রবিউল আলম : মানুষের অধিকার বলে কথা, ন্যায়নীতির প্রশ্ন যখন আছে। তখন বাছাই করতে হয় মানুষ কারা, কসাই কারা, অধিকার কাদের আগে, কারা ন্যায় পাওয়ার উপযুক্ত। মাননীয় মেয়রের চিঠি পেয়েছি ২ মে। তারিখ পরিবর্তন করে ৬ মে করা হয়েছে। ৬ মে চাঁদরাত বলা হয় মাংস ব্যবসায়ীদের ভাষায়, রোজার আগের দিন বলে কথা। আলোচনা সভায় অনেকেরই যাওয়া হবে না। তার উপর গরুর হাটের ইজারাদারের হুমকি। মাংসের দাম ৬০০ টাকায় বিক্রি করার আনন্দ থেকে বেরিয়ে আসতে হবে, কে নিজের বিপদ ডেকে আনে? অনেক চেষ্টার পরে আলোচনার সমাপ্তি হলো ৬০০ টাকার মাংসের দাম ৫২৫ টাকায় নির্ধারিত হলো। ক্রেতাদের দাবি ৪৫০ টাকা থেকে ৫২৫ টাকা করা হলো। সাংবাদিকদেরও চেষ্টার অভাব ছিলো না মাংসের মূল্য আরেকটু কমানোর জন্য। নগর ভবন থেকে একাত্তর জার্নালেরও একই প্রশ্ন কেন বিগত তিন মাসে মাংসর মূল্য ১৫০ টাকা বৃদ্ধি পেলো? মাননীয় মেয়রকে হাত করে ৭৫ টাকায় রফাদফা। একশো টাকার গরুর খাজনা এক হাজার টাকা নিলে কি হয়? অনেক প্রশ্নের উত্তর দিতে হবে আমাকে, কেন তিন মাসে ১৫০ টাকা মাংসের দাম বাড়লো বা বাড়ানো হলো।
আজ দ্বিতীয় রোজায় দেখতে পেলাম কোথায়ও ৫২৫ টাকায় মাংস বিক্রয় হয়নি, অনেক দোকানে জরিমানা করা হয়েছে। একের পর এক মাংসের দোকান বন্ধ করে রাখা হয়েছে, সারাদিন সাংবাদিক বন্ধুদের প্রশ্নের উত্তর দিতে হচ্ছে। এদিকে গাবতলী গরুর হাটের ইজারাদার মাংস ব্যবসায়ীদের অফিসে তালা দিয়ে রেখেছে। কথা ছিলো সরকার নির্ধারিত খাজনায় মাংস ব্যবসায়ীরা গরু ক্রয় করতে পারবে, সমিতির অফিস তালামুক্ত হবে, উত্তর সিটি কর্পোরেশন দায়িত্ব নেবেন, যার কিছুই হয়নি। শুধু ভ্রাম্যমাণ আদালতের জরিমানা ছাড়া। আবেদনে বলেছিলাম মেয়র সাঈদ খোকন একার পক্ষে সব সমস্যা সমাধান করা সম্ভব নয়। পুলিশ দিয়ে জরিমানা করে বাজার দর ঠিক রাখা যাবে না।
বাজার দর ঠিক রাখতে ভালোবাসা দিতে হবে। সমিতির সব নেতা ভয়ে পালিয়েছে, ইজারাদারের জীবননাশের হুমকির কারণে। সব বাধা-বিপত্তি পেরিয়ে অনেক প্রশ্নের উত্তর দিয়ে চলেছি এবং প্রতিনিয়তই মিডিয়ার সামনে হাজির হচ্ছি। এখন প্রশ্ন একটাই, মাংসের মূল্য কেন বাড়লো? আজ তিন বছর মাংসের বাজার নিয়ন্ত্রণহীন, ইজারাদারকে কি কেউ কোনো প্রশ্ন করেছে? ইজারাদার ও ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের সম্পত্তি কর্মকর্তাকে চিহ্নিত করে দেয়া হয়েছে, তারা কি কোনো প্রশ্নের উত্তর দিয়েছেন? কর্পোরেশন কি ইজারাদারকে জবাবদিহিতার জন্য একটি চিঠিও দিয়েছে? ৫২৫ টাকায় কোথায় মাংস বিক্রি হচ্ছে, মেয়র সাঈদ খোকনের আন্তরিকতাকে প্রশ্নবিদ্ধ করার কোনো কারণ নেই। এই আন্তরিকতা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের থাকতে হবে। প্রতিবন্ধকতায় সম্পত্তি কর্মকর্তা ও গাবতলী গরুর হাটের ইজারাদারকে জবাবদিহিতায় আনতে হবে। তাছাড়া মাংসের বাজার নিয়ন্ত্রণ হবে না, যেমন খুশি চলছে ও চলবে। সাংবাদিকরা প্রাণপণ চেষ্টা করেন বাজার নিয়ন্ত্রণের, উপায় কি, স্বার্থবাজরা সহযোগিতা করবে কেন, কোটি কোটি অবৈধ টাকার প্রশ্ন, মিথিলারা চেষ্টা করে যাবেন। প্রশাসন নড়াতে হবে, নড়তে হবে।
লেখক : মহাসচিব, বাংলাদেশ মাংস ব্যবসায়ী সমিতি
আপনার মতামত লিখুন :