক্তার এসে চিকিৎসা শুরু করতে আধঘণ্টা লেগে যায়। ইনজেকশনের মাধ্যমে আরও ওষুধ দেওয়ায় প্রায় ঘণ্টাখানেক পর শিশুদের অবস্থা স্বাভাবিক হয়।
নগরীর বিনোদপুরের আট বছরের শিশুর মা আনিকা ঠাকুর বলেন, ‘ডাক্তারদের জন্য আমরা চিৎকার চেচামেচি করছিলাম। কয়েকজন অভিভাবক কাঁদতে শুরু করেন। পরিস্থিতি এমন পর্যায়ে যায় যে, পুলিশ ডাকতে হয় হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে। সিনিয়র ডাক্তাররা আসার পর শিশুদের অবস্থা ভালোর দিকে গেলে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়।’
আপনার মতামত লিখুন :