ডেস্ক রিপোর্ট : ঝালকাঠির রাজাপুরে সন্তানদের দরিদ্রতা ও সদিচ্ছার অভাবে অন্ধ মাকে তিন বছর ধরে গোয়ালঘরে রাখা হচ্ছিল- এমন একটি সংবাদ বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশিত হলে টনক নড়ে উপজেলা প্রশাসনের। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. সোহাগ হাওলাদার সরেজমিনে পরিস্থিতি দেখে তার চিকিৎসার দায়িত্ব নেন।
গত বৃহস্পতিবার দুপুরে বৃদ্ধা সরবানুকে তিনি রাজাপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসার ব্যবস্থা করেন। বর্তমানে সরবানু রাজাপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসাধীন আছেন।
রাজাপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. মো. মাহবুবুর রহমান জানান, বৃদ্ধা সরবানুর শারীরিক অবস্থা খুবই খারাপ। কিন্তু তার চেতনা আছে। তার কথায় তিনি অভিজাত পরিবারের মেয়ে মনে হয়েছে। তাকে চিকিৎসাসেবা দিয়ে সুস্থ করার চেষ্টা হচ্ছে।
রাজাপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. সোহাগ হাওলাদার বলেন, এ বৃদ্ধার বিষয়ে আমি জানতে পেরে দেখতে গিয়েছি। তার স্মরণশক্তি ভালো। পিঁপড়ার কামড়ে জর্জরিত হয়ে সেখানে দিন কাটাচ্ছিলেন। তাকে বর্তমানে রাজাপুর স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা দিয়ে সুস্থ করার চেষ্টা চলছে।
জানা গেছে, ৯০ বছরের বৃদ্ধা সরবানু ১০ বছর আগে হোঁচট খেয়ে মাটিতে পড়ে যান। কোমড় ও পায়ে ব্যথা পান তিনি। ব্যথানাশক ট্যাবলেট খেয়ে প্রাথমিক চিকিৎসায় ভালোই ছিলেন কিছুদিন। অর্থের অভাবে ছেলেরা তাকে উন্নত চিকিৎসা করাতে পারেননি। ধীরে ধীরে অচল হয়ে যান তিনি। তারপর একদিন সকালে ঘুম থেকে উঠে চোখে দেখতে না পেয়ে সেই থেকেই পুরো অন্ধ হয়ে যান সরবানু। বিপদের শেষ ধাপটা শুরু হয় সরবানুর তখনই।
পাঁচ সন্তানের মা সরবানু। উপজেলার বাঘড়ি এলাকার মৃত তাহের মল্লিকের স্ত্রী তিনি। তিন ছেলে, দুই মেয়ে নিয়ে ছিল সাজানো সংসার। বড় ছেলে মারা যান কয়েক বছর আগে। মেয়েরা থাকেন শ্বশুরবাড়িতে। ছেলেদের অভাবের সংসারে তার বসবাস। গায়ে খেটে সংসার চালান তারা।
আপনার মতামত লিখুন :