তানজিনা তানিন : অবসাদ দূর করতে পর্যটন কেন্দ্র হিসেবে মৌলভীবাজারের জুড়ি মেলা ভার। মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জ উপজেলা পর্যটনের অপার লীলাভূমি। সেই লীলাভূমিতে নতুন আরেকটি স্পটের সন্ধান পাওয়া গেছে, তার নাম ‘ফিকল ঝরনা’। সম্প্রতি ঘুরতে গিয়ে নতুন এ ঝরনা দেখতে পান স্থানীয় এক সাংবাদিক। তিনি তার ফেসবুকে পোস্ট করলে ঝরনার নাম ভাইরাল হয়। নান্দনিক এ ঝরনাটির অবস্থান কমলগঞ্জ উপজেলার সংরক্ষিত বন রাজকান্দিতে। সমতল থেকে উপরে পাহাড়ি এলাকায় বিশাল এলাকাজুড়ে অবস্থিত এ জলাশয়। এতদিন লোকচক্ষুর আড়ালে ছিলো ঝরনাটি। তবে শুধু দৃষ্টিনন্দন ঝরনা নয়; পথের দু’পাশের বুনো গাছের সাজসজ্জা দৃষ্টি কেড়ে নেবে অনায়াসে। গহীন বনের উঁচু উঁচু পাহাড় আর সবুজ অরণ্যের মনোরম দৃশ্য দেখে মন জুড়িয়ে যাবে। ফিকল জলধারায় যাওয়ার গিরি পথে দেখতে পাওয়া যাবে বিশাল আকৃতির অসংখ্য পাথর। প্রতিটি পাথরের আকৃতি রহস্যময়। পাথর মূলত গোলাকার কিংবা ডিম্ব আকারের হলেও এ জলধারার পাথরে ভিন্নতার ছাপ রয়েছে। পাথরের দিকে চোখ রাখলে ভিন্ন এক দৃশ্য ভেসে উঠবে। মনে হবে বন্য কোনো প্রাণী পাহাড়ি ছড়ার বুকে ঘুমিয়ে আছে।
আঁকাবাঁকা পাহাড়ি ছড়া দিয়ে হেঁটে চলার পথে সামনে যত দূর চোখ যাবে, শুধুই দেখা যাবে দুর্ভেদ্য সবুজ জঙ্গল আর রহস্যাবৃত অসংখ্য পাথর। পাহাড়ের চূড়া থেকে নেমে আসা পানি পুরো পথকেই বিপজ্জনকভাবে পিচ্ছিল করে রেখেছে। দুর্গম আর চরম ঝুঁকির পথ শেষে এ যেন অন্য এক রোমাঞ্চকর পর্যটন কেন্দ্র। যারা ট্রেকিং ভালোবাসেন, তাদের স্বাগত জানাবে নতুন এ ঝরনা। ঝরনাটি আবিষ্কার করেন সাংবাদিক সাজিদুর রহমান সাজু। তিনি বলেন, ‘জলধারাটি যতটা না অবিশ্বাস্য, যতটা না অলৌকিক, তার চাইতেও বেশি এর সৌন্দর্য। আপন খেয়ালে এখানে পাহাড়ের উপর জলরাশি সঞ্চার করে তৈরি করেছে হ্রদ। সমতল থেকে প্রায় ১০০ ফুট উপরে পাহাড়ের চূড়ায় বিশাল এলাকাজুড়ে অবস্থিত এ জলাশয়।’
দেশের যেকোনো প্রান্ত থেকে চলে আসুন কমলগঞ্জ উপজেলা সদরে। সেখান থেকে বাস অথবা সিএনজিতে কুরমা চা বাগান। সেখান থেকে ভাড়ায়চালিত সিএনজিতে আঁকাবাঁকা কাদা মাটির উঁচুনিচু পাহাড়ি এলাকার কুরমা চা বাগানের ভেতর দিয়ে যেতে হবে কুরমা খাসিয়া পল্লী। খাসিয়া পল্লীর পাশেই গিরি পথের শুরু। সেখান থেকে পাহাড়ি গিরির পাশ দিয়ে বনের সরু পথে উঁচুনিচু পাহাড়ি টিলা অতিক্রম করে, কখনো পাহাড়ি গিরি পথ দিয়ে দুই থেকে আড়াই ঘণ্টায় পৌঁছা সম্ভব দৃষ্টিনন্দন এ জলধারায়।
আপনার মতামত লিখুন :