মহিব আল হাসান : কিংবদন্তি সুরকার ও সংগীত পরিচালক আলাউদ্দীন আলীর শারীরিক অবস্থার উন্নতি হয়েছে। তিনি ধীরে ধীরে সুস্থ হয়ে ওঠছেন। প্রায় একমাস ধরে তার চিকিৎসা চলছে সাভারের পক্ষাঘাতগ্রস্তদের পুনর্বাসন কেন্দ্রে (সিআরপি)। বর্তমানে তার শারীরিক অবস্থা উন্নতির দিকে বলে জানিয়েছেন চিকিৎসক।
গত ৮ এপ্রিল অসুস্থ হয়ে পড়লে সিআরপিতে ভর্তি করানো হয় আলাউদ্দীন আলীকে। এখানে তার চিকিৎসা চলে আসছে বিগত একমাস ধরে। বর্তমানে তার অবস্থার পরিবর্তন হয়েছে বলে জানিয়েছেন তার চিকিৎসকরা।
আলাউদ্দীন আলীর স্ত্রী মিমি আলাউদ্দীন বলেন, আলাউদ্দীন আলীকে সিআরপি আনার পর অনেকটা সুস্থ হয়েছেন। এখানে ডাক্তাররা বলেছেন তিনি আগের চেয়ে অনেক ভালো আছেন। ধীরে ধীরে তিনি পুরো সুস্থ হয়ে ওঠবেন।
প্রসঙ্গত, গত ২২শে জানুয়ারি হঠাৎ করে অসুস্থ হয়ে পড়লে রাত ১১টায় আলাউদ্দীন আলীকে রাজধানীর ইউনিভার্সেল হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। সেখানে দুমাস চিকিৎসা নেওয়ার পর কিছুটা সুস্থ হলে তাকে বাসায় নেওয়া হয়। এরপর আবারও অসুস্থ বেশি হলে তাকে সাভারের সিআরপি হাসপাতালে নেওয়া হয়। বর্তমানে সাভারের সিআরপিতে তার চিকিৎসা চলছে।
সেখানে দুই মাসের বেশি সময়ের চিকিৎসায় তিনি অনেকটা সুস্থ হয়ে ওঠেন। এরপর তাকে সিআরপিতে স্থানান্তর করা হয়।
প্রসঙ্গত,বাংলা গান, বিশেষ করে বাংলা চলচ্চিত্রে অসংখ্য শ্রোতাপ্রিয় গান সৃষ্টি করেছেন আলাউদ্দীন আলী। তিনি একাধারে সংগীত পরিচালক, সুরকার, বেহালাবাদক ও গীতিকার। গান রচনা করে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারও লাভ করেছেন। আটবার জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার পেয়েছেন তিনি।
১৯৫২ সালের ২৪ ডিসেম্বর, মুন্সিগঞ্জের বিক্রমপুরের টঙ্গিবাড়ী থানার বাঁশবাড়ী গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন আলাউদ্দীন আলী। তার বাবা ওস্তাদ জাদব আলী, মায়ের নাম জোহরা খাতুন।
আলাউদ্দীন আলীর সংগীতে প্রথম হাতেখড়ি ছোট চাচা সাদেক আলীর কাছে। পরে ১৯৬৮ সালে যন্ত্রশিল্পী হিসেবে চলচ্চিত্রজগতে পা রাখেন আলাউদ্দীন আলী। শুরুটা শহীদ আলতাফ মাহমুদের সহযোগী হিসেবে, পরে প্রখ্যাত সুরকার আনোয়ার পারভেজের সঙ্গেই দীর্ঘদিন কাজ করেন।
গানের রূপকার আলাউদ্দীন আলীর কালজয়ী গানগুলোর মধ্যে, ‘জন্ম থেকে জ্বলছি মাগো’, ‘ভালোবাসা যত বড় জীবন তত বড় নয়’, ‘সবাই বলে বয়স বাড়ে’, ‘সুখে থাকো ও আমার নন্দিনী’, ‘সূর্যোদয়ে তুমি সূর্যাস্তেও তুমি’, ‘বন্ধু তিন দিন তোর বাড়ি গেলাম’, ‘যেটুকু সময় তুমি থাকো কাছে’, ‘প্রথম বাংলাদেশ আমার শেষ বাংলাদেশ’, ‘আছেন আমার মুক্তার’, ‘আমায় গেঁথে দাওনা মাগো একটা পলাশ ফুলের মালা’, ‘যে ছিল দৃষ্টির সীমানায়’ উল্লেযোগ।
আপনার মতামত লিখুন :