শিরোনাম
◈ এলডিসি উত্তরণের পর সর্বোচ্চ সুবিধা পাওয়ার প্রস্তুতি নিতে প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশ ◈ ড. ইউনূসকে নিয়ে শিক্ষামন্ত্রীর বক্তব্য দুঃখজনক: আইনজীবী  ◈ ত্রিশালে বাসের ধাক্কায় বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রসহ অটোরিকশার ৩ যাত্রী নিহত ◈ জলদস্যুদের হাতে জিম্মি জাহাজ মুক্ত করার বিষয়ে  সরকার অনেক দূর এগিয়েছে: পররাষ্ট্রমন্ত্রী  ◈ এসএসসি পরীক্ষায় আমূল পরিবর্তন, বদলে যেতে পারে পরীক্ষার নামও ◈ পঞ্চম দিনের মতো কর্মবিরতিতে ট্রেইনি ও ইন্টার্ন চিকিৎসকরা ◈ অর্থাভাবে পার্লামেন্ট নির্বাচনে লড়বেন না ভারতের অর্থমন্ত্রী ◈ কখন কাকে ধরে নিয়ে যায় কোনো নিশ্চয়তা নেই: ফখরুল ◈ জনপ্রিয়তায় ট্রাম্পের কাছাকাছি বাইডেন ◈ আদালত থেকে জঙ্গি ছিনতাই মামলার তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেয়ার নতুন তারিখ ৮ মে

প্রকাশিত : ১৩ মে, ২০১৯, ০৭:০২ সকাল
আপডেট : ১৩ মে, ২০১৯, ০৭:০২ সকাল

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

নজিরবিহীন চাপের মুখে ইরান, বললেন রুহানি

ডেস্ক রিপোর্ট : আন্তর্জাতিক নিষেধাজ্ঞার কারণে ইরান 'নজিরবিহীন' চাপের মুখে পড়েছে বলে স্বীকার করেছেন দেশটির প্রেসিডেন্ট হাসান রুহানি। তিনি বলেছেন, যুক্তরাষ্ট্র পুনরায় নিষেধাজ্ঞা আরোপ করায় ১৯৮০-৮৮ সাল পর্যন্ত প্রতিবেশী ইরাকের সঙ্গে যুদ্ধের সময়ের চেয়েও ইরানের অর্থনৈতিক পরিস্থিতি ভয়াবহ আকার ধারণ করেছে। যায়যায়দিন।

মধ্যপ্রাচ্যে গত সপ্তাহে যুক্তরাষ্ট্রের যুদ্ধজাহাজ ও বোমারু বিমান মোতায়েনের পর ক্রমবর্ধমান উত্তেজনার মাঝে তিনি রোববার এ মন্তব্য করলেন। দেশের ভেতরে প্রচন্ড রাজনৈতিক চাপের মুখে থাকা হাসান রুহানি মার্কিন অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞার ধকল সামলাতে রাজনৈতিক ঐক্যের ডাক দিয়েছেন। তেহরানে এক রাজনৈতিক সমাবেশে ইরানের প্রেসিডেন্ট বলেন, 'যুদ্ধের সময়ও আমাদের ব্যাংক, তেল বিক্রি অথবা আমদানি এবং রপ্তানি এ ধরনের সমস্যার মধ্যে পড়েনি। সেই সময় শুধুমাত্র অস্ত্র ক্রয়ের ওপর নিষেধাজ্ঞা ছিল। তিনি বলেন, শত্রম্নদের এই চাপ আমাদের ইসলামী বিপস্নবের ইতিহাসে একটি যুদ্ধের শামিল... কিন্তু আমরা হতাশ নই। আমাদের ভবিষ্যৎ নিয়ে প্রচন্ড আশাবাদী। আমি বিশ্বাস করি, এই কঠিন পরিস্থিতি আমরা ঐক্যবদ্ধ থেকে অতিক্রম করবো।'

ইরান এবং যুক্তরাষ্ট্রের চলমান এই উত্তেজনায় ২০১৫ সালে জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের পাঁচ সদস্য ও জার্মানির সঙ্গে স্বাক্ষরিত তেহরানের পারমাণবিক চুক্তির ভবিষ্যৎকে প্রশ্নের মুখে ফেলেছে। গত বছরের মাঝের দিকে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প যুক্তরাষ্ট্রকে এই চুক্তি থেকে বের করে নেয়ার ঘোষণা দেন। একই সঙ্গে তিনি ইরানের বিরুদ্ধে পুনরায় নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেন। যুক্তরাষ্ট্রের এই পদক্ষেপের পর ইরান পারমাণবিক অস্ত্র কর্মসূচি ও উঁচু মাত্রার ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণ প্রকল্প পুনরায় শুরু করার হুমকি দিয়েছে। ট্রাম্পের ঘোষণার পর দুই পক্ষের মধ্যে উত্তেজনার পারদ চড়তে শুরু করে।

