সোহেল রানা,মৌলভীবাজার প্রতিনিধি : মৌলভীবাজার সদর উপজেলার প্রেমনগর চা বাগানের ভারপ্রাপ্ত ব্যবস্থাপক বাহাউদ্দিন লিটনের বিরুদ্ধে চা বাগানের সেকশনের জমি লীজ দেওয়াসহ একাধিক দূর্নীতির অভিযোগ উঠেছে। এছাড়া বাগানের কতিপয় শ্রমিক দিয়ে চা বাগানের চা পাতা বিক্রির মোটা একটি অংশ নিজ পকেটে ঢুকিয়ে নিরীহ চা শ্রমিকদের হয়রানী করছেন বলেও শ্রমিকদের অভিযোগ। এ নিয়ে প্রেমনগর চা বাগানের সাধারণ শ্রমিকদের মাঝে চাপা উত্তেজনা বিরাজ করছেন।
চা শ্রমিকরা জানান,বাহাউদ্দীন লিটন প্রেমনগর চা বাগানে যোগদানের পর থেকে প্রতিষ্ঠান ও চা শ্রমিকদের স্বার্থের চেয়ে নিজের স্বার্থ হাসিলে নানান দূর্নীতিতে জড়িয়ে পড়েন। বিশেষ করে চা বাগানের বিভিন্ন সেকশনে ছায়া দানকারী সেটট্রির নতুন চারা রোপন ও জঙ্গল পরিস্কারের নামে কোম্পানীর লাখ লাখ টাকা উত্তোলন করা হলেও সেকশনে কয়েকটি চায়ের চারা রোপন করা হলেও কখনো সেকশনের জঙ্গল পরিস্কার করানো হয় না। চা শ্রমিকরা ব্যবস্থাপকের এসব দুর্নীতিসহ চা পাতা পাচারের ঘটনার প্রতিবাদ করলে প্রতিবাদকারী চা শ্রমিকদের দমিয়ে রাখতে তাদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করে থাকেন বলে চা শ্রমিকরা জানান।
বাগান শ্রমিক আজমান আলী,মেহেদী হাসান,হোসেন,দুলাল, শাহআলম জানান,সরকারের জমি বন্দোবস্ত (লীজের) শর্তাবলী অমান্য করে স্থানীয় প্রভাবশালী একটি মহলের কাছে চা বাগানের ২২নং সেকশনের প্রচুর জমি মোটা অংকের টাকার বিনিময়ে তিনি লীজ দিয়েছেন। চা বাগানের বন্দোবস্তোর জমি সাব লীজ দেওয়ার পর থেকে স্থানীয় ওই প্রভাবশালী মহলের সদস্যদের নিয়ে চা বাগানের বাংলোয় প্রায় সময় নারী আর মদ নিয়ে আমোদ ফুর্তিতে মেতে থাকেন। কিন্তু বদলী ও শাস্তির ভয়ে ভারপ্রাপ্ত ব্যবস্থাপক বাহাউদ্দীন লিটনের দুর্নীতি ও অনৈতিক কর্মকাণ্ডের প্রতিবাদ করার কেউ সাহস দেখান না।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক চা শ্রমিক বলেন, সম্প্রতি চা বাগান বাংলোয় প্রকাশ্যে বহিরাগতদের নিয়ে অনৈতিক কার্যকালাপের প্রতিবাদ করেন চা বাগানের সহকারী ব্যবস্থাপক রাসেদুল হাসান (রনি)। এতে ভারপ্রাপ্ত ব্যবস্থাপক লিটনসহ বহিরাগতরা সহকারী ব্যবস্থাপক রনির উপর ক্ষিপ্ত হন। এ সময় তারা রনিকে দেখে নেওয়ার হুমকি দেন। এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে বাংলোয় উত্তেজনা দেখা দিলে বাগানের অন্যান্য স্টার্ফ ও পঞ্চায়েত প্রতিনিধিরা এগিয়ে এসে দ্রুত পরিস্থিতি শান্ত করেন।
পরে প্রতিবাদী রনিকে অন্যত্র বদলী করতে তার বিরুদ্ধে হেড অফিসে মিথ্যা অভিযোগ করা হলে চা বাগানের সাধারণ শ্রমিকরা প্রতিবাদী হন। তারা প্রেম নগর চা বাগানের চা উৎপাদনে শ্রমিক বান্ধন সৎ সহকারী ব্যবস্থাপক রনিকে প্রতিষ্ঠানের স্বার্থে বাগানে বহাল রেখে ভারপ্রাপ্ত ব্যবস্থাপক লিটনকে অন্যত্র বদলীর দাবী তুলেন। এ নিয়ে গত ক'দিন ধরে প্রেমনগর চা বাগানের স্টাফ ,পঞ্চায়েত প্রতিনিধি, লাইন সর্দার ও শ্রমিকদের মাঝে চাপা ক্ষোভ বিরাজ করছে। যে কোন সময় এ ক্ষোভ বিক্ষোভে রুপ নিলে পুরো বাগানে উত্তজনা ছড়িয়ে পড়ার আশংকা করছেন অভিজ্ঞ মহল।
এ বিষয়ে কথা বলতে প্রেমনগর চা বাগানের ভারপ্রাপ্ত ব্যবস্থাপক বাহাউদ্দিন লিটনের সাথে যোগোযোগ করা হলে তিনি অভিযোগ অস্বীকার করেন। তবে এর বাহিরে তিনি কোন কথা বলতে রাজি হননি।
আপনার মতামত লিখুন :