মৌরী সিদ্দিকা : ধান চাষ করে এখন আর্থিকভাবে লাভবান হতে পারছেন না অনেক কৃষক।গোপালগঞ্জ এবং বাগেরহাট সীমান্তে কৃষক আশুতোষ মজুমদার হতাশ।-বিবিসি
কারণ একটাই, ধান চাষ করে এখন আর পোষাতে পারছেন না তিনি। ‘ধানের মণ ৪৮০ টাকা। কৃষাণ একটা ৭০০ টাকা। এজন্যি আমরা ধান আর করবো না। ধানের জন্য ভারি কষ্ট পাচ্ছি। এহন কৃষাণই পাওয়া যায় না,’ বলছিলেন আশুতোষ কুমার মজুমদার।
বাস্তবতা হল কৃষি শ্রমিকের তীব্র সংকট।
এই হিসেব করলে দেখা যায়, বর্তমানে একজন কৃষি শ্রমিকের দৈনিক মজুরী এক মণ ধানের চেয়েও বেশি।
গোপালগঞ্জের কৃষক সাজেদা বেগমের নিজের জমি নেই। অন্যের জমি বর্গা নিয়ে তিনি ধান চাষ করেন।
বলছিলেন, এখন তিনি ধান বিক্রি করে আর লাভের আশা করেন না। শুধু ভাতের জোগান হলেই হলো।
কৃষকরা বলছেন, গত কয়েক বছর যাবত ধানের উৎপাদন বেশ ভালো হয়েছে। কিন্তু অনেকেই গত মৌসুমে উৎপাদিত ধানও এখনো বিক্রি করতে পারেননি।
ধান বিক্রি করতে বাড়ি থেকে বাজার পর্যন্ত যে পরিবহন খরচ দিতে হয় - সেটি বেড়েছে।
কৃষক তালিম শেখ বলছেন, তিনি এক বিঘা জমি চাষ করতে তার খরচ হয়েছে প্রায় ১৩ হাজার টাকা। সে জমিতে ধান উৎপাদন হয়েছে ২২ মণের মতো। প্রতি মণ ৫০০ টাকা বিক্রি করলে তার আয় হবে ১১ হাজার টাকা।
অথচ তালিম শেখের খরচ হয়েছে ১৩ হাজার টাকা।
ধানের দাম কম হলেও খুচরা বাজারে চালের দামের কমতি নেই।
ফরিদপুরের রঘুয়াপাড়ার চাতাল মালিক রাশেদ শেখ ১০ বছর যাবত ধান-চালের ব্যবসা করছেন। তিনি বলেন, কৃষকদের কাছ থেকে ধান ক্রয় থেকে শুরু করে চাতালে প্রতি কেজি চাল উৎপাদন করতে খরচ হয় ৩১-৩২ টাকা।
কিন্তু পাইকারি দামে চাল বিক্রি করে সেটি পুষিয়ে নিতে পারছেন না বলে দাবি করেন রাশেদ শেখ।
‘খুচরা বাজারে ঠিকই ৪০-৪৫ টাকার নিচে চাল খাওয়া যায় না।’
আপনার মতামত লিখুন :