ইরানের তেল রপ্তানি বন্ধে ক্রেতাদের ওপরও নিষেধাজ্ঞা দিয়ে রেখেছে যুক্তরাষ্ট্র। ইরান বলেছে, তাদের তেল রপ্তানিতে যুক্তরাষ্ট্র বাধা হয়ে দাঁড়ালে তারাও কৌশলগতভাবে গুরুত্বপূর্ণ হরমুজ প্রণালি বন্ধ করে দেবে। হরমুজ দিয়েই মধ্যপ্রাচ্যের বেশিরভাগ তেলবাহী জাহাজ ইউরোপ ও যুক্তরাষ্ট্রে যায়। মার্কিন জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা জন বোল্টন বলেছেন, যুদ্ধজাহাজ মোতায়েনের মাধ্যমে ইরানের শাসকদের স্পষ্ট বার্তা দেয়া হয়েছে। তিনি বলেন, 'ওই অঞ্চলে যুক্তরাষ্ট্রের স্বার্থের ওপর যেকোনো আঘাত অপ্রতিরোধ্য শক্তিতে মোকাবেলা করা হবে।'

ইরানের বিরুদ্ধে মনস্তাত্ত্বিক যুদ্ধ

শুরু করেছে যুক্তরাষ্ট্র

এদিকে, ইরানের 'এলিট ফোর্স' বিপস্নবী রক্ষীবাহিনী (আইআরজিসি) প্রধান মেজর জেনারেল হোসেইন সালামি বলেছেন, তার দেশের বিরুদ্ধে মনস্তাত্ত্বিক যুদ্ধ শুরু করেছে যুক্তরাষ্ট্র। রোববার এক পার্লামেন্টারি সেশনে দেয়া বক্তব্যে তিনি এমন মন্তব্য করেন।

সংবাদমাধ্যম 'আইসিএএনএ'র কাছে পার্লামেন্টে দেয়া আইআরজিসি প্রধানের বক্তব্যের সারমর্ম তুলে ধরেন ইরানি পার্লামেন্টের মুখপাত্র বেহরুজ নেমাতি। তিনি বলেন, আইআরজিসি কমান্ডার সালামি এই অঞ্চলের পরিস্থিতি তুলে ধরেছেন। তিনি একটি বিশ্লেষণ দিয়েছেন। এতে বলা হয়েছে, মার্কিনিরা একটি মনস্তাত্ত্বিক যুদ্ধ শুরু করেছে।

ইরানের বিপস্নবী রক্ষীবাহিনীর প্রধান দায়িত্ব হচ্ছে দেশটির সাংস্কৃতিক বিপস্নবের ঐতিহ্যকে সমুন্নত রাখা এবং সে দেশের ইসলামিক 'সিস্টেম' বা সমাজ ব্যবস্থাকে রক্ষা করা। ১৯৭৯ সালে ইরানে ইসলামিক বিপস্নবের পরপরই এই আইআরজিসি বাহিনী গড়ে তোলা হয়েছিল। তারপর থেকে এই বাহিনী ক্রমশ ইরানের রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক ও সামরিক পরিমন্ডলে একটি বিরাট শক্তি হিসেবে আত্মপ্রকাশ করেছে। তাদের নিজস্ব পদাতিক সেনা, নৌবাহিনী ও বিমানবাহিনী পর্যন্ত রয়েছে। এই বিপস্নবী রক্ষীবাহিনী হাজার হাজার স্বেচ্ছাসেবী সদস্য নিয়ে গঠিত একটি মিলিশিয়া বাহিনীও নিয়ন্ত্রণ করে, যাদের নাম দেয়া হয়েছে 'বাসিজ রেজিস্ট্যান্স ফোর্স'।

ইরানের হামলার আশঙ্কায়

ইসরায়েলি মন্ত্রী

যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে উত্তেজনা আরও বাড়লে উদ্ভূত পরিস্থিতিতে মধ্যপ্রাচ্যে মার্কিন মিত্র ইসরাইলে হামলা চালাতে পারে ইরান। এক টেলিভিশন সাক্ষাৎকারে এমন আশঙ্কার কথা জানিয়েছেন ইসরাইলের জ্বালানিমন্ত্রী ইউভাল স্টেইনিটজ।

স্টেইনিটজ বলেন, পারস্য উপসাগরীয় অঞ্চলে উত্তেজনা বাড়ছে। ওয়াশিংটন ও তেহরানের মধ্যে উত্তেজনা আরও বাড়লে ইসরাইলের বিরুদ্ধে সরাসরি অথবা প্রক্সি হামলা শুরু করতে পারে ইরান। এ ধরনের পরিস্থিতিতে লেবাননের হিজবুলস্নাহ কিংবা গাজা উপত্যকার ইসলামিক জিহাদের মতো সংগঠনগুলো সক্রিয় হয়ে উঠবে। এ ধরনের পরিস্থিত তৈরি হলে ইসরাইলকে ইরানি ক্ষেপণাস্ত্রের লক্ষ্যবস্তুতে পরিণত করার চেষ্টা করা হতে পারে।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়